পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কণভিক নিৰ্ম্মল । অমন কথা ব’লো না ইন্দু। তোমাকে বাস্তব জগতের রূঢ় সংগ্রামের মধ্যে নেমে আসতে কেন দেব আমি ? তোমাকে সকল কুত্রতা এবং সকল আঘাত থেকে রক্ষা করব বলেই ত আমি আছি । ইন্দিরা । এই মনোভাব নিয়ে আপনি মেয়েদের স্বাধীনতার কথায় শতমুখ ! জীবনের দায়িত্ব যদি না নিলুম ভবে স্বাধীনতার মানে কি রইল ?—আপনি আমাকে সকল আঘাত থেকে আড়াল করতে না চেয়ে আমাকে আঘাত সয়ে এবং দায়িত্ব নিয়ে যথার্থ মানুষ হবার স্বাধীনতা দিন। নিৰ্ম্মল । ওসব যুক্তিতর্কের কথা আমিও বুঝি ইন্দু। কিন্তু সমস্ত সভ্যতা প্রগতি এবং নারী-জাগরণ সত্ত্বেও আজও পুরুষের চিত্ত থেকে ঐ প্রার্থনাটি ধ্বনিত হচ্ছে। স্নেহাস্পদাকে বাস্তব জগতের সকল রূঢ়তা ও নগ্ন সত্যের হাত থেকে অর্ডালে রাখবার কামনা আজও তার লেশমাত্র স্নান হয় নি। ইন্দির। [ টেবিলের উপর মাথ। রাথিয় ] আপনি অামাকে আমার কৰ্ত্তব্য পথ থেকে এমন ক’রে বিচলিত করবেন না । নিৰ্ম্মল তাহার মাথায় হাত রাথিয় ] ইন্দু ! विडीघ्र नृश বেলা আটটা । কলিকাতার রাজপথে কৰ্ম্মথালির বিজ্ঞাপন ল্যাম্প পোষ্টে প্রাচীরের গাত্রে আঁটা আছে। নরেন পকেট হইতে নোটবুক বাহির করিয়া ঠিকান লিখিয়া লইতেছে ] নরেন। নম্বর সেভেন্টিফাইভ বি রসারোড, প্রাইভেট সেক্রেটরী চাই । গ্র্যাজুয়েট হওয়া আবশ্বক, ইংরেজীতে ষ্ট্রং, টাইপরাইটিং জানা প্রয়োজন [ টুকিয়া লইয়] আচ্ছা আমি একটা দরখাস্ত লিখে ফেলি। [ আপন মনে ] না দরখাস্ত হাজার জায়গায় করেছি কোন ফল হয় নি। এখানে আমি নিজেই একবার গিয়ে দেখি। [ ফুটপাত হইতে নামিয়া পথ চলিতে লাগিল । —নম্বরের নির্দেশমত প্রকাও দোতল বাড়ী। দুয়ারে দরোয়ান । নরেন গেটের কাছে গিয়া দাড়াইল । ] দরোয়ান । [ ক্ষণেকের জন্য খইনি-ডলা বন্ধ করিয়া, মুখ তুলিয়া ) এ বাৰু কেয়া মাংতা ? নরেন । তোমাদের বাবুর সঙ্গে একবার দেখা করতে চাই । ८िद्भtद्मनि । নরেন । বাবু অগভী শোত হ্যায়। 일F ঘুম ভাঙবে তখন দেথা করব । অামারই গরজ বেশী তখন অপেক্ষা করতে রাজী আছি । গেটের ভিতর ঢুকিয়া পড়িল ] যখন - স্বরের উৎস ১২৫ বাড়ীর ভিতর ঢুকিয় নরেন আর একজন চাপরাশির হাতে পড়িল । সে অযথা বাক্যব্যয় না করিয়া বাদিকের ছোট পায়রী-থোপের মত একটি ঘর দেখাইয় দিল। নরেন ঢুকিয়া একখানা চেয়ার টানিয়া বসিল । তথায় আরও জন দশ বারো প্রার্থী বসিয়া আছে। কেহ সিগারেট মুখে দিয়া খবরের কাগজ পড়িতেছে, কেহ একান্ত উত্তেজিত ভাবে বৰ্ত্তমান বেকার-সমস্যার বিষয়ে তুমুল আলোচনা শুরু করিয়াছে। কেহ বা অপরিসীম ধৈৰ্য্যের সহিত শুধুমাত্র অপেক্ষা করিয়া আছে। ] ১ম প্রার্থী। [বারান্দায় একটু মুৰ্থ বাড়াইয়া খানসামাকে লক্ষ্য করিয়া ] বাবা, একটু মেহেরবাণী ক’রে দেখ বাবু উঠলেন কি না। আমাকে একবার তার সঙ্গে দেখা করিয়ে দাও, আমি তোমাকে পান খেতে নগদ আট আনা দেব। থানসাম । [ গরম জল লইয়। দ্রুতপদে উপরে যাইতে যাইতে ] সৰুর করুন, বাৰু এই উঠলেন। এখন গোসল कुश्म | ২য় প্রার্থী। তার পরে ? থানসামা। তারপর চা থাবেন। ২য় । তার পরে ? থানসামা। দাড়ি কামাবেন। জল নিয়ে যাচ্ছি। ৩য়। তার পরে ? - - খানসামা। তার পরে পোষাক পরবেন, টাই আঁটকে । ৪র্থ । আচ্ছা তার পরে ?—তার পরে সময় হবে ত ? খানসামা। তার পরে কাগজে একশ-আট বার দুর্গনাম লিখবেন। নরেন । [ হাসিয় ফেলিয় ] বেশ মজা ত, এদিকে টাই আঁটবেন আবার দুর্গানামও লেখা চাই। কিন্তু যেরকম ফর্দ পেলুম তাতে দেখছি বেলা এগারটার এদিকে তোমাদের বাবুর নীচে নামবার কোন সম্ভাবনাই নেই। অতক্ষণ অপেক্ষা আমি করতে পারব না। তার চেয়ে চল তোমাদের বাবুর মুখ হাত ধুতে ধুতেই তার সঙ্গে যে দু-চারটে কথা আছে সেরে আসি। [ ঘর হইতে বাহির হইয়া দোতালার সিড়ি বাহিয়া উপরে উঠিবার উপক্রম করিল। ] খানসাম । কোথায় যাচ্ছেন বাবু ? - চাপরাশি। উপর কাহে যাতে হেঁ বাৰু! মই যাইয়ে। নরেন । [ উঠিতে উঠিতে ] বাধ্য হয়েই যেতে হ’ল । তোমরা যা ফর্দ দাখিল করলে সে অনুসারে উনি আজ সকালে আদেী নামবেন কি না সন্দেহ, এবং আমার তার সঙ্গে দেখা করা চাই-ই । ১ম প্রার্থী। ছোকর খুব স্পীরিটেড দেখছি ! কিন্তু বৃথা যাওয়া। ঐ ত বয়েস, ম্যাটিক পাস করেছে বড়জোর” শুধু দোতলায় উঠতে পারলেই কি চাকরি হয় মশাই ! এই দেখুন না গরম