পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- নবনারীসমাজে নিবেদন ঐবিজয়চন্দ্র মজুমদার * নারীজাতির গৌরব বাড়াইবার দিকে নানা উদ্যোগ চলিতেছে ; এ-সংবাদ কয়েকখানি পত্রিকায় পড়িয়াছি, স্বার বিশেষভাবে লোকমুখে শুনিয়াছি,—নিজে দেখিয়া জানিবার সুবিধা আমার নাই। সমাজে নারীদের বিস্তৃত অধিকার দেওয়ার পক্ষে আগে পুরুষেরাই চেষ্টা করিতেন, আর পুরুষ অভিভাবকদের নির্দেশে ও উৎসাহে নারীরা নূতন পথে চলিতেন। শুনিতে পাই—এখন অনেক তরুণ বয়সের নারীরা স্বেচ্ছায় ‘সনাতন প্রথার পর্দা ও গোটাকতক তি ছাড়িতেছেন, পুরুষদের আশ্রয় না লইয়া প্রয়োজনে নানা স্থানে যাইতেছেন, উচ্চতম শিক্ষা পাইবার উদ্যোগে নিজেরাই শিক্ষাশালা বাছিয়া লইতেছেন, আর দশের কাজের অনেক প্রতিষ্ঠানে আপনাদের রুচি অনুসারে পুরুষদের সঙ্গে কমক্ষেত্রে জুটিতেছেন। যাহারা এইরূপে আপনাদের ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় অগ্রসর, আমার এই নিবেদনটুকু তাহাদেরই কাছে। সারা বিশ্বের প্রকৃতির মধ্যে আছে এই নির্দেশের ইঙ্গিত ও তাড়না—আছে আমাদের শরীর-মনের উপাদানের মধ্যে এই নির্দেশের ইঙ্গিত ও তাড়না, আমরা আমাদের অসীম বিকাশের সম্ভাবনার দিকে এই টানের জোরে সকল বাধা পরাভূত করিয়া অবিরাম ছুটিয়া চলিব । আমরা প্রতিজনে ব্যক্তিত্বের বিশিষ্টতা ফুটাইব, প্রতি জীবনের গৌরবরক্ষায় কোন গোলামিতে ঘাড় না পাতিয়া সাত্মসম্মান অক্ষুণ্ণ রাখিব আর ষে আইন বা বিধান প্রকৃতির ষ্ঠাতে অঁাতে অচ্ছেদ্যরূপে গাথা আছে, তাহার সঙ্গে জীবনের গতি মিলাইয়া প্রফুল্ল মনে বাড়িয়া উঠিব—ইহাই প্রকৃতির আদেশ ও তাড়না ; আর সেই তাড়নার - অনুসরণকেই বলি স্বাধীনতার অনুসরণ । এই স্বাধীনতার পথে বা লক্ষ্যে চলিতে হইলে যে-সকল ছোটখাট কাজ অবহু করা চাই, তাহার মধ্যে এই রকমের কাজগুলি পড়ে, যথা—পর্দা এড়াইয়া বাহিরের বাতাসে আসা, সাহস বাড়াইয়া চলাফের, যথাসাধ্য জ্ঞানবৃদ্ধির দিকে উদ্যোগ করা, ইত্যাদি। উদ্যোগের ছোটখাট পাদবিক্ষেপের দৃষ্টাস্তে জ্ঞানলাভের উদ্যোগের দৃষ্টাস্ত দিয়াছি ; হয়ত সেইটি অনেকের মনের মত না হইতে পারে। কিন্তু তাহারা যদি মনে রাখেন ষে শত উদ্যোগ করিলেও সকলের পক্ষে সকলের ভাগ্যে বহু জ্ঞান সঞ্চয়ের স্থবিধা হয় না, আর পত্তিত না হইলেও মাহুষ নিজের কতব্য পালন করিয়া সমানে স্বাধীনতার পথে চলিতে পারে, তবে স্বাধীনতার পথে চলিবার এই যে ছোট ছোট পদক্ষেপের কথা বলিয়াছি—উহাদের মূল্য লক্ষ্যপথের অাদর্শের বিচারে এক কড়ী-ছকড়া বই নয়। স্বীকার করি, যুখন জীবনের ছোটখাট কতব্য গুরুবুদ্ধিতে পালনীয়, তখন খুব কড়া হইয়া কড়-ক্রান্তির হিসাব রাখিতে হইবে ; তবে সাবধান— আমরা যেন না-হই কড়ায় কড়া আর কাহনে কানী ৷ যাহাদের কাছে আমার এই নিবেদন, তাহাদের থাটি স্বাধীনতালাভের সঙ্কল্প যখন পাক, তখন নিৰ্ভয়ে দেখাইয়া দেওয়া চলে যে অনেক সময়ে প্রাচীন কুসংস্কার প্রচ্ছন্ন পাপের মত অতকিতে মানুষকে গোলামির জালে জড়াইয়া দিতে পারে, অথবা প্রাচীন সংস্কারজনিত ভাবের মোহ মনের তলায় ফন্তুধারার মত স্বাধীনতার বিরোধী পথে টানিতে পারে। এ-সম্পর্কে সনাতন নিয়মের বিবাহবন্ধনের প্রথা খুব উপযোগী দৃষ্টান্ত। যাহার বিবাহ করবেন না—আপনাতে প্রতিষ্ঠিত থাকিয়াই পুণ্যের গৌরবে জীবনের কাজ চালাইবেন, তাহদের পক্ষে এই বিবাহের দৃষ্টাস্ত খাটিবে না। বিবাহে জীবনের স্বত্ব ও অধিকার (status) প্রভৃতি বদলায়। আর সনাতন প্রথায় ব্রাহ্মণ্য-বিধানের বিবাহে জীবনের মৌলিক স্বাধীনতা অনেকখানি হারাইয়া গোলানির বাধন বরণ করিয়া লইতে হয় ; কেন-ন, আইনের বিধানে বাধ্য হইতেই হইবে মে–পুরুষ ইচ্ছা করিলেই অন্ত বিবাহ للـ