পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

_ञाविन् - বিদেশী রাজকুমার - *○。 লোকটি অপ্রতিভ হইয়া বলিল—এই পুটি মাছ বংশীর মাথার কাছের দিকে চন্দ্রলেখা ধান শুকাইতে দু-একটা • • দিয়াছিল। বংশী অপ্রতিভ কণ্ঠে বলিল—ওঁ আমিই —তা-ই বা ধরা হচ্ছে কোন হিসাবে! চন্দ্ৰলেখা রুখিয়া ফেলেছি চন্দ্র। হাত লেগে হঠাৎ জলের গেলাসটা উণ্টে... দাড়াইব বলিল, স্থান খাচ্ছি যার তার কাছে বেইমানী করতে পারব না। তুমি উঠে যাও—না হ’লে নায়েব বাবুকে জানাধ । লোকটি ভয়ে ভয়ে উঠিয়া গেল। চন্দ্ৰলেখা ফিরিয়৷ আসিল । সহদেব দত্ত আসিতেছে—এবং তাহাদেরই এই ঘরে । চন্দ্রলেখা মাতিয়া আছে। এই কয়দিনে বহুকষ্টে সে রূপশাল ধান সিদ্ধ করিয়া দুয়ারে বিছাইয়া বিছাইয়া শুকাইয়া লইভেছে—শীঘ্রই আবার ভাল করিয়া ছাটিয়া ভানিয়া লইতে হইবে ; সৌধীন জমিদারের মুখে ত আর মোটা লাল চাল রুচিবে না ! চন্দ্রলেখা ফিরিয়া আসিয়া কাথা সেলাই করিতে বসিল। কাথাটা সহদেব দত্তের উদ্দেহে সেলাই হইতেছে। বর্ষার দিনে রাত্রে হঠাৎ শীত করিলে হয়ত সেই অপরিচিত প্রাতাতুর লোকটির প্রয়োজনে লাগিতে পারে। চন্দ্রলেখ এতি-যত্নে কাথার উপরে ফুলের পর ফুল—সুন্দর সুন্দর সভাপতি তুলিয়া চলিয়াছে। নক্স করিতে করিতে দ্রলেখা ভাবিল, বংশীকে সম্প্রতি সে যে-দুইটা কথা সেলাই gfরয় দিয়াছে সেগুলা থাকিলে তাহাকে আজ আর এত gষ্ট করিতে হইত না। কিন্তু বংশী লোকটা যেদিনই প্রথা পাইয়াছে সেই দিনই গায়ে জড়াইয়াছে। সেটা ত র হুজুরকে দেওয়া চলিবে না। তাহা ছাড়া রোগীর প্রহৃত—যদি বিদেশ-বিভূয়ে তাহার কিছু একটা হইয়া ! يلي সহসা চন্দ্রলেখাকে সচকিত করিয়া বংশী ক্ষীণকণ্ঠে কষ্ট-চন্দ্র, একটু জল... । চন্দ্রলেখা বিরক্ত হইয়া উঠিয়া পড়িল । জল লইয়া ব্র সম্মুখে উপস্থিত হইতেই বংশী বলিল— আজকাল কি কাজ পড়েছে চন্দ্র। ডাকলেও সাড়া পাই নে ! র কণ্ঠস্বরে অভিমানের স্বর বাজিয়া উঠিল। ক্তরে চন্দ্রলেখা শুকাইতে-দেওয়া ধানগুলার দিকে রুক্ষকণ্ঠে বলিয়া উঠিল—ধানের ওপরে জল অমন ফেলল কে ! 2. - یعے.. চন্দ্রর আর কোন কথা শুনিবার ধৈর্য্য রহিল না। বিপুল বিরক্তিতে সে ভিজা ধানগুলার দিকে চাহিয়া রহিল। ধানগুলা অমনভাবে আজও ভিজিয়া থাকিলে কবেই বা সে এগুলা শুকাইবে, আর কবেই বা ভানিয়া চাল তৈরি করিবে। হুজুরের আসিবার দিন ঘনাইয়৷ আসিল যে ! নিমাই সেদিন সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরিতেই চন্দ্রলেখ জিজ্ঞাসা করিল-হ্যা দাদ, বাবু আসবেন কবে ? নিমাই বলিল—সবাই তো বলছে পরশু কাছারি বাড়ীতে এসে পৌছবে। তাহলে তার পর দিন সকালে আসবে মাছ ধরতে | চন্দ্রলেখ চিন্তিত হইয়া বলে—কিছু শালিধানের চিড়ে যে করিয়ে রাখতে হয় দাদা। নিমাই অপ্রতিভ হইয়া বলে—ঠিক বটে—আমার মনেই छ्लि नां । সারা কলমীলতা গ্রামটা হঠাৎ যেন জাগিয়া উঠে—ঠিক এই চন্দ্ৰলেখার মত। প্রবলপ্রতাপান্বিত বিরাট ক্ষমতাশালী সেই অনাগত লোকটি আসিবে—প্রজাদের অভাব-অভিযোগ, দুঃখ-দুশ্চিন্তা বঞ্চিত জীর্ণ মলিন হৃদয়ে লক্ষ রূপে ফেনাইয়া উঠে । কিন্তু বংশী ওই অনাগত লোকটির সম্বন্ধে কোনো কিছু ভাবিয়া উঠিতে পারে না। রোগশয্যায় গুইয়া গুইয়া সে কেবল নিজের কথাই ভাবে । তাহার মনে হয়, চন্দ্রলেখ তাহার যত সন্নিকটে আসিয়াছিল যেন তাহার দ্বিগুণ দূরে সরিয়া গেল। এই কয়েক দিনের মধ্যে তাহার যেন একটা মস্ত ক্ষতি হইয়া গিয়াছে। সেই অপরিচিত অনাগত লোকটির প্রতি একটা তীক্ষ-কুটিল ঈর্ষ তাহার দুই জলস্ত চোখে জাগিয়া উঠে। অত সব লক্ষ্য করিবার মত চন্দ্ৰলেখার এখন অবসর নাই। কৰ্ম্মব্যস্ত চন্দ্রলেখার হঠাৎ তখন মনে পড়িয়া গিয়াছিল—হাটে একবার ঘাইতে হইবে এবং দিন থাকিতে |