পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

গলাবন্ধ পাবে না বল্‌চি। দেখ দেখি দিদি, তুমিও যদি রসিকদার কথায় ঐ রকম করে হাস তা’হলে ওঁর আস্পর্দ্ধা আরও বেড়ে যায়।

 রসিক। দেখেছিস্ ভাই শৈল, নীরু আজ কাল ঠাট্টাও সইতে পারছে না, মন এত দুর্ব্বল হয়ে পড়েছে! নীরু দিদি, কোন কোন সময় কোকিলের ডাক শ্রুতিকটু বলে ঠেকে এই রকম শাস্ত্রে আছে, তোর রসিকদাদার ঠাট্টাকেও কি তোর আজকাল কুহুতান বলে ভ্রম হতে লাগ্‌ল?

 নীর। সেই জন্যেইত তোমার গলায় গলাবন্ধ জড়িয়ে দিতে চাচ্চি তানটা যদি একটু কমে।

 শৈল। নীরু আর ঝগড়া করিস্‌নে—আয়, এখনি সবাই এসে পড়বে। (উভয়ের প্রস্থান)

পূর্ণর প্রবেশ।

 রসিক। আসুন পূর্ণবাবু!

 পূর্ণ। এখনো আর কেউ আসেন নি?

 রসিক। আপনি বুঝি কেবল এই বৃদ্ধটিকে দেখে হতাশ হয়ে পড়েচেন। আরো সকলে আস্‌বেন পূর্ণবাবু।

 পূর্ণ। হতাশ কেন হব রসিক বাবু?

 রসিক। তা কেমন করে বলব বলুন? কিন্তু ঘরে যেই ঢুক্‌লেন আপনার দুটি চক্ষু দেখে বোধ হল তারা যাঁকে ভিক্ষা করে বেড়াচ্চে সে ব্যক্তি আমি নই।

 পূর্ণ। চক্ষুতত্বে আপনার এতদূর অধিকার হল কি করে?

 রসিক। আমার পানে কেউ কোন দিন তাকায় নি পূর্ণবাবু তাই এই প্রাচীন বয়স পর্য্যন্ত পরের চক্ষু পর্য্যবেক্ষণের যথেষ্ট অবসর পেয়েছি। আপনাদের মত শুভাদৃষ্ট হলে দৃষ্টিতত্ত্ব লাভ না করে অনেক দৃষ্টিলাভ