পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

|-a দ্ধি এবং আধবৃদ্ধ মিশনারী মহিলা। তাদের সঙ্গে কি * যে করবে বেচারী বোধ হয় ভেবে পেত না। নিতান্তই ছেলেমান্তষ সে । সারাদিন গ্রামোফোনে রেকর্ড লাগিয়ে এবং একলা ব্যাগাটেল খেলে সে দিন কাটাত। সেই ব্যাগাটেল বোর্ডটার আবার অৰ্দ্ধেক ঘুটি গিয়েছিল হারিয়ে । ছেলেটির অবস্থা অনেকটা আমারই মত। মনের মত সঙ্গী নেই এবং অ-মনের মতদের এড়িয়ে চলতে চায়। তাই ডেকের যেদিকে চেয়ার থাকে না এবং কেউ যায় না সেই দিকে গিয়ে সে চুপ করে দাড়িয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের নাচন দেথত । আমি অবশু অত দাড়িয়ে থাকতাম ম, হাওয়া-পথের ঢিপিগুলোর উপর বসে কিছু লেখাপড় ऋद्रठभि । আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীতে যাত্রী বোধ হয় সতর জন ছিলেন। ভারতবর্ষ থেকে জাহাজ ছাড়ছে কিন্তু প্রথম দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভারতবাসী আমরা তিন জন ছাড়া কেউ ছিলেন না । সমুদ্রযাত্রায় উচ্চশ্রেণীর ভারতীয়দের বোধ মৃদু বিশেষ উৎসাহ নেই। ইউরোপ হ’লে তবু একটু উৎসাহ দেখা যায়, চীন ও জাপান সম্বন্ধে লোকের অত গা নেই । অামাদের সঙ্গে খেতে বসতেন আর ছ’জন। একটি ইউরোপীয় পরিবার স্বামী-স্ত্রী ও একটি মেয়ে বসতেন দামাদের মুখোমুখি। স্ত্রীটির বয়স বত্রিশ-তেত্রিশ হবে বোধ হয়। ভারী মিষ্টি হাসে, চোখ দুটো ঠিক হরিণের মহিলাটি কথা বলেন খুব, খান তার চেয়ে অনেক বেশী এবং সাজপোষাক করেন অনেক রকম। নানা বিষয়েই মনে হয় সেকেলে মতাবলম্বী, সিগারেট খেতে কিম্বা মদ খেতে দেখিনি কোনও দিন, জল কফি আর চায়েই তৃষ্ণা নিবারণ করতে দেখতাম। cবে ইউরোপে আজকাল পোষাক-পরিচ্ছদ বিষয়ে যে আধুনিকতা চলেছে তার হাত থেকে ইনি মোটেই নিস্কৃতি পাননি । । পুরুষদের চেয়ে মেয়েরাই আজকাল হাফপ্যাণ্ট এবং যথাসম্ভর সংক্ষিপ্ত কাপড়-চোপড়ে উৎসাহী। সকাল থেকে ডিনারের পূর্বক্ষণ পৰ্য্যস্ত রাতের কাপড়, হাফপ্যাণ্ট গেঞ্জি স তারের পোষাক যার যা খুশী নিবিববাদে পরে বেড়ায়। অগত্যা মত । জলপান যাত্র। ԳՏ কুমারী ক্যাডেট এরা যে সভ্য জাতের স্ত্রীলোক তা ডিনারের আগে বোঝা শক্ত। সেই সময় পা পৰ্য্যন্ত লুটিয়ে পড়া গাউন ও অন্যান্ত নানা সাজপোষাকের ঘট পড়ে যায়। অবিবাহিত মহিলারা তবু দিনের বেলাও একটু সভ্য ভব্য থাকতে চেষ্টা করতেন। বিবাহিতাগুলি ছিলেন সংক্ষিপ্ত পোষাকে মারাত্মক উৎসাহী । আমাদের সঙ্গে যে ছোট মেয়েটি থেতে বসত তার বয়স বোধ হয় দশ থেকে বারোর মধ্যে হবে । মুখখানা কচি কিন্তু দেখতে মস্ত লম্বা। সমস্ত দিন জাহাজের প্রত্যেক আলিগলিতে হুটোপাট ক’রে বেড়ানো ছিল তার কাজ । আমার মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাপ্টেনের ঘর থেকে স্বরু ক’রে এঞ্জিন-রুম পৰ্য্যন্ত সে ঘুরে বেড়াত। আমাদের দেশের মেয়েরা এই বয়সে এতখানি দুরন্তপন করতে কোনদিন পারে না। ঠিক পাচ বছরের মেয়ের মত সময়ে-অসময়ে এসে আমাদের কেবিনে ঢু মারা ছিল তার মস্ত একটা কাজ। ভোরবেলা আমরা ঘুম থেকে ওঠবার আগেই সে এসে দরজায় ঠক্ ঠক্‌ করত। দুপুরে খাবার পরে কেবিনে ঢুকে দেখতাম, নিশ্চিন্তমনে আমার বিছানাটি দখল করে আমার