পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কপত্তিক কাব্যের মূলতত্ত্ব ԳS ভবেশ ডেস্কে হাত দুইটার উপর ভর দিয়া সামনে একটু কুকিয়া বলিল, “হৃদয়রূপী :--” “ব’স বাপু, আমি জানি তুমি সোজা ব্যাপারটিকে জটিল না ক'রে ছাড়বে না। -- বিলাস ?" “অঙ্ক, স্যার ” “অঙ্ক, তবে শুধু অঙ্ক নয়,—ইতিহাস, ভূগোল সবই আছে –এই সমস্ত জিনিষের জ্ঞানই হ’ল তোমার অস্ত্র।” বিলাস বলিল, “ইতিহাস, ভূগোলও ত অঙ্ক থেকে জালাদ নয় স্যার ।" - “নদুই ত ; এইবার মনে হচ্ছে যেন তোমরা কতক কতক বুঝেছ। পড় দেখি পদ্যটা এইবার ।" Vo বিলাসেরই দিন আজ। আবার, আবার সেই কামান গর্জন বলিয়া অ্যাকুটিঙের ঢঙে আরম্ভ করিতে যাইতেছিল, সেকেণ্ড মাষ্টার বাধা দিয়া বলিলেন, “আচ্ছ, কামান-গর্জন থামাও একটু ৷ বলি রণক্ষেত্র সম্বন্ধে কোন একটা ধারণা ক'রে নিয়েছ আগে ?” ক্লাসে একটা চাপা আক্রোশের হাসি উঠিল। বিলাস থামিদ গিয়া অপ্রতিভ ভাবে বলিল, “না স্যার ।" - “তা করবে কেন ? তাতে যে অঙ্কের গন্ধ আছে একটু । অথচ যিনি লিখেছেন তাকে সমস্ত অঙ্কশাস্ত্রটি মগজের মধ্যে রেখে তবে এই যুদ্ধের ইতিহাসটি পদ্যে বর্ণনা করতে হয়েছে।” সেকেণ্ড মাষ্টার উঠিয়া গিয়া বোর্ডের গায়ে, উচু দিকে ফলাটা নির্দেশ করিয়া একটি তীর আঁকিলেন এবং ফলার মুখে একটি ইংরেজী ‘N’ অক্ষর বসাইয়া দিলেন। কে এক জন চাপ গলায় প্রশ্ন করিল, “ওটা আবার কেন ?” হরা সেইরূপ স্বরে উত্তর করিল, “বাংলা-সাহিত্যের জন্যে শক্তিশেল ।” সেকেণ্ড মাষ্টার বলিলেন, “এটা হ'ল উত্তর দিক।” তীরের সমান্তরালে আর একটি দাড়ি টানিলেন ; বলিলেন, ‘ভাগীরথী, এবং দাড়িটির উভয় প্রান্তে, মাঝে একটু জায়গা ছাড়িয়া দুইটি চতুষ্কোণ ঘর আঁকিলেন, একটির মাঝখানে লিখিলেন–‘ইং’, অপরটির মাঝখানে নি, তাহার পর অনাথের পানে চাহিয়া প্রশ্ন করিলেন, “কিছু বোধগম্য হচ্ছে অনাথবাবুর ?" ং‘আজ্ঞে হ্যা স্তার, এদিকটা হ’ল নবাবের সৈন্ত আর এদিকটা ইংরেজের ।” - “কি ক’রে দাড়িয়ে আছে সব ?--তালগোল পাকিয়ে ?” “আঞ্জে না স্তার।" “তবে ?” - অনাথ প্রশ্নটার অর্থ কি এবং কি ধরণের উত্তর চাহে তাহার কোনও হদিস না পাইয়া হতাশভাবে বোর্ডের দিকে চাহিয়া রহিল। “খুব বুঝেছ সব।--তুমি • তুমি ? ... ইউ ? -- তুমি শৈলেন ?” আমি মুখটা ফ্যাকাশে করিয়া দাড়াইয়া উঠিলাম, আকুল ভাবে বোর্ডের সেনাবাহিনীর দুই কক্ষের দিকে চাহিলাম, তাহার পর তীরের ফলায় নজরটা আটকাইয়া গিয়া একটা বৃদ্ধি আসিল ; বলিলাম, “সঙ্গীন উচু করে স্তার ” ভাল ছেলে বলিয়া আমার একটু নাম ছিল। মাষ্টার মহাশয় এমন গভীর ভাবে নিরাশ হইয় গেলেন যে আমার উত্তরের উপর কোন মন্তব্য প্রকাশ করিলেন না । ভবেশকে বলিলেন, “যা, বোর্ডের কাছে যা, জিওমেটির ছয়ের প্রবলেমটা মুখস্থ আছে ?” ভবেশ চক্ষু কুঞ্চিত করিয়া ছাদের দিকে এমন ভাবে চাহিয়া রহিল, মনে হইল যেন ছাদ ভেদ করিয়া আকাশে কোন নক্ষত্ৰলোকে ছয়ের প্রবলেমটার অনুসন্ধান করিতেছে। সেকেণ্ড মাষ্টার বলিলেন, “যা, ঐ এক কোণে ব’সে পদ্য লিথগে যা। বলাই ?” ভবেশের অবস্থার সঙ্গে বলাইয়ের অবস্থার কোন প্রভেদ লক্ষিত হইল না। সেকেও মাষ্টার তখন নিজে বোর্ডের কাছে গেলেন এবং সৈন্যবাহিনীর প্রত্যেক চতুষ্কোণ ঘরটিতে পূৰ্ব্ব-পশ্চিমে গোটাকতক করিয়া সোজা লাইন টানিলেন। বলিলেন, “এই সৈন্যেরা দাড়িয়ে আছে, প্রত্যেক লাইনটি পরম্পরের সমান্তরাল, কেন না, আমি প্রত্যেকটিকে প্রথম লাইনটির সঙ্গে প্যারীলাল ক'রে টেনেছি।“কোন থিয়োরেম "