পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سيNOb سb প্রবাসী ১৩৪৪

  • -

বিখ্যাত সাপ্তাহিক ‘ইডোন” সাহিত্য-প্রতিযোগিতার একটা পুরস্কার ঘোষণা করেন। উক্ত কাগজে বিজ্ঞাপন পড়িয়াই সেলমার মনে হইল যে বাল্যকালে আপন প্রদেশের পূৰ্ব্বপুরুষদের সম্বন্ধে শোনা গল্পগুলি এইবার প্রকাশ করিবার সময় আসিয়াছে। ইহারই ফলে তাহার প্রথম রোমান্স “গোস্তা বেলিং সাগা” বাহির হয়। এই পুস্তক লিথিয়া তিনি ইডোন পত্রিকার সৰ্ব্বোচ্চ পুরস্কার লাভ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তাহার নাম সমস্ত স্থানডিনেভিয়ায় ছড়াইয়া পড়ে। এই রোমান্সের প্রধান নায়ক যুবক “গোস্তা বেলিং—এক জন সরলহদয় সাহসী ধৰ্ম্মযাজক। এই যুবক পুরোহিতের জীবনের উদ্দেশু অস্পষ্ট। নিজের মন যাহা চায়, যাহা করণীয়, একাধিক কারণে তাহা কাৰ্য্যে পরিণত করার শক্তির তাহার অভাব ; ফলে হৃদয় ম্ৰিয়মাণ, অকারণে ক্ষণে ক্ষণে মন উত্তেজিত হইয়া উঠে। এই ভাবে গোলকধাধার মধ্যে জীবনটাকে কাটাইয়া দিতে গোস্তা বেলিং নারাজ। ফলে, মুখের আশায় বন্ধুবান্ধবী-পরিবৃত হইয়া স্বধভোগের মধ্যে আনন্দ খুজিয়া পাইবার নিষ্ফল চেষ্টা। মোরবাঙ্ক হইতে অনতিদূরে ফ্রকেন স্যারণার পরপারে টিলার উপর অবস্থিত মধ্যযুগের প্রাসাদ এক্কেবি’ গোস্ত বেলিং-এর জীবনলীলার প্রধান কেন্দ্র । ফলতঃ শতাব্দীর ভ্যামল্যাণ্ডের সামাজিক জীবন এই পুস্তকে চিত্রিত হইয়াছে। সেলমার আবেগময়ী লেখনী হইতে অনেক গল্প ও উপন্যাস বাহির হইয়াছে এবং সেগুলি বহু ভাষায় অনূদিত হইয়া সমাদর পাইয়াছে। গোস্ত বেলিং-এর পর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ‘জেরুজালেম । ইহার প্রথম অংশ ১৯০১ খ্ৰীষ্টাব্দে ও দ্বিতীয় ংশ পর বৎসরে প্রকাশিত হয়। সুইডেনের ডালান। প্রদেশে একবার ধৰ্ম্মান্দোলনের বন্যা আসিয়াছিল। এই আলোড়ন উক্ত প্রদেশবাসীদিগকে যে কি ভাবে অভিভূত bbrbro করিয়াছিল, তাহাই প্রথম খণ্ডে চিত্রিত হইয়াছে। অনেক লোক পরিবার-পরিজনের কথা না ভাবি ধৰ্ম্মস্থাপকের দেশ প্যালেষ্টাইনে চলিয়া যায় এবং দ্বিতীয় খণ্ডে সেই আখ্যায়িকাই বিবৃত হইয়াছে। এক দিকে লোকের ধৰ্ম্মব্যাকুলতা, অপর দিকে পরিবারবর্গ ও দেশের প্রতি কৰ্ত্তব্যবোধ—মনের এই দ্বন্দ্ব ডালার্ণার ব্যক্তিবিশেষের স্থ দিয়া এমন ভাবে ফুটাইয়াছেন যে যাহারা সেই দেশ ও দেশবাসীদের সঙ্গে পরিচিতও নহেন এমন বিদেশী পাঠকনে মনকেও গভীর ভাবে স্পর্শ করে। স্কনেডিনেভিয়ার প্রাচীন ও আধুনিক লেখক-লেখিকানে সঙ্গে তুলনা করিলে সকলকেই একবাক্যে স্বীকার কয়িত্ব হয় যে সেলমার রচনাভঙ্গী একবারে স্বতন্ত্র রকমের তিনি সত্যই ভ্যামল্যাণ্ড প্রদেশের লেখিকা এবং ষ্ট্রে প্রদেশের প্রকৃতির ও সভ্যতার সম্পদ তাহার সমস্ত জীবন ও কল্পনাকে প্রভাবান্বিত করিয়াছে। অতীত ও বর্তমান মুন ঐতিহাসিক ও অনৈতিহাসিক গল্প, লোকচরিত্র তাহার রচনার প্রধান বিষয়বস্তু । ভ্যামল্যাণ্ডের পোষাকপর নামনায়িকার চরিত্র যেখানে বিশ্বমানবের মানসিক গ্রনতি সঙ্গে এক স্বরে গাথা, সেখানেই সেলমার রচনা ও নর সভ্য হইয়া উঠিয়াছে—বিশ্বাসের অযোগ্য বিষয়ও এমন মূৰ্ত্ত হইয়া উঠিয়াছে যে শেষ পৰ্য্যস্ত সত্যাসত্য বিচারের কৰাৰ পাঠকের মনে স্থান পায় না । সেলমার কল্পনা ও রচন উৎস এখনও প্রবহমান । ১৯০৭ খ্ৰীষ্টাব্দে সুইডেনের উপশাল-বিশ্ববিদ্যালয় অs. দেশের গৌরব সেলমাকে ডক্টর উপাধিতে ভূষিত করেন। ইহার দুই বৎসর পর অর্থাৎ ১৯০৯ খ্ৰীষ্টাব্দে তিনি নোৰে প্রাইজ পান, সঙ্গে সঙ্গে উক্ত প্রাইজ কমিটির সভ্যন, তিনি আমন্ত্রিত হন। তিনি হুইডেনের সাহিত্য-সংসমৰ সৰ্ব্বপ্রথম মহিলা সভ্য ।