পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১৩৩

চন্দ্রবাবু ও নির্ম্মলার প্রবেশ।

 চন্দ্র। এই যে অক্ষয় বাবু!

 রসিক। আমার সঙ্গে অক্ষয় বাবুর সাদৃশ্য আছে শুনলে তিনি এবং তাঁর আত্মীয়গণ বিমর্ষ হবেন। আমি রসিক।

 চন্দ্র। মাপ করবেন—রসিক বাবু—হঠাৎ ভ্রম হয়েছিল।

 রসিক। মাপ করবার কি কারণ ঘটেছে মশায়! আমাকে অক্ষয়বাবু ভ্রম করে কিছুমাত্র অসম্মান করেন নি। মাপ তাঁর কাছে চাইবেন। পূর্ণবাবুতে আমাতে এতক্ষণে বিজ্ঞানচর্চ্চা করছিলুম চন্দ্রবাবু।

 চন্দ্র। আমাদের কুমারসভায় আমরা মাসে একদিন করে বিজ্ঞান আলোচনার জন্যে স্থির করব মনে কর্‌ছিলুম। আজ কি বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল পূর্ণবাবু?

 পূর্ণ। না, সে কিছুই না চন্দ্রবাবু!

 রসিক। চোখের দৃষ্টি সম্বন্ধে দুচার কথা বলাবলি করা যাচ্ছিল।

 চন্দ্র। দৃষ্টির রহস্য ভারি শক্ত রসিক বাবু।

 রসিক। শক্ত বৈকি! পূর্ণবাবুরও সেই মত।

 চন্দ্র। সমস্ত জিনিষের ছায়াই আমাদের দৃষ্টিপটে উল্টো হয়ে পড়ে, সেইটেকে যে কেমন করে আমরা সোজাভাবে দেখি সে সম্বন্ধে কোন মতই আমার সন্তোষজনক বলে বোধ হয় না।

 রসিক। সন্তোষজনক হবে কেমন করে? সোজা দেখা বাঁকা দেখা এই সমস্ত নিয়ে মানুষের মাথা ঘুরে যায়। বিষয়টা বড় সঙ্কটময়।

 চন্দ্র। নির্ম্মলার সঙ্গে রসিকবাবুর পরিচয় হয় নি? ইনিই আমাদের কুমার সভার প্রথম স্ত্রীসভ্য।

 রসিক। (নমস্কার করিয়া) ইনি আমাদের সভার সভালক্ষ্মী। আপনাদের কল্যাণে আমাদের সভায় বুদ্ধি বিদ্যার অভাব ছিল না, ইনি আমাদের শ্রী দান করতে এসেছেন।