পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১৪৭

সুখে ছিলেম আপন মনে,
মেঘ ছিল না গগন কোণে;
লাগ্‌বে তরী কুসুম বনে ছিলাম সে আশায়।
তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়!

 রসিক। যাক্ ডুবে, কি বলেন বিপিনবাবু!

 বিপিন। যাক্‌গে! কিন্তু কোথায় ডুব্‌ল তার একটু ঠিকানা রাখা চাই। আচ্ছা রসিকবাবু এ গানটা তিনি কেন খাতায় লিখে রাখ্‌লেন?

 রসিক। স্ত্রী-হৃদয়ের রহস্য বিধাতা বোঝেন না এই রকম একটা প্রবাদ আছে, রসিক বাবুত তুচ্ছ।

 শ্রীশ। (নিকটে আসিয়া) বিপিন, তুমি চন্দ্র বাবুর কাছে একবার যাও! বাস্তবিক, আমাদের কর্ত্তব্যে আমরা ঢিলে দিয়েছি—ওঁর সঙ্গে একটু আলোচনা করলে উনি খুসি হবেন।

 বিপিন। আচ্ছা। (প্রস্থান)

 শ্রীশ। হাঁ, আপনি সেই যে শেলাইয়ের কথা বল্‌ছিলেন―উনি বুঝি নিজের হাতে সমস্ত গৃহ কর্ম্ম করেন?

 রসিক। সমস্তই।

 শ্রীশ। আপনি বুঝি সে দিন গিয়ে দেখ্‌লেন তাঁর কোলে বালিশের ওয়াড়গুলো পড়ে রয়েছে আর তিনি―

 রসিক। মাথা নীচু করে ছুঁচে সূতো পরাচ্ছিলেন।

 শ্রীশ। ছুঁচে সূতো পরাচ্ছিলেন। তখন স্নান করে এসেছেন বুঝি?

 রসিক। বেলা তখন তিনটে হবে।

 শ্রীশ। বেলা তিনটে। তিনি বুঝি তাঁর খাটের উপর বসে―

 রসিক। না খাটে নয়—বারান্দার উপর মাদুর বিছিয়ে―

 শ্রীশ। বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে বসে ছুঁচে সূতো পরাচ্ছিলেন-