পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌরাণিকী হইলে সেই দৃশ্য পৃথিবীতে স্বর্গের আভাস দেয়, যাহা করুণারূপিণী। রমণীর করুণার তোরণস্বরূপ, যাহার ক্ষরিত রস পরমানন্দময়ের আনন্দকণা বিতরণ করিবার সুধা ভাণ্ডস্বরূপ,-রমণীর যে যুগ্ম-স্তন মানবরক্ষার জন্য অনন্ত দয়ায় ভগবান স্বহস্তে নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন, পাপ-বিকারগ্ৰস্ত শ্ৰীবৎস স্বীয় ভোগবাসনা তৃপ্তি করিবার জন্য ধরার নিকট তাহাই চাহিল। ধরা প্রথম তাহার কথা বুঝিতে পারিলেন না। তিনি আতিথ্য-পালনের স্বৰ্গরাজ্যে বিচরণ করিতেছিলেন, হঠাৎ যেন স্বৰ্গ হইতে ভূতলে নিক্ষিপ্ত হইলেন। মুহূৰ্ত্তপরে ধরা বুঝিলেন, শ্ৰীবৎস কি চাহিতেছে! ধরা প্ৰতিশ্রুত হইয়াছেন। এই তুচ্ছ ক্ষণবিধ্বংসী দেহের জন্য তিনি কিরূপে প্ৰতিশ্রুতি ভঙ্গ করিবেন ? সহসা ধরা মঞ্চের পার্শ্ববৰ্ত্তী শাণিত ছুরিখানি তুলিয়া লইলেন, এবং স্বায় বক্ষ উন্মুক্ত করিয়া দুইটী স্তন সেই ছুরিকা দ্বারা কীৰ্ত্তনপূর্বক শ্ৰীবৎসের নিকট ধারণ করিলেন। “এখন এই সকল দ্রব্যে আমার অধিকার হইয়াছে’-এই বলিয়া দ্ৰব্য-সমেত সাজি লইয়া তিনি গৃহাভিমুখে যাত্রা করিলেন। শ্ৰীবৎস তথায় মূচ্ছিত হইয়া পড়িয়া রহিল। তখনও সূৰ্য্যাস্তেৱ প্ৰভা বিলীন হয় নাই, সেই প্ৰভামণ্ডিত প্ৰকৃতি যেন শোণিতান্দ্রি । যেন ধরার অঙ্গের শোণিত প্ৰকৃতি নিজ অঙ্গে লইয়াছেন । বুক্ত-রঞ্জিত-বািন্ধলা রমণী সেই বনপথে চলিলেন । এ কি ছিন্নমস্তা, যিনি নিজ শির নিজহস্তে কাটিয়া ত্যাগের আদর্শ জগতে প্ৰতিষ্ঠা করেন ? ধরার দেহ কুসুম-সুকুমার, কিন্তু কঠোর সত্যপালনে ধরা বীজসম। এ কি কোমল, না কঠোর ? এ কি বীণাধবনি, না। দুন্দুভি-শব্দ ? এ কি ফুলশার, না গাণ্ডীব ? ধরা ভগবানকে পাইয়াছেন, তিনি উভয়ই । তিনি প্ৰকৃতির মত লীলাময়ী ও সুন্দরী, এবং তিনি