পাতা:প্রবাসী আশ্বিন ১৩৪৪ সংখ্যা ৬.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b-33 সে অবশ্য খুব বেশী কিছু চায় না—চাইলে চলবেই বা কেন ? নিশা দেখতে খুব ভাল নয়, লেখাপড়াও বেশী শেখে নি, আর তার জমান টাকাও খুব বেশী নেই। একটি মাত্র বোন, ধার ক'রে ভাল বিয়ে দেওয়া লোকের মতে হয়ত বা উচিত ছিল, কিন্তু সে তাতে রাজী নয়। ধার শোধ দেওয়া মানে আরও বেশ কিছু দিন চাকরি করা— তাই যদি করবে তা হ’লে আর. কাজেই সে চায় এমন কোন ছেলে যার স্বভাব-চরিত্র ভাল, ভদ্রসমাজে মিশবার মত লেখাপড় শিখেছে আর নিজের সংসার চালাবার মত রোজগার করে। তার ধারণা ছিল এ এমন বেশী কিছু নয়, কিন্তু অন্য অনেক কিছুর মতই বিয়ের বাজারের সঙ্গেও পরিচয় তার কমই ছিল। এ রকম ছেলেরও বাজার-দর দেওয়া তার পক্ষে সহজ নয়, তা সে জানত না । কোন কিছু ঠিক করতে না পেরে সিতাংশু বড় বেশী বিব্রত হয়ে পড়েছিল। তার এক আত্মীয় একটি ছেলের সন্ধান দিলেন। ছেলেটি তার এক বন্ধুর । অমন মুন্দর ব্যবহার না কি দেখতে পাওয়া যায় না । আজকালকার দিনে সিগারেটটি পর্য্যন্ত খায় না, বাপের একটিমাত্র ছেলে । তার বাপ থাকেন খুব সাদাসিধে ভাবে কিন্তু বেশ পয়সা আছে। সিভাংশু ভেবে দেখলে, মন্দ নয়। রাজী হ’ল । মেয়ে দেখে তাদের পছন্দও হ’ল, টাকা নিয়েও গোলমাল হ’ল না। ছেলের বাপ মেয়ে দেখে আশীৰ্ব্বাদের দিন ঠিক ক’রে গেলেন। এত সহজে যে সব ঠিক হয়ে যাবে সিতাংশু তা কল্পনাও ক’রে নি। বিয়েটা কোন রকমে দিয়ে দিতে পারলে হয়। আত্মীয়স্বজন সকলকেই বলতে হবে—কেই বা কি করে ? ছেলেকে একবার সে তার আপিসে গিয়ে দেখে এসেছিল, বেশ অমায়িক, লাজুক ছেলে, দেখতেও মন নয় । ঠিক এই রকমটিই সে চাইছিল । এর হাতে নিশা যে সুখী হবে সে-বিষয়ে তার কোন সন্দেহ ছিল না। আসন্ন মুক্তির আশায় সিতাংশু নিঃশ্বাস ফেললে । o 曹 晕 দুপুরবেল সিতাংশু বাড়ী ফিরল খুব শ্রান্ত হয়ে । সোজা নিজের ঘরে যাচ্ছিল কিন্তু নিশা এত বেলা পৰ্য্যন্ত তার জন্যে না থেয়ে বসে আছে মনে হতে তার ঘরের দিকে গেল । তার শরীর ভাল ব’লে মনে হচ্ছিল না, এখনই খেতে যেতে পারবে ন, নিশা যেন তার জন্তে অপেক্ষা না করে। ঘরে নিশ ছিল না কিন্তু সেদিকে লক্ষ্য করবার মত অবস্থাও তার ছিল না। সামনে এক জন লোক আছে আর সে যে নিশা ছাড়া আর কেউ হওয়া সম্ভব তাও ভেবে নেওয়ার কোন কারণ নেই, তাই সে বললে, “তুই এখনও খাস নি ত । আমার জন্তে বসে থাকিস কেন বল ত ?”...কথা তার অরি প্রবাসী শেষ করা হ’ল না । যাকে উদ্দেশ ক’রে সে কথা বল সে বললে, “নিশ। নীচে গেছে, ডেকে দেব কি ?” “না দরকার নেই,–আচ্ছা দাও—তুমি কখন এসেই । “একটু আগে—নিশা আপনার জন্যে বড় ভাবলী এইমাত্র নীচে গেল ঠাকুর চলে যাচ্ছে ব'লে।" “তুমি আজকাল আর এস না, না ? তুমি এলে তত্ব ও একটা সঙ্গী পায় । আমি ত সারাদিন বাইরেই থাকি।"

  • ওর বিয়ের পর আপনি...” “কি করব ? বিশেষ কিছু ঠিক করি নি–নি ৰে রকম ক’রে হোক চলে যাবে, ভেবে কি করব ?”

“নিশ বিয়েতে একটুও স্বর্থী নয়, আপনার কা ভেবে ।” “আমার কথা আমিই ভাবতে পারি—আমার শরীরী বডড খারাপ লাগছে । তাকে ব’লো সে যেন খেয়ে নেয় আমার জন্যে অপেক্ষ করতে হবে না।” সিতাংশু চলে যেতেই নিশা এসে ঘরে ঢুকল। জিজেৰ করলে, “দাদা কি বললে অমুদি ?” : “তার শরীর ভাল নয় ; তুই থেয়ে নিগে যা।" “কি হয়েছে দাদার ?” “জিজ্ঞেস করি নি ।” “তবে কি করেছ ? এতক্ষণ সময় পেয়ে কিছুই বলনি না ? তোর কি কোন দিন মুখ ফুটবে না ?” "মুখ ফুটে কি হবে বল ? যে পাথর সে কি কখনও জাগে ? শুধু শুধু নিজেকে ছোট করি কেন ? সন্মান যেখানে এক দিন ফিরে পাবার আশা আছে, সেখানেই জ হারান চলে ।” "দাদার সঙ্গে কোন দিন সাহস ক’রে কথা কই নি এবার কিন্তু বলব ।” “পাগল হয়েছিস ? কি ভাববেন বল ত ?" “তোর লজ্জ নিয়েই যদি থাকিস তাহলে ঠকৰি৷ দাদা কি ঠিক করেছে জানিস ? চাকরি ছেড়ে দিন সন্ন্যাসী হবে---” “র্তার যদি তাই ইচ্ছে হয়, কে বাধা দেবে বল ?” “তুই না ওকে ভালবাসিস’,” “ই, এক দিকের—তাই দাম নেই। তিনি আমাকে স্ত্ৰ একটুও চান না, হয়ত ঘৃণা করেন।” “কেন, তোমার অপরাধ ?” ১৩৪৪ | “সব সময় কি অপরাধ থাকে। না, না তুই পান বলিস নে ৷” o |

  • আচ্ছ, দাদ। যদি সত্যি সংসার থেকে সরে *t>{ তাহ’লে তে, কি খুব দুঃখ হয় না ?” *

“কি জানি তার আদর্শ কত বড়।” : “আদশ কি/ব সময় ধরা যায় ?”