পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনা-হিন্দস্থান কোনো পারিবারিক সমিতিতে পঠিত হে সমিতির কুমারগণ, আমাদের দেশের লোকের বিশ্ববাস যে হিন্দ স্থানের বাইরে হিন্দর আর সস্থান নেই। এ বিশ্ববাস সব সাধারণ। শিক্ষিত অশিক্ষিত সকলেরই ধারণা যে, হিন্দধম ও হিন্দজাতি আছে শািন্ধ জিয়োগ্রাফিতে- যাকে বলে ভারতবৰ্ষ তারই চতুঃসীমার মধ্যে। আমরা সকলেই দেখতে পাই, ভারতবর্ষের পশ্চিমে রয়েছে মসলমান, উত্তরেও তাই, পাবে বৌদ্ধ, আর দক্ষিণে সমদ্র। আর সমদ্রের ওপারে। যদি কোনো দেশ থাকে তো সে দেশে হিন্দজাত কখনো যায় নি; আর যদি কখনো গিয়ে থাকে তো তখনই তাদের হিন্দীত্ব মারা গিয়েছে। কেননা একালে হিন্দজাতির সমদ্রযাত্রার অথ তার গঙগাযাত্রা। এ ধারণা শিক্ষিতলোকসামান্য হলেও, অশিক্ষিত ধারণা। ইংরেজি শিক্ষার চশমা পরলে আমাদের বতর্তমান জাতীয় দৈন্য ও হীনতা সম্পবন্ধে আমাদের চোখ যেমন ফোটে, আমাদের জাতীয় পবর্তগৌরব ও ঐশবষ সম্পবন্ধে আমরা তেমনি অন্ধ হই। আমাদের নাতন শিক্ষা এসেছে পশ্চিম থেকে। এর ফলে আমরা পােব সম্পবন্ধে সম্পৰ্ণে অজ্ঞ- পাবকাল সম্পবন্ধেও, পর্বদিক সম্পবন্ধেও। ভারতবর্ষের পবিকালের হিস্টরির সঙ্গে আমাদের যদি কিছমাত্র পরিচয় থাকত তা হলে আমরা জানতুম যে, ভারতবর্ষের পর্বের অনেক দেশেও অনেককাল ধরে হিন্দধম ও হিন্দজাতি রাজত্ব করেছে। আজকাল অনেকে যাকে ভারতবর্ষের অতীত বলে চালিয়ে দিতে চান, তা কোনো দেশেরই অতীত নয়, ভারতবর্ষের তো নয়ই। বেশির ভাগ লোকের মতে ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ যেমন ইউরোপের বর্তমান, জনকতক লোকের মতে ভারতবর্ষের অতীতও তেমনি ইউরোপের বতর্তমান। আমাদের কলপনার দৌড়ও বিলেত পৰ্যন্ত । আমাদের শাস্ত্রকাররা বলেন লোকের নাম থেকে দেশের নাম হয়, দেশের নাম থেকে লোকের নাম হয় না। যথা, আযরা বাস করতেন বলেই আধখানা ভারতবর্ষের নাম হয়েছিল আযাবত; আর আযরা যদি অপাের কোনো দেশে গিয়ে বাস করেন, তা হলে সে দেশের নামও হবে আযাবত। এই হিসেবে ভারতবষী ও চীনের ভিতর যে-সব দেশ আছে, সে-সব ভূভাগকে উপ-হিন্দ স্থান বলা অন্যায় নয়। যাক সে-সব পরোনো কথা। তোমরা শনে আশ্চর্য হবে যে, আজও এশিয়ার এক কোণে এমন একটি দেশ আছে, যেখানকার ষোলো-আনা অধিবাসী আজও হিন্দ। সেই দেশটির সঙ্গে তোমাদের চেনাপরিচয় করিয়ে দিতে চাই। সে পরিচয় করিয়ে দিতে বেশিক্ষণ লাগবে না। মাপে ও ম্যাপে ভারতবর্ষ যেমন বড়ো, সে দেশটি তেমনি ছোটো। ভারতবর্ষের তুলনায় সেটি তালের তুলনায় তিল যদুপ, তদুপ। এমন-কি, মান