বিপিন। (স্বগত) এঁর মনের মধ্যে একটা কি বেদনা রয়েছে নইলে এত অল্প বয়সে এই কাঁচামুখে এমন স্নিগ্ধ কোমল করুণভাব থাক্ত না। এটা কিসের খাতা? গান লেখা দেখচি। নীরবালা দেবী! (পাঠ)
শৈল। কি পড়চেন বিপিনবাবু?
বিপিন। কোন একটি অপরিচিতার কাছে অপরাধ করচি, হয় ত তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবার সুযোগ পাব না এবং হয়ত তাঁর কাছে শাস্তি পাবারও সৌভাগ্য হবে না কিন্তু এই গানগুলি মাণিক এবং হাতের অক্ষরগুলি মুক্তো! যদি লোভে পড়ে চুরি করি তবে দণ্ডদাতা বিধাতা ক্ষমা করবেন!
শৈল। বিধাতা মাপ করতে পারেন কিন্তু আমি করব না। ও খাতাটির পরে আমার লোভ আছে বিপিনবাবু।
রসিক। আর আমি বুঝি লোভ মোহ সমস্ত জয় করে বসে আছি? আহা, হাতের অক্ষরের মত জিনিষ আর আছে? মনের ভাব মূর্ত্তি ধরে আঙুলের আগা দিয়ে বেরিয়ে আসে―অক্ষরগুলির উপর চোখ বুলিয়ে গেলে, হৃদয়টি যেন চোখে এসে লাগে। অবলাকান্ত, এ খাতাখানি ছেড়োনা ভাই! তোমাদের চঞ্চলা নীরবালা দেবী কৌতুকের ঝরনার মত দিনরাত ঝরে পড়ছে, তাকে ত ধরে রাখ্তে পার না, এই খাতাখানির পত্রপুটে তারি একটি গণ্ডুষ ভরে উঠেছে―এ জিনিষের দাম আছে! বিপিনবাবু, আপনি ত নীরবালাকে জানেন না, আপনি এ খাতাখানা নিয়ে কি করবেন?
বিপিন। আপনারা ত বয়ং তাঁকেই জানেন―খাতাখানিতে আপনাদের প্রয়োজন কি? এই খাত থেকে আমি যেটুকু পরিচয় প্রত্যাশা করি তার প্রতি আপনারা দৃষ্টি দেন কেন?
শ্রীশের প্রবেশ।
শ্রীশ। মনে পড়েছে মশায়—সে দিন এখানে একটা বইয়েতে নাম