যে রকম পারবেন তুমি সে রকম পার্বে না এবং তুমি যে রকম পার্বে একজন স্ত্রীলোক সে রকম পার্বেন না—অতএব সভার উদ্দেশ্যকে সর্ব্বাঙ্গ সম্পূর্ণভাবে সাধন কর্তে গেলে তোমারও যেমন দরকার স্ত্রীসভ্যরও তেমনি দরকার।
লেশমাত্র উত্তেজনা প্রকাশ না করিয়া বিপিন শান্তগম্ভীরস্বরে বলিয়া গেল—কিন্তু শ্রীশ কিছু উত্তপ্ত হইয়া বলিল, যারা কাজ কর্তে চায় না, তারাই উদ্দেশ্যকে ফলাও করে তোলে। যথার্থ কাজ করতে গেলেই লক্ষ্যকে সীমাবদ্ধ কর্তে হয়। আমাদের সভার উদ্দেশ্যকে যত বৃহৎ মনে করে তুমি বেশ নিশ্চিন্ত আছ, আমি তত বৃহৎ মনে করিনে।
বিপিন শান্তমুখে কহিল, আমাদের সভার কার্য্যক্ষেত্র অন্ততঃ এতটা বৃহৎ যে তোমাকে গ্রহণ করেছে বলে আমাকে পরিত্যাগ কর্তে হয় নি এবং আমাকে গ্রহণ করেছে বলে তোমাকে পরিত্যাগ করতে হয় নি। তোমার আমার উভয়েরই যদি এখানে স্থান হয়ে থাকে, আমাদের দুজনেরই যদি এখানে উপযোগিতা ও আবশ্যকতা থাকে তাহলে আরও একজন ভিন্ন প্রকৃতির লোকের এখানে স্থান হওয়া এমন কি কঠিন?
শ্রীশ চটিয়া কহিল—উদারতা অতি উত্তম জিনিষ, সে আমি নীতিশাস্ত্রে পড়েছি। আমি তোমার সেই উদারতাকে নষ্ট কর্তে চাইনে, বিভক্ত কর্তে চাই মাত্র। স্ত্রীলোকেরা যে কাজ কর্তে পারেন তার জন্যে তাঁরা স্বতন্ত্র সভা করুন, আমরা তার সভ্য হবার প্রার্থী হব না এবং আমাদের সভাও আমাদেরই থাক্! নইলে আমরা পরস্পরের কাজের বাধা হব মাত্র। মাথাটা চিন্তা করে করুক্; উদরটা পরিপাক করতে থাক্—পাকযন্ত্রটি মাথার মধ্যে এবং মস্তিষ্কটি পেটের মধ্যে প্রবেশ চেষ্টা না কর্লেই বস্!
বিপিন। কিন্তু তাই বলে মাথাটা ছিন্ন করে এক জায়গায় এবং পাকযন্ত্রটাকে আর এক জায়গায় রাখলেও কাজের সুবিধা হয় না!
শ্রীশ। অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া কহিল―উপমা ত আর যুক্তি নয় যে