পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वारुढ् ङवि९ WOS সঞ্চিত রয়েছে, তার রসাম্ববাদু না করলে মানবজনম বিফল হয়; দার্শনিক বলবোৰ, মনের উদারতা ও হািদয়ের গভীরতা লাভ করবার জন্য অতীতের সাহিত্যের পরিচয় লাভ করা একান্ত প্রয়োজন; বৈজ্ঞানিক প্রমাণ করতে উদ্যত হবেন যে, অতীতের সভ্যতার সঙ্গে সাক্ষাৎ-সম্পবন্ধে পরিচয় না থাকলে আমরা বত মান সভ্যতার যথার্থ প্রকৃতি ও মতিগতির পরিচয় পাব না, কেননা বর্তমান ক্রমগঠিত হয়েছে অতীতের গভে; এবং আর্টিসন্ট দেখিয়ে দেবেন। ষে, ক্ল্যাসিক সাহিত্যের এমন-একটি গণ আছে যা বতমান সাহিত্যে পাওয়া দীঘাট এবং সে গণের নাম হচ্ছে আভিজাত্য। এ-সকল উক্তিই সত্য, সতরাং সংস্কৃত ভাষা ও সংস্কৃত সাহিত্যের সম্যক চৰ্চা আমাদের চিরদিনই করতে হবে। বলা বাহাল্য, পথিবীর অসংখ্য মতভাষার মধ্যে গ্ৰীক ল্যাটিন ও সংস্কৃত, এই তিনটি আযভাষাই ক্ল্যাসিক, অপর কোনোটিই নয়। এ স্থানে একটি কথার উল্লেখ করা দরকার। অলংকারশাস্ত্রের ভাষায় বলতে গেলে, ইউরোপে গ্রীক-ল্যাটিনের বাণী সেকালে ছিল প্রভাসম্মিত, একালে তা হয়েছে সহৃদ সম্মিমত; অর্থাৎ আগে যা ছিল বেদবাক্য, এখন তা হয়েছে ন্যায়কথা। আশা করি, কালে সংস্কৃতসরস্বতীর বাণীও আমাদের কাছে তার প্রভাসম্মিমত চরিত্র হারিয়ে সহৃদ সম্মিত হয়ে উঠবে। তা যে দার-ভবিষ্যতেও কান্তবাণী হয়ে উঠবে, সে ভয় পাবার কোনো কারণ নেই। এই তিনটি ক্ল্যাসিকের মহা গণ এই যে, তার প্ৰত্যেকটিই পরষালি সাহিত্য, মেয়েলি নয় ; সে সাহিত্যে আধাআধি ভাষা কিম্পবা গদগদ ভাষের স্থান নেই; সে সাহিত্য যেখানে কোমল সেখানে দর্বল নয়, যেখানে সানরোগ সেখানে সান নাসিক নয়। এ কারণেও সংস্কৃতের চর্চা আমাদের পক্ষে অত্যাবশ্যক এবং অবশ্যকতব্য, কেননা বাংলার বাণীর কান্তাসস্মিত হয়ে পড়বার দিকে একটা স্বাভাবিক ঝোঁক এবং রোখা আছে। আজকের দিনে ইউরোপের কোনো ভাষাই অপর কোনো ভাষার আওতায় পড়ে নেই, সে ভাভাগে এখন সবাই স্বাধীন সবাই প্রধান; অথচ সে দেশের শিক্ষিতসম্প্রদায় এই জাতিস্বাতন্ত্র্যের যাগেও সর্বদেশী ভাষা ব্যতীত আরো অন্তত দটিতিনটি বিদেশী ভাষা সাগ্রহে এবং সানন্দে শিক্ষা করেন। এর কারণ কি ? এর কারণ সভ্যজগতের এ ভজ্ঞান জন্মেছে যে, মানষের মনোজগৎ কেউ আর এক-হাতে গড়ে নি, এর ভিতর নানা যাগের নানা দেশের হােত আছে। সে কারণ, বিদেশী ভাষা ও বিদেশী সাহিত্যের চাচা ছেড়ে দিলে মানষেকে মনোরাজ্যে একঘরে এবং কুনো হয়ে পড়তে হয়। একমাত্র জাতীয় সাহিত্যের চর্চায় মানষের মন জাতীয় ভাবের গন্ডির মধ্যেই থেকে যায়, এবং এ বিষয়ে বোধ হয় দ্বিমত নেই যে, মনোরাজ্যে কম্পমন্ডকে হওয়াটা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়, সে কাপের পরিসর যতই প্রশস্ত ও তার গভীরতা যতই অগাধ হোক-না কেন। এবং এ কথাও অস্বীকার করবার জো নেই যে, যে জাতি মনে যতই বড়ো হোক-না কেন, তার মনের একটা বিশেষরকম সংকীর্ণতা আছে, এবং তার মনের ঘরের দেয়াল ভাঙবার জন্য বিদেশী মনের ধাক্কা চাই। বিদেশীর প্রতি অবজ্ঞা বিদেশী মনের অজ্ঞতা থেকেই জন্মলাভ করে এবং এই সত্রে জাতির প্রতি জাতির দ্বেষ-হিংসাও প্রশ্রয় পায়। অপরের মনের সম্পকে এলে তার সঙ্গে মনের মিল হওয়াটা মানবের পক্ষে স্বাভাবিক ; কেননা