পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳԵ-Տ প্রৰণসী ১৩৪৪ বিস্ময়ের কোনও কারণ নাই। আমরা রামচরিতে ও সমসাময়িক তাম্রশাসনে যে বিবরণ পাইতেছি, তাহা এই কল্পিত ঘটনাপরম্পরার সহিত অবিকল মিলিয়া যাইতেছে। মহীপাল সামন্তবিদ্রোহে পরাজিত হইয়াও বোধ হয় কিছু কাল জীবিত ছিলেন। সম্ভবতঃ দিব্যের উত্তরাধিকারী ভীম কর্তৃক তিনি নিহত হইয়াছিলেন। মহীপালের মৃত্যুর পর তাহার দুই ভ্রাতা শূরপাল ( অথবা স্বরপাল ) ও রামপাল পর পর রাজপদে অধিষ্ঠিত হইয়াছিলেন, ইহা মদনপালের মনহলি লিপির উক্তি। কিন্তু বৈদ্যদেবের কমেলি লিপিতে ও রামচরিতে শূৰ্বপালের রাজত্বের উল্লেখ না থাকায় মনে হয় তিনি স্বল্পকাল বরেন্দ্রীর বাহিরে কোন প্রদেশে রাজপদ ভোগ করিয়াছিলেন এবং তাহাতে বিশেষ কোনও সাফল্য লাভ করিতে পারেন নাই। পূৰ্ব্বোক্ত মনহলি লিপিতে কথিত হইয়াছে সত্য, তিনি ইন্দ্র ও স্কন্দের তুল্য ছিলেন, তিনি সাহসী ও নীতিজ্ঞ ছিলেন, তাহার সর্ববিধ অস্ত্রশস্ত্রের প্রাচুর্ঘ্য স্বাভাবিকবিভ্ৰমাতিশয্যশালী শক্রর হৃদয়ে ত্রাস সঞ্চার করিয়াছিল। কিন্তু তথাপি যুদ্ধে তাহার জয়লাভের কোনও কথা বর্ণিত হয় নাই। বোধ হয় তিনি নিজে সাহস ও শৌর্য্যগুণে মণ্ডিত হইয়াও এবং যুদ্ধের প্রচুর উপকরণে সজ্জিত হইয়াও বিশাল শক্রবাহিনীর বিরুদ্ধে কোনও সাফল্য অর্জন করিতে পারেন নাই। শূরপালের পর রামপাল রাজপদে বসিয়াও প্রথমে কিরূপে হতাশ হইয়াছিলেন তাহ রামচরিতের দুইটি শ্লোকে ( ১৪ ° ও ১৪১ ) স্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট হইয়াছে । কবি বলিতেছেন, রামপাল তাহার ভুজযুগলকে বিফল ধারণ করিয়াছিলেন এবং স্বত ও ইষ্টতম মিত্র কর্তৃক পরিবৃত হইয়াও নিজ শৌৰ্য্যকে বৃথা বলিয়া পরিকল্পনা করিয়াছিলেন। তিনি তাহার অভীষ্টভূমি বরেন্দ্রী হইতে বিযুক্ত হওয়ায় রাজপদকেও তুচ্ছ জ্ঞান করিয়াছিলেন। অনুমান হয়, যে সামন্তচক্রের সহিত সংঘর্ষে মহীপালের রাজ্য চূৰ্ণবিচূর্ণ হইয় গিয়াছিল, তাহাদের বন্ধন তখনও অটুট ছিল। অতঃপর রামপাল পুত্র ও অমাত্যের সহিত মন্ত্রণা করিয়া উহার কৰ্ত্তব্য স্থির করিলেন। তিনি বহু ক্লেশ স্বীকার করিয়া অটবীয় সামন্ত ও অন্যান্য রাজগণের অধিকৃত স্থান পৰ্য্যটন করিলেন এবং পরিশেষে তাহার অনুকূল এক সামন্তচক্র to গঠন করিলেন। সামন্তগণ র্তাহার নিকট ভূমি ও গ্রন্থ অর্থলাভে পরিতুষ্ট হইলেন। মহীপালের অনীতিক আচরবশতঃ সামস্তগণ বিদ্রোহী হইয় তাহার পর সাক্ষ করিয়াছিলেন। এক্ষণে রামপাল ও র্তাহার লি রাজনীতিকুশলতায় তাহার রাজার পক্ষভুক্ত হইলেন এর পালরাজলক্ষ্মীর কেন্দ্র বরেন্দ্রীদেশের পুনরুদ্ধারে তাহার প্রধান সহায় হইলেন । আমাদের অনুমান গ্রহণ করিবার পক্ষে আর একটু যুক্তি এই, ইহার দ্বারা সহজে বুঝা যায় কি কারণে পালবন্মে এত দ্রুত অধঃপতন সংঘটিত হইল। বরেন্দ্রীর উদ্ধারের গন্ন আপাতদৃষ্টিতে পালবংশের পূর্ব গৌরব ফিরিয়া আমিন। রামপাল চন্দ্রবংশীয় রাজাকে আশ্রয়দান করিলেন এবং মাতুল মথনের সহায়তায় কামরূপ ও অন্যান্ত দেশ জা করিলেন। প্রাচ্যদেশেও বৰ্ম্মবংশীয় রাজা উৎকৃষ্ট হস্তী ও রথ দানে তাহাকে সম্বৰ্দ্ধিত করিলেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই সাফল্য নিৰ্ব্বাণের পূৰ্ব্বে দীপশিখার অস্বাভালি উজ্জলতা ব্যতীত আর কিছুই নহে। মহীপালের বিমৰ জয়লাভ করিয়া সামস্তবর্গ তাহাদের অধিকার বুদ্ধির মন্ত্ৰসুযোগ পাইয়াছিলেন, বলাই বাহুল্য। ইহার পর যখন র্তাহাদের সহায়তায় রামপাল ভীমের ধবংস সাধন করিলেন, তখন বাঙ্গালা এক সামন্তপ্রধান রাজ্যে পরিণত হইল, ইং সহজেই অনুমেয়। এই জন্যই পৈতৃক রাজ্যে পালনৃপতিদিগের অধিকার স্থায়ী হইল না। রামপাল সামন্তরাঞ্জজিনের সহায়তায় জনকভূ:র উদ্ধারসাধন করিলেন ত্য, কিন্তু তাহার কনিষ্ঠ পুত্র মদনপালের অষ্টম রাজ্যাঙ্কের এক রাম চরিত কাব্য রচনার কিয়ৎকাল পরে উক্ত ভূমি রsে সামন্তবংশোদ্ভূত বিজয়সেনের কবলিত হইল। রামপাল দিব্যবংশের উচ্ছেদসাধনে যে শাণিত অস্ত্র প্রয়োগ করিলেন, তাহাই তাহার সস্তানের পক্ষে কালস্বরূপ হইল। এক্ষণে দিব্যকর্তৃক বরেন্দ্রীগ্রহণের রহস্য উদঘাটিত করিবার চেষ্টা করা যাউক । যখন মহীপাল তাহার ভীত, ত্রস্ত ও পলায়মান সৈন্য লইয়া অনন্ত সামস্তচক্রের বিশাল বাহিনীর সহিত সমরে নিমজ্জিত হইলেন, তখন দিব | উহাতে যোগদান করিয়াছিলেন, এরূপ প্রমাণ নাই। । সামস্তচক্রের বিদ্রোহ ও দিব্যকৃত বরেন্দ্রীগ্রহণ দুইটি স্বতন্ত্র