পাতা:প্রকৃতি বনাম মানুষঃ একটি পরিকল্পিত সংঘাত - মাধব গাডগিল.pdf/৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 অতিমারি নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের চূড়ান্ত গাফিলতি ও অব্যবস্থার কারণে বিগত বছর দু’য়েকে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, বিশেষত পরিযায়ী শ্রমিকেরা। এক অভূতপূর্ব গৃহবন্দীত্বে আটকে থেকেছে স্বাভাবিক সামাজিক জীবন। অতিমারিজনিত বাধা, নিষেধাজ্ঞার কারণে একচেটিয়া আগ্রাসন বিরোধী মঞ্চ (ফামা)’র ২০২০ সালের প্রতিষ্ঠা দিবস ২৬ জুলাইয়ের বার্ষিক স্মারক বক্তৃতা আমরা অনুষ্ঠিত করতে পারিনি। সরকারী অতিমারী বিধি রুজু থাকার কারণে ২০২১ সালের স্মারক বক্তৃতাও সভাকক্ষে করার প্রয়োজনীয় অনমতি মেলেনি। অগত্যা, অনলাইন মাধ্যমে ‘অভী দত্ত মজুমদার স্মারক বক্তৃতা, সপ্তম বর্ষ’ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এবারের বক্তা ছিলেন খ্যাতনামা সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ ও সেণ্টার ফর ইকোলজিকাল সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মাধব গ্যাডগিল। বক্তব্যের বিষয় ছিল ‘প্রকৃতি বনাম মানুষ: একটি পরিকল্পিত সংঘাত’। সভায় আহ্বায়কদের পক্ষ থেকে অধ্যাপিকা মেরুনা মুর্মু ফামা’র কর্মধারা, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও স্মারক বক্তৃতার বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন। ফামা’র কনিষ্ঠতম সদস্য টোড়ি দত্ত মজুমদারের ভাষ্যে ফামা’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অকালপ্রয়াত অধ্যাপক অভী দত্ত মজুমদারের সংগ্রামী জীবনের স্মৃতি উঠে আসে।

 স্মারক বক্তৃতার কারিগরি সহায়ক Prohor.in বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে সম্প্রচার করে যার ফলে প্রায় ৮০০০ দর্শকের কাছে এবারের সভা পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে। ফামা’র অন্যতম সদস্য আশিষ কুসুম ঘোষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্য রাখেন। আমরা ফামা’র অন্যতম শুভানুধ্যায়ী বন্ধু অনিতেশ চক্রবর্তী ও টিম-প্রহরের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ কারিগরি সহ বিবিধ সহায়তার জন্য।

 অধ্যাপক গ্যাডগিলের মূল বক্তৃতাটি পরিবর্ধিত রূপে ইংরেজি ভাষায় ইতিমধ্যেই ২০২২ কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে। সেইটির বাংলা ভাষান্তর প্রকাশ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। গল্পের ছলে, গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে ব্যক্তিগত যাপনের অভিজ্ঞতা এমনকি প্রশাসক ও আইন প্রণেতা গ্যাডগিলের চিন্তা, বিশ্লেষণ ও ক্ষোভ বেশ স্পষ্ট রূপেই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখনিতে। এক কথায় বইটিতে লেখকের দৃষ্টিতে প্রজাতি তথা প্রকৃতি পরিবেশ সংরক্ষণে ভারতীয় রাষ্ট্র ও এ দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সংঘাতের বাস্তব চিত্র এবং রাজনৈতিক ও দার্শনিক দ্বন্দ্বের চরিত্র স্পষ্ট হয়েছে। অধ্যাপক গ্যাডগিল সহৃদয়তার সঙ্গে বইয়ের রয়্যালটি দাবী করছেন না।

 বাংলা বইটি প্রকাশিত হতে পারত না শ্রী পার্থ দে, হিন্দোল আহমেদ, দেবেশ সাঁতরা, শুচিশ্রী চ্যাটার্জী, বন্দনা মণ্ডল, ইমন সাঁতরা ও সুরমিতা কাঞ্জিলাল এবং মৈনাক মাইতির সাহায্য ছাড়া। এঁরা সকলেই আমাদের বন্ধু, কমরেড। তাই আগামী দিনেও তাদের দু’হাত ভরা সাহায্যের অপেক্ষায় থাকব।

 আমরা আশান্বিত যে আগামী প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর স্মারক বক্তৃতায় আপনাদের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাত হবে।

 সংগ্রামী অভিন্দন,

—জ্যোতির্ময়, ঈশিতা, মেরুনা
আহ্বায়কবৃন্দ, ফামা