পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজার বাজারে কর্তব্য বাঙালী হিন্দু মাত্রেই এই সময় কাপড়, জামা, জুতা ও অন্য অনেক জিনিষ কিনিবেন । তাহারা বাঙালীর কারখানায় বা বাঙালীর গৃহে প্রস্তুত এই রকম প্রায় সব জিনিষই কম ও বেশী দামের পাইবেন । বাঙালীর মিলের কাপড়, বাঙালীর হাভের তাতের কাপড়, বাঙালীর বোন খদ্দর পাইবেন । সাবান, গন্ধদ্রব্য প্রভৃতি প্রসাধনের জিনিষও বাঙালীর তৈরি পাইবেন । বাঙালীর তৈরি যাহা না পাইবেন, তাহ অন্য প্রদেশীয়ের তৈরি কিনিবেন। কিন্তু বিদেশী কিছু কোনক্রমেই কেন উচিত হইবে না। জাপানী বর্বর্বরতা > জাপানীরা চীন দখল করিতে চেষ্টা করিতেছে । শুধু এই কারণেই আমাদের জাপানী জিনিষ ক্রয় হইতে বিরত থাকা উচিত। তাহার উপর জাপানীরা চীনের নানা শহরে, যাহারা যুদ্ধ করিতেছে না এরূপ পুরুষদের উপর, এবং স্ত্রীলোক ও শিশুদের উপর আকাশ হইতে বোমা ফেলিয়া হাজার ইঞ্জিার মানুষের প্রাণবধ করিতেছে। মাছি মারিবার জন্ত ব্যবহৃত বিষমাথান কাগজের উপর যেমন ঠাসাঠাসি পাশাপাশি মাছির ঝাক পড়িয়া মরিয়া থাকে, চীনের অনেক জায়গায় আবালবৃদ্ধবনিতা নিহত চৈনিকদের মৃতদেহ বা দেহাংশ সেইরূপ লক্ষিত হইতেছে, কোথাও কোথাও বা শবস্তুপের মধ্য হইতে আহত অৰ্দ্ধমৃত কাহারও কাহারও ক্ষীণ কাতরধ্বনি উত্থিত হইতেছে এবং সাহায্যভিক্ষার জন্য উত্তোলিত হস্তের সঙ্কেত দৃষ্ট হইতেছে। চীনের বিখ্যাত বিদ্যাপ্রতিষ্ঠান চীনের গৌরব নানকাই বিশ্ববিদ্যালয় গড়িয়া তুলিতে কুড়ি বৎসর লাগিয়াছিল । জাপানীরা তাহ আকাশ হইতে বোম ফেলিয়া চারি ঘটায় ধ্বংস করিয়াছে। পাছে তাহাতেও কিছু অবিনষ্ট থাকে, এই জন্ত বোমা ফেলার পরদিন প্রাতে জাপানীরা কেরোলিন তেলের টিন এবং মশাল ও বন্দুক লইয়া বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও করিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক কাষ্ঠখণ্ড ও কাগজের টুকরা ভস্মীভূত করে—সেখানে যে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, তাহার চিহ্নমাত্রও না-রাখা তাহাদের উদেখ । এরূপ পৈশাচিক প্ৰলয়কাও করিবার কোনই সামরিক প্রয়োজন ছিল না। সমুদ্রে কতকগুলি চীনা মৎস্যজীবীদের নৌকা মাছ ধরিতেছিল। একটা জাপানী সবমেরীন সমুদ্রগর্ভ হইতে উঠিয়া গোলা ছুড়িয়া শত শত শিশু যুবা বৃদ্ধ নরনারী সমেত সেগুলিকে নষ্ট করিয়াছে । এই প্রকার পৈশাচিক নিষ্ঠুরতা যাহারা করিতেছে, তাহাদের কোন প্রকার জিনিষ কেনা অনুচিত। নানকাইয়ের একটি ছাত্র ‘ভয়েস অব চায়না’ পত্রিকা নানকাই-ধ্বংসের মৰ্ম্মভেদী বৃত্তাস্ত লিথিয়াছেন। প্রত্যেক । প্যারাগ্রাফের শেষে লিথিয়াছেন—“নানকাই বিশ্ববিদ্যালয় আর নাই । কিন্তু এখন বিলাপের সময় নাই। আমাদের একটি কৰ্ত্তব্য আছে।” জাপানকে পরাস্ত করা সেই কৰ্ত্তব্য। জাপানী বৰ্ব্বরতায় স্বদেশপ্রেমিক চৈনিকেরা দমিয় যান নাই। তাহারা অদম্য । কালনেমির লঙ্কাভাগ শক্তিশেলে সংজ্ঞাহীন লক্ষ্মণকে বাচাইবার জন্য মন হনুমান গন্ধমাদন পৰ্ব্বত হইতে ঔষধ আনিবার নিমিয় প্রেরিত হন, তখন রাবণের মামা কালনেমি হনুমানৱে বধ করিবার ভার পান। এই কাজটার পুরস্কার স্বৰূপ কালনেমি লঙ্কারাজ্যের অৰ্দ্ধেক পাইবেন, রাবণ এইংল অঙ্গীকার করেন । কালনেমি হনুমানকে বধ করিম, যাইবার সময়ই লঙ্কার কোন আধখানা লইবেন স্থির করেন। কিন্তু ইহুমান নিহত না হইয়া তিনি নিজেই নিহত হয়। স্বতরাং লঙ্কাভাগটা তাহার বাস্থ ও কল্পনাতেই পৰ্য্যৰমিয় হয়, বাস্তবে পরিণত হয় নাই । গত ১৮ই সেপ্টেম্বর সিমলায় মিঃ মোহম্মদ জাগ জিন্নার দলের লোকেরা তাহাকে অভিনন্দনপত্র উপয়র দেন, এবং তাহার উত্তরে তিনি অন্যান্য কথার মধ্যে এই কথা বলেন : There could be no solution, if people continue to believe in the principle of “acquisition first and distribution afterwards', or, in the latest dictum, 'possessiom first and partition aftery,,„„, তাৎপৰ্য্য । [ সাম্প্রদায়িক ] সমস্যার কোন সমাধান হইতে পারে না যদি লোকের "আগে অর্জন পরে বন্টন" নীতিতে এখন আধুনিকতম বচন অনুসারে "আগে দখল পরে বাটোয়ার” নীতিতে বিশ্বাস করিতে থাকে।