পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৫২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१७ ভারতবর্ষ । সেই পুরুষ মুক্ত হয়েন, তবে তাহার কোনও বিষয়ে ইচ্ছাই হইতে পারে না । কারণ, ইচ্ছার অ ন হইলে আর র্তাহাকে মুক্ত বল যাইতে পারে না। যদ্যপি তাহার বেদরচন। বিষয়ে ইচ্ছ। না হয়, তবে তিনি কি রূপে বেদ রচনা করিবেন ? সকল প্রকার কাৰ্য্য করিবার , পূৰ্ব্বেই মনে তদ্বিষয়ের ইচ্ছ। হইয়। থাকে। কিন্তু মুক্ত-পুরুষের সে ইচ্ছ। হইবে না। আর যদি তিনি বদ্ধ হয়েন, তবে তাহার ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধ । সুতরাং তিনি বেদকর্ত হইবার অযোগ্য ; কারণ, কোনও পরিমিত-শক্তিসম্পন্ন পুরুষ বেদরচনা করিতে পারেন ল| বিশুদ্ধ-সত্ত্ব-প্রধান সৰ্ব্বজ্ঞ পরমেশ্বর ও বেদ রচনা করিতে পারেন না ; কারণ, তিনি বীতরাগ এবং ইচ্ছার অধীন নহেন। স্বয়স্তু ব্ৰহ্মার সকাশ হইতে অদৃষ্টবশতঃ নিশ্বাসের ন্যায় বেদ সকল স্বয়ং উৎপন্ন হইয়াছে। নিজ শক্তির প্রকাশ দ্বার। বেদষ্ট স্বয়ং বেদের প্রমাণ ; প্রমাণাস্তরের অপেক্ষ নাই । বেদ নিত্য ও হইতে পারে না ; যেহেতু, ইহ। পুরুষ হইতে উচ্চারিত এবং কার্য্য বলিয়। পরিগণিত । যাহা কাৰ্য্য, তাহ। নিত্য হইতে পারে না । পুরুষ হইতে উচ্চারিত হইলেই পৌরুষেয় হইল না। বুদ্ধিপূর্বক উচ্চারিত হইলেই পৌরুষেয় বলা যাইতে পারে। সুৰুপ্তিকালে নিশ্বাস-প্রশ্বাস পৌরুষেয় বলিয়। ব্যবহাৰ হয় না ; কারণ, তাহা বুদ্ধিপূর্বক নহে । অতএব স্থির হইল যে, বেদ পৌরুষেয় ও নহে, অপৌরুষেয় অর্থাৎ নিত্য ও নহে। এ বিধায় বেদ কোথা হইতে হইল ? সন্থাকার বলেন যে, বেদ অনাদি, বীজাদুরবৎ । যেরূপ বীজ হইতে অঙ্কুর, কি অঙ্কুর হইতে বীজ ; অন্ধুর বীজের কারণ, কি বীজ অস্কুরের কারণ, তাহ নির্ণয় কর! অসম্ভব ; তদ্রুপ বেদের আদি নির্ণয় করা অসম্ভব ।” বেদ-বিষয়ে মহৰ্ষি কপিলের এবম্বিধ বিতর্কের বিষয় তালোচনা করিলে বেশ প্রতীয়মান হয়,—এখনও যেমন বেদের কাল-নির্ণয়ে গবেষণা পর্যুদস্ত, মহৰ্ষি কপিলের সময়েও সেই অবস্থ৷ ঘটিয়াfছল । বেদ কত কালের ? —এখন ও যে প্রশ্ন চলিয়াছে, তখনও সেই প্রশ্নই চলিয়াছিল। সাস্থ্য-মতের আলোচনায় তাহাই উপলব্ধি হইল। বুঝিলাম,—বেদের কালনির্ণয়ে সাথ্যের গবেষণা পরাভূত । মীমাংসকগণ, নৈয়ায়িকগণ, বৈদান্তিকগণ বেদ-বিষয়ে যে গবেষণা করিয়া গিয়াছেন, তাহা বিশেষ কৌতুহলোদ্দীপক । মীমাংস-দর্শনের মতাবলম্বিগণ—মীমাংসক নামে অভিহিত । বেদের মীমাংস আছে বলিয়াই ঐ দর্শনের নাম—মীমাংসাੋ। দর্শন। মহৰ্ষি জৈমিনি কর্তৃক ঐ দশন প্রবস্থিত হয় বলিয়া উহার অপর নাম—জৈমিনি-দর্শন। পণ্ডিতগণ বলেন,—“এই দর্শন শ্রুতিস্মৃতির বিরোধভঞ্জক মধ্যস্থ-স্বরূপ, ধৰ্ম্ম-দৰ্শনের আদর্শ স্বরূপ এবং দুর্গম নিগম মার্গে সুখ-সঞ্চলনের বাষ্পীয় রথ-স্বরূপ । বেদ ও স্মৃতি-শাস্ত্রের তাৎপর্য্যার্থ-নিশ্চয় এবং বিরোধভঞ্জন নিমিত্ত মীমাংস-দর্শন অতীব উপযোগী ।” মীমাংসা-দর্শন শব্দের নিত্যত্ব স্বীকার করেন । তদনুসারে মীমাংসকগণ বেদের নিত্যত্ব প্রমাণ করিয়৷ থাকেন। এ বিষয়ে নৈয়ায়িকগণের সহিত মীমাংসকগণের ঘোর বিতর্ক উপস্থিত হয়। শব্দের নিত্যত্ব; নিত্যত্ব লইয়। সে বিতর্ক। সে বিতর্কের একটু আভাস প্রদান করিতেছি। "শব্দ এবং