পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যৌবনে দাও রাজটিকা গতমাসের সবজি পত্রে শ্ৰীষিক্ত সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত যৌবনকে রাজাঁটকা দেবার প্রস্তাব করেছেন। আমার কোনো টীকাকার বন্ধ এই প্রস্তাবের বক্ষ্যমাণ-রােপ ব্যাখ্যা করেছেনযৌবনকে টিকা দেওয়া অবশ্যকতব্য, তাহাকে বসন্তের হসন্ত হইতে রক্ষা করিবার জন্য। এসস্থলে রাজটিকা অর্থ-রাজা অর্থাৎ যৌবনের শাসনকতা কর্তৃক তাহার উপকারার্থে দত্ত যে টিকা, সেই টিকা। উত্তপদ তৃতীয়া তৎপরাষ সমাসে সিদ্ধ হইয়াছে। উল্লিখিত ভাষ্য আমি রহস্য বলে মনে করতুমি যদি-না। আমার জানা থাকত যে, এ দেশে জ্ঞানীব্যক্তিদিগের মতে মনের বসন্তঋতু ও প্রকৃতির যৌবনকাল-দই অশায়েস্তা, অতএব শাসনযোগ্য। এ উভয়কে জড়িতে জািতলে। আর বাগ মানানো যায় না; অতএব এদের প্রথমে পথিক ক'রে পরে পরাজিত করতে হয়। বসন্তের সপশে ধরণীর সবাঙ্গ শিউরে ওঠে; অবশ্য তাই বলে পথিবী তার আলিঙ্গন হতে মন্তিলাভ করবার চেস্টা করে না, এবং পোষ-মাসকেও বারোমাস পষে রাখে না। শীতকে অতিক্রম করে বসন্তের কাছে আত্মসমপণ করায় প্রকৃতি যে অবাচীনতার পরিচয় দেয় না, তার পরিচয় ফলে। প্রকৃতির যৌবন শাসনযোগ্য হলেও তাকে শাসন করবার ক্ষমতা মানষের হাতে নেই; কেননা, প্রকৃতির ধর্ম মানবধর্মশাস্ত্রবাহিভূত। সেই কারণে জ্ঞানী ব্যক্তিরা আমাদের প্রকৃতির দািলটান্ত অনসরণ করতে বারণ করেন, এবং নিত্যই আমাদের প্রকৃতির উলটো টান টানতে পরামর্শ দেন ; এই কারণেই মানষের যৌবনকে বসন্তের প্রভাব হতে দরে রাখা আবশ্যক। অন্যথা, যৌবন ও বসন্ত এ দায়ের আবিভােব যে একই দৈবীশক্তির লীলা- এইরুপ একটি বিশ্ববাস আমাদের মনে স্থানলাভ করতে পারে। এ দেশে লোকে যে যৌবনের কপালে রাজটিকার পরিবতে' তার পণ্ঠে রাজদন্ড, প্রয়োগ করতে সদাই প্রস্তুত, সে বিষয়ে আর-কোনো সন্দেহ নেই। এর কারণ হচেছ যে, আমাদের বিশবাস মানবজীবনে যৌবন একটা মস্ত ফাঁড়া-কোনোরকমে সেটি কাটিয়ে উঠতে পারলেই বাঁচা যায়। এ অবস্থায় কি জ্ঞানী, কি অজ্ঞানী সকলেই চান যে, একলম্পেফ বাল্য হতে বাধক্যে উত্তীর্ণ হন। যৌবনের নামে আমরা ভয় পাই, কেননা তার অন্তরে শান্তি আছে। অপর পক্ষে বালকের মনে শক্তি নেই, ব্যুদ্ধের দেহে শক্তি নেই, বালকের জ্ঞান নেই, বন্ধের প্রাণ নেই। ত আমাদের নিয়ত চেস্টা হচ্ছে দেহের জড়তার সঙ্গে মনের জড়তার মিলন করা, অজ্ঞতার সঙ্গে বিজ্ঞতার সন্ধিস্থাপন করা। তাই আমাদের শিক্ষানীতি বা উদ্দেশ্য হচ্ছে ইচড়ে পাকানো, আর আমাদের সমাজনীতির উদ্দেশ্য হচ্ছে লোগ দিযে পাকানো। আমাদের উপরোক্ত চোেটা যে ব্যর্থ হয় নি। তার প্রমাণ আমাদের সামাজিক জীবন। আজকের দিনে এ দেশে রাজনীতির ক্ষেত্রে এক দিকে বালক, অপর দিকে বদ্ধ; সাহিত্যক্ষেত্রে এক দিকে স্কুলবয়, অপর দিকে স্কুলমাস্টার; সমাজে এক দিকে বাল্যবিবাহ, অপর দিকে অকালমত্যুে; ধমক্ষেত্রে এক দিকে শােধ ইতি ইতি, অপর