পাতা:পেত্‌নী দহের হীরা - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
পেতনী দহের হীরা

পেতনী দহের হীর অপ্রীতিকর হয় নাই, তাহা তাহার ভাবভঙ্গি দেখিয়াই বুঝিতে পারা গেল; কিন্তু স্বাধীনতার অভাবে টাইগার ক্ষুণ্ন হইয়াছিল, কারণ সেই দুর্দান্ত কুম্ভীরপূর্ণ নদীতে নামিয়া সত্তরণ-সুখ তাহার পক্ষে নিষিদ্ধ হইয়াছিল, এমন।ক, নদী-তীরে তাহার নামিবারও অধিকার ছিল না। নদীতীরের অরণ্যে সিংহাদ শ্বাপদ জন্তু ও বিশালকায় সর্পের অভাব ছিল না; তাহারা কোন উপায়ে টাইগারকে ধরিতে পারিলে অনায়াসে আস্ত গিলিতে পারিত।  টাইগারের সঙ্গীরা যে রহস্তের আভাস পাইয়া চঞ্চল হইয়াছিলেন, সে সম্বন্ধে টাইগারের কোন ধারণা ছিল না। আরাসঙ্গো নদী কঙ্গোর দুর্গম প্রদেশ ভেদ করিয়া প্রবাহিত হহতেছিল; এই নদী সভ্য ইয়ুরোপীর গণের অপরিচিত হইলেও ইহা ক্ষুদ্র নদী নহে। ইহার সকল স্থান তেমন গভীর না হহলেও স্থানে স্থানে যে সকল দহ আছে, তাহাদের গভীরতা অত্যন্ত অধিক; স্থানীয় আরণ্য অধিবাসীগণ সেই সকল দহ অতলস্পর্শ বলিয়াহ মনে করে। আ.ফ্রকার যে অংশে শ্বেতাঙ্গ জাতির বসবাস, সেই সকল স্থান বহুদুরে অবস্থিত। নদীর এই অংশে আফ্রিকার কোন ইয়ুরোপীয় প্রবাসীকে প্রায় কথন দোখতে পাওয়া যায় না। জাজ্বালা নামক দুদ্দাত্ত আরণা জাতি এই নদার উভয় তীরের অধিবাসী; এইজন্য এই প্রদেশ জাব্বালা প্রদেশ নামে অভিহিত। আরাসঙ্গো নদী প্রাক্বাতক গৌরবে অতুলনীয়। ইহার উভর তীরে বনলক্ষ্মী যে বিপুল সম্পদ সম্প্রসারিত করিয়া রাখিয়াছিলেন, তাহা পৃথিবীর সকল দেশেই দুর্লভ॥কন্তু আরাসঙ্গে। নদী আতঙ্কেরও আকর; প্রাণ হাতে করিয়া এই নদীতে নৌ-চালন করিতে হয়। নদীবক্ষ যেখানে সুপ্রশস্ত, সেই স্থানে মধ্যাহ্রু-সূর্য্যের আলোক প্রতিবিধিত হইলেও, হহার সঙ্কীর্ণর্ভর অংশ ঘন বনচ্ছায়ায় আচ্ছাদিত থাকায় সূর্য্যালোক সেখানে প্রবেশ করিতে পারে না; মনে হয় যেন কোন গহন কানন-কুঞ্জের ভিতর দিয়া তরঙ্গিণী প্রবাহিত হইতেছে। কোন স্থানে বৃক্ষ-পত্রের ব্যবধান-পথে মধ্যাহ্ণের দীপ্ত শয্যালোক প্রতিফলিত হইয়া ঝিক্‌-মিক্‌ করিতেছিল, কোন স্থানে বৃক্ষচ্ছায়ার অভাবে মধ্যাহ্ন-মার্কণ্ডের অবাধ আলোক অম্লান গৌরবে প্রতিবিম্বিত