পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৮
প্রজাপতি নির্ব্বন্ধ।

 শ্রীশ। এতদিন কুমার সভার যে কি একটা মহৎ অভাব ছিল আজ ঘরের মধ্যে ঢুকেই তা বুঝতে পেরেছি;―সোনার মুকুটের মাঝখানটিতে কেবল একটি হীরে বসাবার অপেক্ষা ছিল—আজ সেইটি বসান হয়েছে কি বলেন পূর্ণবাবু!

 পূর্ণ। আপনাদের মত এমন রচনাশক্তি আমার নেই—আমি এত বানিয়ে বানিয়ে কথা বাঁটতে পারিনে—বিশেষত মহিলাদের সম্বন্ধে।

 শ্রীশ। আপনার অক্ষমতার কথা শুনে দুঃখিত হলেম পূর্ণবাবু― আশা করি ক্রমে উন্নতিলাভ কর্‌তে পারবেন।

 বিপিন। (রসিককে জনান্তিকে টানিয়া) দুই বীর পুরুষে যুদ্ধ চলুক এখন আসুন্ রসিকবাবু আপনার সঙ্গে দুই একটা কথা আছে!―দেখুন―সেই খাতা সম্বন্ধে আর কোন কথা উঠেছিল?

 রসিক। অপরাধ করা মানবের ধর্ম্ম আর ক্ষমা করা দেবীর―সে কথাটা আমি প্রসঙ্গক্রমে তুলেছিলেম―

 বিপিন। তাতে কি বল্লেন?

 রসিক। কিছু না বলে বিদ্যুতের মত চলে গেলেন।

 বিপিন। চলে গেলেন?

 রসিক। কিন্তু সে বিদ্যুতে বজ্র ছিল না।

 বিপিন। গর্জ্জন?

 রসিক। তাও ছিল না।

 বিপিন। তবে?

 রসিক। এক প্রান্তে কিংবা অন্যপ্রান্তে একটু হয়ত বর্ষণের আভাস ছিল।

 বিপিন। সেটুকুর অর্থ?

 রসিক। কি জানি মহাশয়! অর্থও থাক্‌তে পারে অনর্থও থাক্‌তে পারে!