পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৯০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বঙ্গের গৌরব-বিভব । ২৫৩ প্রকাশ পাইতেছে, মাণিকচাদ ও মোহনলাল উভয়েই বাঙ্গালী ছিলেন । শারীরিক শক্তি ও অপরিসীম সাহসিকতার জন্যও বাঙ্গালীর খ্যাতির অবধি নাই। ব্যান্ত্রের সহিত যুদ্ধে জয়ী হইয়াছিলেন বলিয়া, ফরিদসাহ সেরসহ নামে পরিচিত হন। ব্যাঞ্জের সহিত যুদ্ধে পরাক্রম দেখাইয়াই অস্তাজিলো ‘সের আফগান' নাম এবং লাবণ্যরূপিণী মুরজাহানকে লাভ করেন। এই দুই বিবরণ ইতিহাসে উজ্জ্বল অক্ষরে লিখিত আছে। কিন্তু কোনও বাঙ্গালী বীরের ঐক্কপ বীরত্বের ও পরাক্রমের পরিচয় পাওয়া যায় না কি ? অনেক দৃষ্টান্ত আছে। একট। উল্লেখ করিতেছি। ঢাকা-জেলার উলাইল পরগণার উদয়নারায়ণ-কোনক্রমেই সেরসাহের বা সের আফগানের অপেক্ষ। উদয়নারায়ণ । অল্প-শক্তিশালী বা অল্প-পর্যক্রমশালী ছিলেন না। উদয়নারায়ণ উত্তরাধিকার-সূত্রে অনেক ভূ-সম্পত্তি লাভ করিয়াছিলেন। কিন্তু মুর্শিদাবাদের নবাব-বংশীয় এক ব্যক্তি তৎসমুদায় অধিকার করিয়া লন । তাহাতে উদয়নারায়ণ মুর্শিদাবাদে নবাবের নিকট বিচারপ্রার্থী হন। নবাব বলেন,—“তুমি আপন সম্পত্তি রক্ষা করিতে পারিবে কি না—তাহার প্রমাণ না পাইলে, তোমাকে ঐ বিপুল সম্পত্তির অধিকার দান করিতে পারি না।’ উদয়নারায়ণ পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত হন । নবাব তখন পিঞ্জরাবদ্ধ একটী প্রকাণ্ড ব্যাঘ্র আনয়ন করাইয়। তাহার সহিত উদয়নারায়ণকে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইতে বলেন । যুদ্ধে জয়ী হইতে পারিলে তাহার সম্পত্তি র্তাহাকে প্রত্যপণ করা হইবে । যুদ্ধে নিহত হইলে, সঙ্গে সঙ্গে তাহার বা তাহার বংশধরগণের ঐ সম্পত্তিতে কোনই অধিকার থাকিবে না । উদয়নারায়ণ সেই পরীক্ষণ-প্রদানেই প্রবৃত্ত হন । উদয়নারায়ণের সহিত যুদ্ধে ব্যাঘ্র নিহত হয়। একসময়ে বাঙ্গালী এইরূপে আপনার বীরত্ব ও পরাক্রম দেখাইয় আপনার সম্পত্তি উদ্ধার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন । কত উল্লেখ করিব ? যশোহর চাচড়া-রাজবংশের ভবেশ্বর রায়, দিনাজপুর রাজবংশের আদিপুরুষ রামনাথ রায়—ইহাদেরও বীরত্ব-খ্যাতি অল্প ছিল না । ফলতঃ, শৌর্য্যে-বীর্য্যে, নৌবলেবাহুবলে, পরাক্রমে-প্রভাবে পুরাকালে বাঙ্গালী কখনই হীন ছিলেন না । উপসংহারে অন্যান্ত বক্তব্য । প্রাচীন বঙ্গের কৃতিত্ব-পরিচয় কোন দিকে না সুপরিস্ফুট ! বঙ্গদেশের প্রাচীনত্ব-বিষয়ে সংশয়-সন্দেহ ভিত্তিহীন। বঙ্গদেশের পবিত্রতা-বিষয়ে ভূয়সী প্রমাণ বিদ্যমান। জ্ঞান-স্বৰ্য্য - বঙ্গদেশেই প্রথম রশ্মি বিস্তার করেন ; বঙ্গদেশ হইতে জ্ঞান-বিভা দিকে ག”ཝཱརྱ་ས་ দিকে বিচ্ছুরিত হয়। সনাতন-ধৰ্ম্ম এই বঙ্গদেশেই প্রথমে পরিপুষ্ট হইয়া ছিল। পুণ্যপূত পবিত্র ক্ষেত্র বলিতে বঙ্গদেশকেই প্রথমে বুঝাইয়াছিল। সচ্চিত্ত। সস্তাবের বিকাশ এই বঙ্গদেশেই প্রথম দেখিতে পাই। সংসারের শ্রেষ্ঠ-সম্পং জ্ঞানফুৰ্ত্তি এই বঙ্গদেশেই প্রথম লক্ষ্য করি। বঙ্গদেশ হইতেই ধৰ্ম্মপ্রচারকগণ দিকে দিকে ধর্মের আলোক বিস্তার করিয়াছিলেন ; বঙ্গদেশ হইতেই দিগ-দিগন্তে কলাবিদ্যার বিস্তার হইয়াছিল। বাঙ্গালী কখনই বলবীৰ্য্যহীন নিরুদ্যম বা কাপুরুষ ছিলেন না। বাঙ্গালীর বাহুবলে দেশে-বিদেশে বঙ্গের বিজয়পতাকা উডীন হইয়াছিল। সাগরের পরপারে, দ্বীপ