পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSo জ্ঞানদা। আশ্চৰ্য্য । আজ তিন দিন হ’ল দিলুম পড়তে, এখনও তোমার পড়া হয় নি ? মোহিনী । সময় কোথা যে পড়ব ? যেই দুটি লাইন পড়েছি আমনই থোকা এসে বললে, তার জামাতে বোতাম নেই। কলেজ কি ক’রে যাবে তার ঠিক নেই, স্বান ক’রে এসে একটা ফরসা ধুতি খুঁজে পাচ্ছে না। বেয়ারাটা আমাকে না দেখিয়েই এক ক্ষেপে তার দশটা ধুতি ধুতে দিয়েছে। ইন্দু বললে, তার শাস্তাদি এক পেয়ালা চা চাইছেন। জ্ঞানদা। আমার খুবই অবাক লাগে বাড়ীতে এতগুলো ঝি-চাকর থাকা সত্ত্বেও তুমি একটা খবরের কাগজের প্রবন্ধ পড়তে সময় পাও না। কেন, বেয়ারাট কি চা তৈরি করতে ভুলে গেছে, না এই এতবড় কলকাতা শহরে দরজী মেলে না যে তোমাকে রাত-দিন জামার বোতাম সেলাই করতে হবে, আার— মোহিনী । [ তাহার উত্তেজনায় বাধা দিয়া, বিস্মিত স্বরে ] ওমা, তুমি যে অবাক করলে ! জামার একটা বোলম ছিড়লেই দরজীবাড়ী দৌড়তে হবে নাকি ? আর বেয়ারা যে চা তৈরি করে, থোকা আর ইন্দু বলে আমন চা খাওয়ার চেয়ে চা না থেলেই হয়। তুমি কি মনে কর আমি যে কাজটি নিজে থেকে না দেখব, সেটি হবার জো আছে ! কিন্তু আর না, যাই তোমার হলিক্সট তৈরি করে নিয়ে আসি, দেরি হয়ে যাচ্ছে । = [ প্রস্থান করিলেন । অন্ত দিকের দরজা দিয়া ইন্দির ঘরে চুকিল । জ্ঞানদী । -তোমার পড়া হয়ে গেল মা ? : ङेन्द्रि। হ্যা, এইমাত্র আমাকে পড়ানো শেষ ক’রে "তানি চলে গেলেন। এ কি, তুমি এখনও খোলা জানালার "মনে বসে হিম লাগাচ্ছ বাবা ? এই ত সেদিন ইনফ্লুয়ের থেকে উঠলে। মা কোথা গেলেন ? জ্ঞানদী । তোমার মা এখানেই বসেছিলেন, এইমাত্র আমার রাত্রির থাবার আনতে গেলেন তৈরি করে । র্তার অত্যাচারের ত সীমা-পরিসীমা নেই। কবে অস্থখ থেকে উঠেছি এখনও রোজ রাত্তিরে এক বাটি করে হলিক্স খাওয়াই চাই। এদিকে দেখি তোমার মা দিনান্তে একটিবার খবরের কাগজখানায় চোখ বুলিয়ে যাবারও প্রবণসী ১৩৪৪ অবসর পান না। সেদিন অত ক’রে বললুম লর্ড জেটল্যাণ্ড যে কথাগুলো বললেন একবার ভেবে দেখ দিকি ..দেশের কতবড় একটা সঙ্কটময় মুহূৰ্ত্ত যাচ্ছে---কিন্তু তোমার মায়ের কাছে মশারির একটি পেরেক সোজা ক’রে টাঙানোও দেশের এতবড় ভাবনার চেয়ে মূল্যবান । ইন্দিরা তাহার মায়ের পরিত্যক্ত চেয়ারখানায় বসিয় নিঃশৰে হাদিতে লাগিল, কোন উত্তর দিল না ।] জ্ঞানদা। [ বিস্মিত হইয়া ] তুমিও হাসছ ইন্ধু ! কেন আমি যে কথাগুলো বললুম তাতে কি হাসির উপাদান ছাড়া আর কিছু ভাববার বিষয় নেই ? মেয়েরা কি চিরদিনই জামার বোতাম পরানো আর বালিশের ওয়াড়ে ফুল ভোলা—এই সব নিয়ে থাকবে ? বৃহত্তর জগতে তাদের কোন দায়িত্ব নেই ? - ইন্দিরা । [ দেয়ালে টাঙানো তাহার এস্রাজট পাড়িয়া অনিয়া ] তুমি সারাদিন এই সব পরীক্ষার কাগজ নিয়ে বডড থেটেছ বাবা, এখন আর বৃহত্তর জগতের সমস্তার সমাধান এর উপর সইবে না। তার চেয়ে আমি একটু এষাৰ বাজাই তুমি শোন । এমন সময় ইন্দিরার মেসোমশায় এবং তার কন্য ফুল্পর ঘরে ঢুকিলেন। ইন্দিরার মেসে মনোজবাবু, পদারওয়াল এটর্ণি। বয়স জানাবাৰু চেয়ে কিছু কম । শুষ্ক চেহারা কাঠখোট্টাগোছের । জীবনে যেন মৰমত নাই । মেয়ে ফুল্লর আধুনিক প্রগতিশীল তরণী । মাজাফ ফ্যাশনৰে বেশভুষা।] জ্ঞানদা। আরে মনোজ যে ! এস এস! এদিকে যে আর তোমার পাত্তাই পাওয়া যায় না । মনোজ। সময় ক’রে উঠতে পারি নে ভাই। যা কাজের চাপ পড়েছে। সেই দুটি নাকে মুখে দিয়ে হাইকোট দৌড়ই, ফিরতে সন্ধ্যে হয়ে যায়। ফুল্লরা। [ মিহি স্বরে ] আমি এসেছি ইন্দুকে নিমন্ত্রণ করতে মেসোমশায় । কাল আমার জন্মদিন। তাৰে যেতে হবে আর ঐখানেই থাকতে হবে কালকের নিট। আমাদের হোল-ডে প্রোগ্রাম রয়েছে। কাশীপুরে আমাদের বাগানবাড়ীতে চড়িভাতি করতে যাব, তার পর সবাই মিলে একসঙ্গে মেট্রো ।