পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গভাষা বনাম বাবা-বাংলা" ওরফে সাধভাষা Sis নেত্রে চেয়ে আছেন। ঢাকা রিভিউ-এর সমালোচনা অবলম্বন করে আমার নিজের মত সমৰ্থন করাই এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য। অভিযোগ সম্পাদক মহাশয়ের কথা হচ্ছে এই— মাদ্রিত সাহিত্যে আমরা করতুম” “শোনাচ্ছিলাম’, ‘ডাকতুম’ ‘মেশবার’ (‘খেন ‘গেনাই বা বাদ যায় কেন ? ) প্রভৃতি প্রাদেশিক শবদ ব্যবহারের পক্ষপাতী নাহি। অন্য ভাষাভাষী বাঙালির অপরিজ্ঞাত ভাষা প্রয়োগে সাহিত্যিক সংকীর্ণতা প্রকাশ পায় বলিয়া আমাদের বিশবাস। উপরোক্ত পদটি যদি সাধভাষার নমনা হয়, এবং ঐরােপ লেখাতে যদি “সাহিত্যিক” উদারতা প্রকাশ পায়, তা হলে লেখায় সাধিতা এবং উদারতা আমরা যে কেন বিজন করতে চাই, তা ভাষাজ্ঞ এবং রসজ্ঞ পাঠকেরা সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন। এরপ ভাষা সাধও নয়, শািন্ধও নয়, শােধ যা-খাঁশি-তা” ভাষা। কোনো লেখক।বিশেষের লেখা নিয়ে তার দোষ দেখিয়ে দেওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার বিশ্ববাস, ওরাপ করাতে সাহিত্যের কোনো লাভ নেই। মশা মেরে ম্যালেরিয়া দর করবার চোটা ব্যথা, কারণ সে কাজের আর অন্ত নেই। সাহিত্যক্ষেত্রে কতকটা আলো এবং হাওয়া এনে দেওয়াই সে সন্থানকে সম্ববাস্থ্যকর করবার প্রকৃষ্ণটি উপায। তা সত্ত্বেও ঢাকা রিভিউ হতে সংগহীত উপরোক্ত পদটি অনায়াসলব্ধ পদ নিয়ে অযত্নসলভ বােক্যরচনার এমন খাঁটি নমনা যে, তার রচনাপদ্ধতির দোষ বাঙালি পাঠকদের চোখে আঙল দিয়ে দেখিয়ে দেবার লোভ আমি সংবরণ করতে পারছি নে। শনতে পাই, কোনো-একটি ভদ্রলোক তিন অক্ষরের একটি পদ বানান করতে চারটি ভুল করেছিলেন। ঔষধ” এই পদটি তাঁর হাতে ‘অউসদ’ এই রােপ ধারণ করেছিল। সম্পাদক মহাশয়ও একটি বাক্য রচনায় অন্তত পাঁচ-ছটি ভুল করেছেন - ১. সাহিত্যের পতবে ‘মাদ্রিত’ এই বিশেষণটি জড়ে দেবার সার্থকতা কি ? আমাদ্রিত সাহিত্য জিনিসটি কি ? ওর অর্থ কি সেই লেখা, যা এখন হস্তাক্ষরেই আবদ্ধ হয়ে আছে, এবং ছাপা হয় নি ? তাই যদি হয়, তা হলে সম্পাদক মহাশয়েব বক্তব্য কি এই যে, ছাপা হবার পাবে লেখায় যে ভাষা চলে, ছাপা হবার পরে আর তা চলে না ? আমাদের ধারণা, মাদ্রিত লেখামাত্রই এক সময়ে অমাদ্রিত অবস্থায় থাকে, এবং মাদ্রাযন্ত্রের ভিতর দিয়ে তা রিপোন্তরিত হয়ে আসে না। বরং কোনোরােপ রপান্তরিত হলেই আমরা আপত্তি করে থাকি, এবং যে ব্যক্তির সাহায্যে তা হয়, তাকে আমরা মাদ্রাকরের শয়তান বলে অভিহিত করি। এইরপ বিশেষণের প্রয়োগ শােধ অযথা নয়, একেবারেই অনর্থক। ২. ‘ডাকতুম, “করতুম” প্রভাতির ‘তুমি’ এই অন্তভাগ প্রাদেশিক শব্দ নয়, কিন্তু বিভক্তি। এ স্থলে ‘শব্দ” এই বিশেষ্যটি ভুল অৰ্থে ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ সম্পাদক মহাশয় বোধ হয়। এ কথা বলতে চান না যে, ‘ডাকা” “করা” “শোনা” প্রভাতি ব্রুিয়া শব্দের অর্থ কলিকাতা প্রদেশের লোক ছাড়া আর কেউ জানেন না। এ কথা fনভয়ে বলা চলে যে, ‘ডাকা” “করা’, ‘শোনা” প্রভাতি শব্দ, “অন্য ভাষাভাষী’ বাঙালির