পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਾਂ মৃণাল হাসিয়া বলিল, “কিছু দরকার নেই মামীম। এই ত পেট ভরে খেলাম, আর বিকেলবেলায়ই ত পৌছে দাব, আবার কখন খাব ? আমি ত আর টিনি নয় যে আধ বট অন্তর না খেলে মারা যাব ?” মল্লিক-মহাশয় চাদর গায়ে-দিয়া বাহির হইয়া আসিলেন, তিনি ভাগ্নিকে ট্রেনে তুলিয়া দিয়া আসিবেন । ষ্টেশন ৰাষ্টারের এক বোন এই ট্রেনে কলিকাতা যাইতেছেন, কাজেই ষ্টেশন পর্য্যস্ত পৌছাইয়া দিলেই তিনি নিশ্চিন্ত । মামামাকে প্রণাম করিয়া, ভাইবোনদের আদর করিয়া iাল গাড়ীতে উঠিয়া বসিল । মুখটা অন্য দিকে ফিরাইয়৷ রাখিল, যাহাতে চোখের জল কেহ না দেখিতে পায়। পদর বৎসর বয়স ছাড়াইয়া গেল, এখনও প্রতি ছুটির শেষে বোর্ডিঙে ফিরিতে তাহার দুই চোখ জলে ভরিয়া উঠে। চিনি ডাকিয়া বলিল, “এবার আসবার সময় ভাল দেখে বেণী করে চকোলেট নিয়ে এস।” , , তাহার মা তাড়া দিয়া বলিলেন, “হ্যা, তা আর নয়, দিদি একেবারে টাকার ছালার উপর বসে আছে, তোমাদের জন্যে বাক্স ভরে মিষ্টি নিয়ে আসবে।” গ্রাম্য পথে ধূলা উড়াইয় গরুর গাড়ী চলিতে লাগিল। মৃণাল খানিকক্ষণ মুখ ফিরাইয়া লইল, তাহার পর জোর করিয়া আত্মসম্বরণ করিয়া চোখ মুছিয়া ফেলিল। বাড়ীর দিকে তাকাইয়া দেখিল, মামীম তখনও কাল্পকে কোলে করিয়া বাহিরের দাওয়ায় দাড়াইয়া আছেন। চিনি-টিনি অদৃপ্ত হইয়া গিয়াছে। দু-ধারে অতি-পরিচিত খড়ের ঘরগুলি, আঙ্গিনায় লিমলিন-দেহ বালকবালিকার - মৃত্য, ছোট সঙ্গীতমুখর নদীটি, সব একে একে পার হইয়া গেল। ছোট গ্রাম্য বাজারের ভিতর দিয়া এখন গাড়ী চলিতেছে। দুই ধারের পধিক উৎসুক-দৃষ্টিতে, গহিয়া দেখিতেছে গাড়ীর ভিতর কে যায়। সকলের আসা-যাওয় সম্বন্ধে এখানে সকলের কৌতূহল, পল্লীসমাজ যেন একটি বৃহৎ পরিবার, কেহ কাহারও অচেনা, অজানা নয় । ক্রমে গাড়ী আসিয়া ষ্টেশনের বাহিরে দাড়াইল । একটি লাল পাথরের ঘর, একটা টিনের শেড, আর লাল কাকর-বিছানো প্রকা, প্ল্যাটফৰ্ম্ম । গোটা-দুই বড় বড় F-ا-مه مهند মণটির বাসা わ〜ー、● অশ্বখ গাছ চারিদিকে ডালপালা ছড়াইয়া অনেকখানি জায়গা ছায়াশীতল করিয়া রাথিয়াছে, তাহারই তলায় যাত্রীর দল আডিডা গাড়িয়াছে। এক জায়গায় একখানি লোহার বেঞ্চ, ষ্টেশন মাষ্টারের বোন সেইখানে নিজের ছেলেমেয়ে লইয়া বসিয়া আছেন। ঘরের ভিতর বড় গরম, পাথার কোনও ব্যবস্থা নাই, কাজেই পারতপক্ষে সেখানে কেহই বসে না। মৃণালকে দেখিয়া তিনি ডাকিয়া বলিলেন, “এইখানে এস, তবু একটু ছায়া আছে।” মৃণাল আসিয়া তাহার পাশে বসিল। বলিল, “গাড়ী আসতেও ত আর বেশী দেরি নেই।” ভদ্রমহিলা বলিলেন, “এই এসে পড়ল ব'লে । একরাশ পোটলাপুটলি উঠলে বাচি ।” ট্রেন সত্যই আসিয়া পড়িল। মৃণাল মামাবাবুকে প্রণাম করিয়া গাড়ীতে উঠিয়া গেল। এক মিনিট পরেই ট্রেন ছাড়িয়া দিল । 년 F ( 8 ) কলিকাতা পৌছাইতে প্রায় বেলা গড়াইয় গেল। শীত কালের দিন, চারিট বাজিতে-না-বাজিতে যেন দিনের আলো মান হইয়া আসিতে থাকে। তাহার পর নামিয়া আসে নগরের উপর ধোয়ার পর্দা, দুই হাত দূরে মাত্র মানুষের দৃষ্টি চলে, রাস্তার আলোম্বুদ্ধ ঘোলাটে দেখাইতে থাকে। মন মুঘড়িয়া পড়ে, নিঃশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে বুকের ভিতর এক অঞ্জলি করিয়া যেন কয়লার গুড়া ঢুকিয়া যায়। মৃণাল ষ্টেশনে নামিয়া বলিল, “আমি কি আজ আপনাদের সঙ্গেই যাব, না আমাকে বোর্ডিঙে পৌছে দিয়ে আসতে পারবেন ?” তাহার সঙ্গিনীর মৃণালকে বাড়ী পর্যন্ত টানিয়া লইয় যাইবার বিশেষ ইচ্ছা ছিল না। তাহার অতি ছোট বাড়ী, শুইবার ঘর মাত্র একখানি। বাহিরের লোক আসিলেই বিপদে পড়িতে হয়। পুরুষ-অতিথি হইলেও না-হয় ভাইকে যেখানে সেখানে গুইতে দেওয়া যায়, কিন্তু এ 6ধ আবার স্ত্রীলোক ! তিনি একটু অনাবশ্বক ব্যস্ততার সঙ্গেই বলিলেন, “তোমাকে উনি পৌঁছেই দিয়ে আমুন ভাই, আমি থোকার