পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অণশ্বিন পঞ্চশস্য ち〜SS স দু-চক্ষে দেখিতে পারিত না । যত ছোটই হউক না কেন | | | কুকুর-ছান। খাচার মধ্যে দেওয়ামাত্রই সে ক্রোধে উত্তেজিত হইয়৷ খাচার চতুর্দিকে ঘুরিয়া ঘুরিয়া ফোস ফোস শব্দ করিতে থাকিত । কিন্তু বানর দেখিলে সে লোভ সম্বরণ করিতে পারিত না । অনেক সাপেদ স্বজাতিভুক বলিয়া একটা হুনাম শোনা যায়। অজগরদের ভিতর কখন কখন এই অদ্ভুত স্বভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। সাইমন একবার তাহার ভাই বেঞ্জামিনকে গিলিয়া এরূপ একটা অদ্ভুত স্বজাতিদেহ-ভক্ষণের দৃষ্টান্ত দেখাইয়াছিল। তবে ব্যাপারটা যে নেহাৎ ভুলক্রমে ঘটিয়াছিল তাহ নিঃসন্দেহ । ঘটনাটা এই—আমি বেঞ্জামিনকে একটা খরগোস দিয়াছিলাম— তাহার অভ্যস্ত প্রথামত সে সেটাকে মাথা হইতে গিলিতে স্বরু করিয়াছিল। অন্য কাজ থাকাতে প্রায় মিনিট পনর পর ফিরিয়৷ আদিয়া দেখি—কি ভীষণ কাণ্ড ! সাইমন তো সর্বনাশ করিয়াছে। সাইমন বেঞ্জামিনকে প্রায় সম্পূর্ণ গিলিয়া ফেলিয়াছে ! বেঞ্জামিনের প্রায় ছয় ইঞ্চি পরিমাণ লেজমাত্র সাইমনের মুখের বাহিরে রহিয়াছে। আমি দাড়াইয়। দাড়াইয় দেখিতে লাগিলাম, কারণ সেই সময়ে বাধা দিয়া কোনই ফল হইত না । সাইমনের অবস্থা দেখিয়া বোধ হইল—কোথাও কিছু গলদ চইয়াছে ইহা যেন সে বুঝিতে পারিয়াছে, কারণ এমন একটা খরগোস তে কখনও তাহার নজরে পড়ে নাই যাহা গিলিতে তাহার এত সময় লাগিতে পারে। হয়ত সে তাহার বন্ধু বেঞ্জামিনকে মোটেই লক্ষ্য করে নাই । যাহা হউক, সে তাহার শরীরের পিছন দিক হইতে সম্মুখের দিকে ভূক্ত দ্রব্য উদগীর্ণ করিবার মত এক প্রকার অদ্ভূত প্রক্রিয়া করিতে করিতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেঞ্জামিনকে পুনরায় উদরের মধ্য হইতে বাহির করিয়া ফেলিল । বেঞ্জামিনও সাইমনের উদর হইতে বহির্গত হইয় যেন কিছুই হয় নাই এই ভাবেই চলাফেরা করিতে লাগিল । কেমন করিয়া এরূপ ঘটনা ঘটিল তাহ অতি পরিষ্কার । যেই বেঞ্জামিন গরগোদটিকে সামান্ত একটু গিলিয়াছে ঠিক সেই সময়ে সাইমন আদিয়া অন্য কোন দিক লক্ষ্য না করিয়াই খরগোসটার পিছন দিক হইতে গিলিতে সুরু করে, এবং অতিরিক্ত তাড়াহুড়া করিয়া গিলিবার ফলে বেঞ্জামিনের মুখশুদ্ধ তাহার পেটের ভিতর কিয় পড়ে। তখন ধীরে ধীরে বেঞ্জামিনের সমস্ত শরীরটাই সাইমনের উদরের মধ্যে প্রবেশ করিতে থাকে। অবরুদ্ধ স্থানে থাকিলেও সাপের সহজে শ্বাসরুদ্ধ হইয়া মারা যায় না—জলের নীচেও তাই তাহার। অনেকক্ষণ ডুবিয়া কিতে পারে। এই জন্যই বোধ হয় সাইমনের পেটের মধ্যে এ তক্ষণ থাকিয়াও বেঞ্জামিন কোন অস্বস্তি অনুভব করে নাই । তার পর জ্বালা-যন্ত্রণার বিষয়ে ইহারা যেন অনেকট। বোধশক্তিরহিত । এমন ঘটনার কথাও শুনা গিয়াছে যে ইদুরে এক-একটা জলজ্যান্ত সাপের কোন কোন স্থল হইতে মাংস খাইয়। ভিতরের পাজরা বাহির করিয়া ফেলিয়াছে—তথাপি তাহদের লেশমাত্র অস্বস্তি বা যন্ত্রণার কোন লক্ষণ দেখিতে পাওয়া যায় নাই । শিকারকে হত্যা করিবার জন্য সাপের বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করিয়া থাকে। অনেকে আবার শিকারকে হত্যা করে না ; গিলিবার সময়ই শিকারের পঞ্চভূপ্রাপ্তি ঘটে। পাইথনদের শিকার ধরিবার কায়দার মধ্যেও বেশ বিশেষত্ব দেখিতে পাওয়া যায়। দূরে শিকার দেখিতে পাইলেই সে চুপ করিয়া পড়িয়া থাকে এবং শিকার কাছে না-আসা পৰ্য্যন্ত সতর্ক দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকে । শিকার কাছে আসিবামাত্রই হঠাৎ শিকারীর জিব অতি দ্রুত কম্পিত হইতে থাকে। এসব লক্ষণ দেখিলেই বুঝিতে পারা যায় যে, এখনই ছুটয় পড়িয়া সে শিকারকে আক্রমণ করিবে । মাথাটা যেন তাঁরবেগে ছুটয়া গিয়া ছোবল মারে ও দাতে কামড়াইয়া ধরে, আর সঙ্গে সঙ্গে কুণ্ডলী পাকাইয়া যায়। এই সমস্ত ব্যাপার চক্ষের নিমেষে ঘটিয়া থাকে । শিকারের গল। অথবা বুকের উপর লেজ জড়াইয়৷ এমন ভাবে চাপ দেয় যে মুহূৰ্ত্তের মধ্যেই সে শ্বাসরুদ্ধ হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হয়। পরিণতবয়স্ক পাইথনের শিকার প্রভৃতি ধরিবার সময় যেরূপ করে, বাচ্চাপাইথনেরাও ঠিক সেইরূপই করিয়া থাকে। বাল্যাবস্থায় অজগরের কখনও প্রচুর পরিমাণে খায়, আবার কখনও বা অনেক দিন পর্য্যন্ত উপবাস করিতে বাধ্য হয়। সাধারণতঃ দশ ফুট লম্বা