পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

syJ. ञांश्विन প্রচলিত দণ্ডনীতি জ্য। জেলখানায় মনুষ্যত্বের আদর্শ বর্বরের দ্বারা কানে ধরে লাথি মারতে পারত না। ঐ কনসটেবল নিষেধ প্রতিদিন পীড়িত হচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। করেছিল ফেরিওয়ালাকে, লাথি মেরেছিল সমস্ত জাতকে । সমাজের দুষ্ট প্রবৃত্তি শোধনের কতব্যতা অনেক অবজ্ঞাভাজন জাতির মানুষ কেবল যে অপমান ভোগ করে বেশি অতিক্রম করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করবার বর্বর ধর্ম যদি জেলখানা আশ্রয় করে না থাকৃত তা হোলে ওখান থেকে দণ্ডবিধির ছবিষহ উগ্রতা লজ্জিত হয়ে চলে দেত। পাপকে সমাজের যে-কোনো জায়গাতেই ছোটো বড়ো যে কোনো আকারেই প্রশ্রয় দেওয়া যায় তলে তলে লে আপন সীমা বাড়িয়ে চলতে থাকে। তারই কুৎসিত ষ্টিান্ত দেখতে পাই আধুনিক যুরোপে । সেখানে সভ্যনামধারী বড় বড় দেশে শাস্তিদানের দানবিক দন্তবিকাশ নিমৰ্ম ম্পর্ধার সঙ্গে সর্বত্র সভ্যতাকে যে রকম বিন্দ্রপ করতে উদ্যত হয়েছে তার মূল রয়েছে সকল দেশের সব জেলধানাতেই। অনেক কাল থেকে অনেক খরচ করে সন্তানকে মানুষের রক্ত খাইয়ে পুষে রাখবার জন্যে বড়ো दाप्न পিয়র রাখা হয়েছে। হিংস্রতার ঠগিধম-উপাসক ফাসিজমের জন্মভূমিই হচ্ছে সভ্যতার আত্মবিরোধী এই সব জেলখানায়। এই সব শাসনকেন্দ্র আপন আশেপাশে মনুষ্যত্বের কী রকম বিকৃতি ঘটাতে থাকে তার একটা দৃষ্টান্ত অনেক দিন পরে অামি আজো ভুলতে পারি নি। চীনযাত্রাকালে আমাদের জাহাজ পৌছল হংকং বন্দরে। জাহাজের ডেকে লড়িয়ে দেখলুম এক জন চীনা ফেরিওয়াল জাহাজের যাত্রীদের কাছে পণ্য বিক্রি করবার চেষ্টায় তীরে এসেছিল। তাদের নিষেধ করবার নিয়ম হতো ছিল। সেই কতব্য পালনের উপলক্ষে দেখলুম আমাদের স্বদেশীয় শিখ কনস্টেবল তার বেণী ধরে টেনে অনায়াসে তাকে লাথি মারলে। রুঢ়তা করার দ্বারা ঔদ্ধত্যের যে আনন্দ আদিম অসংস্কৃত বুদ্ধির মধ্যে প্রচ্ছন্ন থাকে দণ্ডনীতির অসভ্যতাই তাকে অবারিত করবার সুযোগ দেয় । মনে মনে কল্পনা করলুম এক জন যুরোপীয়—সে ফেরিওয়ালা নয়, হয়তো সে চোর, সে প্রতারক, সে দুবৃত্ত, —তাকে ঐ শিখ কনসটেবল গ্রেফতার করত, কতব্যের অনুরোধে মাথায় এক ঘা লাঠিও বসাতে পারত কিন্তু তাকে তা নয়, সহজেই তার সম্বন্ধে দণ্ডের কঠোরতা প্রবল হয়ে ওঠে। হয় যে তার কারণ মানুষের গুঢ় দুপ্রবৃত্তি এই সকল ক্ষেত্রে বর্বরতার রসসম্ভোগের স্বযোগ পায় । বেণী ধরে টেনে লাথি মারতে যারা অকুষ্ঠিত সেই শ্রেণীয় রাজাল্পচর এদেশে নিঃসন্দেহ অনেক আছে। যে কারণে চীনে তাদের দেখেছি সেই কারণ এখানেও প্রবল। সেই অবজ্ঞা এবং তার আনুষঙ্গিক নিষ্ঠুরতা স্থায়ীভাবে এদেশের আবহাওয়াকে ব্যাধিগ্রস্ত করেছে একথা আমরা অনুভব করি। এই প্রসঙ্গে আর এক দিনের কথা আমি বলব। তখন শিলাইদহে ছিলুম। সেখানকার জেলেদের আমি ভালোরকম করেই জানতুম। তাদের জীবিকা জলের উপর। ডাঙার অধিকার যেমন পাকা, জলের অধিকার তেমন নয়। জলের মালেকরা তাদের উপর যেমন তেমন অত্যাচার করতে পারত –এই হিসাবে চাষীদের চেয়েও জেলেরা অসহায় ও একবার জলকরের কতার কমচারী এসে অনধিকারে কোনো নৌকা থেকে প্রচুর পরিমাণে মাছ তুলে নিল নিজের ডিঙিতে। এ রকম ঘটনা সর্বদাই ঘটত। অন্যায় সহ করে যাওয়াই যার পক্ষে বাঁচবারসহজ উপায় এইবার সে সইতে পারল না, দিলে সেই কমচারীর কান কেটে । তার পরে রাত্রি তখন দু'পহর হবে, জেলেদের কাছ থেকে আমার বোটে লোক এল,বললে, সমস্ত জেলেপাড়ায় পুলিস লেগেছে । বললে, কঠোর আচরণ থেকে আমাদের মেয়েদের ছেলেদের রক্ষা করুন। তখনি একটি ভদ্রলোককে পাঠিয়ে দিলুম। সরকারী কাজে বাধা দেবার জন্যে নয় কেবল উপস্থিত থাকবার জন্যে। তার অন্ত শক্তি নেই, কিন্তু ভদ্রব্যবহারের আদর্শ আছে। উপস্থিতি দ্বারা সেই আদর্শকে প্রকাশ করেই অন্যায়ের সে প্রতিবাদ করতে পারবে । আমাদের দেশের কারাবাসীদের সম্বন্ধেও তার বেশি

  • এইরূপ অত্যাচার চাদপুরে কিছুদিন পূৰ্ব্বে হইয়াছে।

—প্রবাসী-সম্পাদক