পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

38O প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ O খেয়ালী লেখা বড়ো দশপ্ৰাপ্য জিনিস। কারণ সংসারে বদখেয়ালী লোকের কিছ কমতি নেই, কিন্তু খেয়ালী লোকের বড়োই অভাব। অধিকাংশ মানষ যা করে তা আয়াসসাধ্য; সাধারণ লোকের পক্ষে একটখানি ভাব অনেকখানি ভাবনার ফল । মানষের পক্ষে চেন্টা করাটাই স্বাভাবিক, সতরাং সহজ। সম্ববতঃউচ্ছসিত চিন্তা কিংবা ভাব শািন্ধ দ-এক জনের নিজ প্রকৃতিগণে হয়। যা আপনি হয় তা এতই শ্ৰেষ্ঠ ও এতই আশ্চর্যজনক যে, তার মলে আমরা দৈবশক্তি আরোপ করি। এ জগৎসন্টি ভগবানের লীলা বলেই এত প্রশস্ত, এবং আমাদের হাতে-গড়া জিনিস কম্পন্টসাধ্য বলেই এত সংকীর্ণ। তবে আমাদের সকলেরই মনে বিনা ইচ্ছাতেও যে নানাপ্রকার ভাবনা চিন্তার উদয় হয়, এ কথা অস্বীকার করবার জো নেই। কিন্তু সে ভাবনা চিন্তার কারণ সম্পন্ট এবং রােপ অস্পন্ট। রোগ শোক দারিদ্র্য প্রভাতি নানা সম্পািন্ট সাংসারিক কারণে আমাদের ভাবনা হয়; কিন্তু সে ভাবনা এতই এলোমেলো যে, অন্যে পারে কা কথা, আমরা নিজেরাই তার খেই খাঁজে পাই নে। যা নিজে ধরতে পারি। নে তা অন্যের কাছে ধরে দেওয়া অসম্পভব; যে ভাব আমরা প্ৰকাশ করতে পারি নে, তাকে খেয়াল বলা যায় না। খেয়াল অনিদিলিট কারণে মনের মধ্যে দিব্য একটি সংস্পষ্ট সসম্পবদ্ধ চেহারা নিয়ে উপস্থিত হয়। খেয়াল রািপবিশিষ্ট, मर्दाझन्ठा ऊा नन्न। 8 খেয়াল অভ্যাস করবার পাবে খেয়ালের রােপনির্ণয় করাটা আবশ্যক, কারণ সবরাপ জানলে অনধিকারীরা এ বিষয়ে ব্যথা চৰ্চা করবেন না। আমাদের লিখিত-শাস্ত্রে খেয়ালের বড়ো উদাহরণ পাওয়া যায় না, সতরাং সংগীতশাস্ত্র হতে এর আদশ নিতে হবে। এক কথায় বলতে গেলে, ধ্রুপদের অধীনতা হতে মন্ত হবার বাসনাই খেয়ালের উৎপত্তির কারণ। ধ্রুপদের ধীর গম্পভীর শািন্ধ শান্ত রােপ ছাড়াও পথিবীতে ভাবের অন্য অনেক রােপ আছে। বিলম্বিত লয়ের সাহায্যে মনের সকল সফতি, সকল আক্ষেপ প্রকাশ করা যায় না। সতরাং ধ্রুপদের কড়া শাসনের মধ্যে যার স্থান নেই, যথা তান গিটকিরি ইত্যাদি, তাই নিয়েই খেয়ালের আসল কারবার। কিন্তু খেয়ালের স্বাধীন ভাব উচ্ছঙ্খল হলেও যথেচ্ছাচারী নয়। খেয়ালী যতই কাদানি করােন-না কেন, তালচু্যত কিংবা রাগভ্ৰাট হবার অধিকার তাঁর নেই। জড় যেমন চৈতন্যের আধার, দেহ যেমন রাপের আশ্রয়ভূমি, রাগও তেমনি খেয়ালের অবলম্বন। বর্ণ ও অলংকার-বিন্যাসের উদ্দেশ্য রােপ ফটিয়ে তোলা, লকিয়ে ফেলা নয়। খেয়ালের চাল ধ্রুপদের মতো সরল নয় বলে মাতালের মতো অাঁকাবাঁকা নয়, নতকীর মতো বিচিত্র। খেয়াল ধ্রুপদের বন্ধন যতই ছাড়িয়ে যাক-না কেন, সরের বন্ধন ছাড়ায় না; তায় গতি সময়ে সময়ে অতিশয় দ্রুতলঘ, হলেও ছন্দঃপতন হয় না। গানও যে নিয়মাধীন, লেখাও সেই নিয়মাধীন। যাঁর মন