পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন - স্থা বলিল, দু-চার দিনের মধ্যেই দিয়ে যাবে বলেছে। দরকারী আটপৌরে কাপড়গুলো ত দিয়েছে।’ সুননী দেবী মুখ মচকাইয়া বলিলেন, ‘কোনটা দরকারী, কোটা অদরকারী, তুই তার সব জানিস কি না! ধোবাৰাগীর বড় আস্কার, মিনি-পয়সায় কাচেন কি না !? স্বধা প্রতিবাদ করিল, ‘বা:রে, তার কি দোষ ! তুমিই কাপড় দেবার সময় বলেছিলে আগে আটপৌরেগুলো দিওঁ, ভাল কাপড় দু-দিন দেরি হলেও চলবে।’ মুনমুনী দেবী হতাশামাখা ভঙ্গী করিয়া বলিলেন, ‘তথন কি জানতাম— হয়ত মেয়ের কাছে বলিলেও খানিকটা অশোভনতা প্রকাশ পাইতে পারে এই আশঙ্কায় কথাটা ভীর মধ্য দিয়াই শেষ করিলেন। স্বধা বলিল, ‘তুমি কি মাসীমার শ্রাদ্ধে যাবে না কি ? স্ননয়নী উৎসাহভর কণ্ঠে কহিলেন, ‘যাব না। এক মার পেটের না হোক, বোন ত বটে। তা যাবার দফা তুমিই ত শেষ করে রেখেছ বাছ ? তাহার কণ্ঠস্বর ভারী হইয়া অশ্রুপতনের আভাস দিল । স্বধ প্রতিবাদ করিল না। দোষটা তাহার স্বন্ধে চাপাইয়া মা যদি শান্তি পান, ভাল কথা । খানিক মৌন থাকিয়া সে অবশেষে বলিল, ‘তারা বড়লোক, আমরা গরীব। আমাদের সেখানে যাওয়াট—’ স্বনানী দেবী মেয়ের মূঢ় প্রশ্নে জলিয়া উঠিলেন, ‘গরীব বড়লেক বলে সম্বন্ধটা কি হাত দিয়ে কেউ মুছে ফেলতে পারে । গরীব ব’লে সে কি আমাদের এত দিন হেনস্থা করেছিল ? মাস মাস টাকা পাঠায় নি তোর লেখাপড়ার জন্তে ? জালাস নে, বাপু । একে মরছি রমলার জন্তে, তা তোরা পাচ জনে লেগেছিস আমার পেছনে ? শুইয়া পড়ি। তিনি ফোস ফোস করিয়া কাদিতে লাগিলেন। মায়ের অবস্থা দেখিয়া সুধা বেচারী সকাল হইতেই কেমন বিস্ময় অনুভব করিতেছে। মায়ের গল্প বা কান্নার মধ্যে তাই সে কোন অর্থই খুজিয়া পায় নাই। তার কেবলই মনে হইতেছে, এ-সমস্তের মধ্যে কোথায় মস্তবড় একটা অসঙ্গতি রহিয়াছে—যার কথা মা হয়ত নিজেই জানেন না। যাহা হউক, মাকে সাত্বনা দিবার ছলে সে বলিল, স্থনয়নীর মৃত্যু ԳԳՀԻ 'মাসীমার শ্রাদ্ধে যাবে—ভাল কাপড় পরে নাইবা গেলে, মা। এ ত আর বিয়ের নেমস্তম্নে যাওয়া নয়।’ স্বনয়নী দেবীর" মনে কথাটা লাগিল । মেয়ে বড় হইয়াছে, কিছু লেখাপড়াও শিথিয়াছে, কথাটা বলিয়াছে নেহাৎ বুদ্ধিহীনার মত নহে। সত্যই ত, তাহার আদরিণী ভগিনীর শ্রাস্কে—সেখানে স্নেহময়ী দিদির সাজসজ্জা করিয়া যাওয়াটা খুবই লজ্জার কথা। পাচ জনে কিছু না বলুক, নিজের একটা বিবেচনা আছে ত ! সোৎসাহে শয্যার উপর উঠিয়া বসিয়া তিনি বলিলেন, 'কাপড়গুলো এ-ঘরে নিয়ে আয়ত, মা। দেখি ওর মধ্যে ছেড়াখোড়া না-হয়, ব্লাউজের মিল থাকে—’ 8 ছেড়াও নহে, ব্লাউজের মিলও আছে—এমন কাপড় थांन-छूझे भिजिज ।। " to হনয়নী স্বামীকে বলিলেন, একখানা গাড়ী ভাড়া করে তুমিই না-হয় আমাকে রেখে এস সেখানে। স্বধ ब्रश्ल, এ-গরটে দিন সে চালিয়ে নেবেখন। একটু থামিয়া কণ্ঠস্বর নামাইয়া বলিলেন, সেখানকার ভাবগতিক দেখি, স্বধার বিয়ে বলে অন্তত শ-খানেক টাকা যদি নিতে পারি।’ স্বামী বলিলেন, ট্যাক্সিই ডাকি তাহলে ? স্বনয়নী তাড়াতাড়ি কহিলেন, ‘না, না, ঘোড়ার গাড়ীই ভাল। সে বড়লোকের কাওকারখানা, কোথায় কে তার ঠিক নেই ; ভাড়া যদি তারা দিতে না আসে তখন সেটা পড়বে আমাদেরই কাধে ? বুদ্ধিমতী স্থনয়নীর কথাই ঠিক ठ्ठङ्ग्रेज । প্রকাও বাড়ীর প্রকাও দেউড়িতে জনকয়েক দারোয়ান জটলা করিতেছিল, এ-বাড়ীর ছেলেদের কাহাকেও দেখা গেল না। অবশু, ছেলেদের কাহাকেও দেখিলেই তাহারী বে এই বাড়ীরই তাহ মুনয়নী বলিতে পারিতেন না; তবে পরিচয়ের খেই কতকটা হয়ত ধরিতে পারিতেন। কেহ অভ্যর্থনা করিতে আসিল না দেখিয়া স্বনয়নী গায়ের দশ বৎসরের পুরাতন সিত্ত্বের চাদরখানার একাংশ মাথায়