পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

 নীরবালা। (দ্রুত প্রবেশ করিয়া) এ কি রকমের ডাকাতী দিদি। আমার গানের খাতাখানা নিয়ে গেল? আমার ভয়ানক রাগ হচ্চে।

 রসিক। রাগ শব্দে নানা অর্থ অভিধানে কয়।

 নীর। আচ্ছা পণ্ডিত মশায়, তোমার অভিধান জাহির করতে হবে না—আমার খাতা ফিরিয়ে আন।

 রসিক। পুলিশে খবর দে ভাই, চোর ধরা আমার ব্যবসা নয়।

 নীর। কেন দিদি তুমি আমার খাতা নিয়ে যেতে দিলে?

 শৈল। এমন অমূল্য ধন তুই ফেলে রেখে যাস্ কেন?

 নীর। আমি বুঝি ইচ্ছে করে ফেলে রেখে গেছি?

 রসিক। লোকে সেই রকম সন্দেহ করছে!

 নীর। না রসিকদাদা, তোমার ও ঠাট্টা আমার ভাল লাগে না!

 রসিক। তা হলে ভয়ানক খারাপ অবস্থা!

(সক্রোধে প্রস্থান)

সলজ্জ নৃপবালার প্রবেশ।

 রসিক। কি নৃপ, হারাধন খুঁজে বেড়াচ্ছিস্?

 নৃপ। না আমার কিছু হারায় নি!

 রসিক। সে ত অতি সুখের সংবাদ। শৈলদিদি, তা হলে আর কেন, রুমালখানার মালিক যখন পাওয়া যাচ্ছে না, তখন যে লোক কুড়িয়ে পেয়েছে তাকেই ফিরিয়ে দিস্। (শৈলের হাত হইতে রুমাল লইয়া) এ জিনিসটা কার ভাই?

 নৃপ। ও আমার নয়! (পলায়নোদ্যত)।

 রসিক। (নৃপকে ধরিয়া) যে জিনিসটা খোওয়া গেছে নৃপ তার উপরে কোন দাবীও রাখ্‌তে চায় না।

 নৃপ। রসিকদাদা, ছাড় আমার কাজ আছে!