পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ
৪৭

 রসিক। (করজোড়ে) বড়দিদি ভাই, তোমার মা আমাকে সংশোধনের বিস্তর চেষ্টা করচেন, কিন্তু একটু অসময়ে সংস্কার কার্য্য আরম্ভ করেচেন—এখন তাঁর শাসনে কোন ফল হবে না! বরঞ্চ এখনো নষ্ট হবার বয়স আছে, সে বয়সটা বিধাতার কৃপায় বরাবরই থাকে, লোল কটাক্ষটা শেষকাল পর্য্যন্ত খাটে, কিন্তু উদ্ধারের বয়স আর নেই। তিনি এখন কাশী যাচ্চেন, কিছুদিন এই বৃদ্ধ শিশুর বুদ্ধিবৃত্তির উন্নতিসাধনের দুরাশা পরিত্যাগ করে শান্তিতে থাকুন—কেন তোরা তাঁকে কষ্ট দিবি।

জগত্তারিণীর প্রবেশ।

 জগত্তারিণী। বাবা তা হলে আসি।

 অক্ষয়। চল্লে না কি মা? রসিকদাদা যে এতক্ষণ দুঃখ করছিলেন যে তুমি—

 রসিক। (ব্যাকুলভাবে) দাদার সকল কথাতেই ঠাট্টা! মা, আমার কোন দুঃখ নেই—আমি কেন দুঃখ করতে যাব?

 অক্ষয়। বল্‌ছিলে না, সে, বড়মা একলাই কাশী যাচ্চেন, আমাকে সঙ্গে নিলেন না?

 রসিক। হাঁ, সে ত ঠিক কথা! মনে ত লাগ্‌তেই পারে—তবে কি না মা যদি নিতান্তই—

 জগত্তারিণী। না বাপু, বিদেশে তোমার রসিকদাদাকে সাম্‌লবে কে? ওঁকে নিয়ে পথ চল্‌তে পারব না।

 পুরবালা। কেন মা, রসিকদাদাকে নিয়ে গেলে উনি তোমাকে দেখতে শুন্‌তে পার্ত্তেন।

 জগত্তারিণী। রক্ষে কর, আমাকে আর দেখে শুনে কাজ নেই। তোমার রসিকদাদার বুদ্ধির পরিচয় ঢের পেয়েছি।