পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফালগন 8ሆK9 মলে আছে মানষের ঔচিত্য-জ্ঞান। প্রকৃতির যথাৰ্থ কায কারণের সন্ধান পেলেই বৈজ্ঞানিক কৃতাৰ্থ হন; কিন্তু কবি কলপনা করেন। তাই, যা হওয়া উচিত ছিল। কবির উক্তি হচ্ছে প্রকৃতির ব্যক্তির প্রতিবাদ। কবি চান সন্দর, প্রকৃতি দেন তার বদলে সত্য। একজন ইংরেজ কবি বলেছেন যে, সত্য ও সন্দর একই বস্তু; কিন্তু সে শােধ বৈজ্ঞানিকদের মািখ বন্ধ করবার জন্য। তাঁর মনের কথা এই যে, যা সত্য তা অবশ্য সন্দর নয়, কিন্তু যা সন্দর তা অবশ্যই সত্য—অর্থাৎ তার সত্য হওয়া উচিত ছিল। তাই আমার মনে হয় যে, পথিবীতে বসন্তঋতু থাকা উচিতএই ধারণাবশত সেকালের কবিরা কলপনাবলে উক্ত ঋতুর সন্টি করেছেন। বসন্তের সকল উপাদানই তাঁরা মনঅণ্ডেক সংগ্ৰহ ক’রে প্রকৃতির গায়ে তা বসিয়ে प्र686छन् । 8 আমার এ অনামানের সপটে প্রমাণ সংস্কৃতকাব্যে পাওয়া যায়, কেননা পরাকালে কবিরা সকলেই সপলিটবাদী ছিলেন। সেকালে তাঁদের বিশ্ববাস ছিল যে, সকল সতাই বক্তব্য- সে সত্য মনেরই হোক, আর দেহেরই হোক। অবশ্য একালের রচির সঙ্গে সেকালের রচির কোনো মিল নেই; সেকালে সরাচির পরিচয় ছিল কথা ভালো করে বলায়, একালে ও-গণের পরিচয় চুপ করে থাকায়। নীরবতা যে কবির ধম, এ জ্ঞান সেকালে জন্মে নি। সতরাং দেখা যাক, তাদের কাব্য থেকে বসন্তের জন্মকথা উদ্ধার করা যায় কি না। সংস্কৃতমতে বসন্ত মদনসখা । মনসিজের দশ নলাভের জন্য মানষেকে প্রকৃতির দবারস্থ হতে হয় না। কেননা, মন যার জন্মস্থান তার সাক্ষাৎ মনেই মেলে। ও-বস্তুর আবিভাবের সঙ্গে সঙ্গেই মনের দেশের অপবর্ণ রূপান্তর ঘটে। তখন সে রাজ্যে ফল ফোটে, পাখি ডাকে, আকাশ-বাতাস বৰ্ণে-গন্ধে ভরপর হয়ে ওঠে। মানষের স্বভাবই এই যে, সে বাইরের বস্তুকে অন্তরে আর অন্তরের বস্তুকে বাইরে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এই ভিতর-বাইরের সমন্বয় করাটাই হচেছ আত্মার ধ্যম। সতরাং মনসিজের প্রভাবে মানষের মনে যে রূপরাজ্যের সন্টি হয়, তারই প্রতিমাতিস্বরপে বসন্তঋতু কলিপিত হয়েছে; আসলে ও-ঋতুর কোনো অস্তিত্ব নেই। এর একটি অকাট্য প্রমাণ আছে। যে শক্তির বলে মনোরাজ্যের এমন রপান্তর ঘটে, সে হচ্ছে যৌবনের শক্তি। তাই আমরা বসন্তকে প্রকৃতির যৌবনকাল বলি, অথচ এ কথা আমরা কেউ ভাবি নে যে জন্মাবামাত্র যৌবন কারো দেহ আশ্রয় করে না; অথচ পয়লা ফালাগান যে বসন্তের জন্মতিথি, এ কথা আমরা সকলেই জানি। অতএব দাঁড়াল এই যে, বসন্ত প্রকৃতির রাজ্যে একটা আরোপিত अठू। আমার এ-সব। যক্তি যদিও সযক্তি না হয়, তা হলেও আমাদের মেনে নিতে হবে যে বসন্ত মানষের মনঃকলিপিত; নচেৎ আমাদের স্বীকার করতে হয় যে, বসন্ত ও মনোজ উভয়ে সমধমীর্ণ হলেও উভয়েরই সর্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। বলা বাহল, এ