পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন এবং একসঙ্গেই কৌতুহলভরা বিচিত্র কণ্ঠের কলরব ভূলিল। মুনয়নী আর নিজেকে সামলাইতে পারিলেন না। সহজ উত্তরটা তাহার পক্ষে এমনই শক্ত হইয়া উঠিল ষে, কোন কথা না বলিয়া তিনি সেই মেঝের উপরই বসিয়া পড়িলেন এবং ধীরে ধীরে চক্ষু মুদিলেন। wსა * - যখন চক্ষু চাহিলেন, তখন পরিচয়ের পরম লগ্ন বহিয়া গিাছে। সে-চক্ষুতে বিস্ময় ছিল প্রচুর, জল ছিল না এতটুকু, এবং শু্যামবর্ণের সেই বধূটি—যাহাকে একতলায় সৰ্ব্বপ্রথম দেখিয়াছিলেন– একথানা সোফার উপর বসিয়া তাহার দিকে চোখ রাখিয়া পাশ্ববৰ্ত্তিনীদের পানে চাহিয়া হাদি হাসিয়া কথা বলিতেছেন দেখিয়া স্থনয়নীর বুঝিতে বাকী রহিল না, কি সাংঘাতিক ভুলই তিনি করিয়াছেন। গরীবের শোকপ্রকাশের ভঙ্গী তার বড়লোকের শোক প্রকাশের শোভা দুইয়ে আকাশ-পাতাল প্রভেদ। গরীবের যেখানে দৈন্ত, বড়লোকের সেইখানে মৰ্য্যাদা। গরীবের হাসির অশোভনতা আর বড়লোকের হাসির শালীনতা—প্রকাণ্ড হলে যেমন মাটির প্রদীপ আর বিদ্যুৎ-বাতি। একই জিনিষ ক্ষেত্র-হিসাবে মানায় ভাল। স্বতরাং না কাদিয়াও ক্ষীণকণ্ঠে পরিচয় দিতে হইল, অবই, যতটা পারিলেন করুণ রসের খাদটা মিশাইয়া দিলেন।

    • -****

আর মা, আমরা বুড়ো-হাবড়া—আমরা রইলাম পড়ে, ভাগ্যিমানী এয়োরাণী রমু আমার ড্যাংডেঙিয়ে চলে গেল! পোড়া যমের কি আক্কেলও নেই, মা। বড় বোন থাকতে ছোট বোনকে টেনে নেয় । আহা ! রমু আমার দিদি বলতে অজ্ঞান—’ - পাশের একটি সৌন্দৰ্য্যময়ী মেয়ে বলিল, “আপনাকে ত জামরা দেখি নি কোন দিন—এ বাড়ীতে । স্বনয়নী শুষ্ক চক্ষে অঞ্চলাগ্র ঘষিতে ঘষিতে উত্তর দিলেন, দেখবে কি, মা ! এ-পোড়ামুখ দেখাবার মত ত নয়, আমি অভাগী—’ কথাটা শেষ হইতে পাইল না। চারি দিকে চাপ ও সকৌতুক হাস্যধ্বনি উঠিল, থভমত খাইয়া মুনয়নী থামিলেন, 2 স্বনয়নীর মৃত্যু \ W o — “ጓግን এমন কি অসংলগ্ন কথা তিনি বলিয়াছেন যাহাতে কৌতুকের স্বষ্টি হইতে পারে ! সেই মেয়েটি পুনরায় প্রশ্ন করিল, “আপনি তার কে হন ? বোন বলছেন, কিন্তু তার কোন বোন ছিল বলে ত আমরা শুনি নি ? স্বনয়নী তাড়াতাড়ি বলিলেন, বোন। তা আপন বোনেও—* - বাধা দিয়া মেয়েটি বলিল, তার খুড়ো কি জ্যেঠা ছিল বলে ত শুনিনি তার মুখে !" স্বনয়নী একটু থামিয়া বলিলেন, “আপন খুড়ো ত নয়, দূর-সম্পর্কের—’ ‘বুঝেছি। বলিয়া মেয়েটি হাসিল। স্থনয়নী তাহার হাসি লক্ষ্য না করিয়াই বলিয়া চলিলেন, ‘আমার দুঃখ রমু বুঝত, তাই মাসে মাসে তার বোনঝির পড়বার জন্য পাচটা ক'রে টাকা পাঠাত। এমন गडौंলক্ষ্মী দয়াবতী বোন—তাকে কি ষম— । কিন্তু করুণ রস জমাইবার অবসর না দিয়া হ্যামবর্ণ বউটি মেয়েটির পানে চাহিয়া মুহম্বরে বলিল, ঠাকুরঝি ‘রমু আমার খুড়তুত আর জালাস নে, খাতাখানা খোল দেখি । কি নাম আপনার ? মুনমুনী ক্রমশঃই নিস্তেজ হইয়া আসিতেছিলেন । ইহারা ক্ৰন্দনের অর্থ বুঝিতে চাহে না, সম্পর্কের খুঁটিনাটি বিচার করে। প্রচণ্ড শোককে সম্মুখে লইয়া মানুষ এমন প্রাণখোলা হাসিই বা হাসে কি করিয়া ? শাশুড়ী বউয়ের কাছে বালাই হইতে পারেন, মেয়ের মনে মমতার লেশ মাত্রও কি নাই ! মেয়েটি খাতার পাতা উন্টাইতে উন্টাইতে জিজ্ঞাসা করিল, “কি নাম আপনার বলুন না ? স্বনয়নীর চিন্তাস্বত্র ছিড়িয়া গেল, ত্রস্তে বলিলেন, শ্ৰেীমতী মুনয়নী দেবী । খস খস শব্দে খাতার পাতা উন্টাইতে উন্টাইতে মেয়েটি পুনরায় প্রশ্ন করিলেন, টাকা কি বরাবর আপনার নামেই যেত ? ‘ई, भाँ ।’ ‘এই যে। ৭০১ বি...লেন, স্থনয়নী দেবী।