পাতা:প্রবাসী ভাদ্র ১৩৪৪ সংখ্যা ৫.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীটপতঙ্গাদি নিয়শ্রেণীর প্রাণীদের মধ্যে গঙ্গাফড়িঙের মত এমন হভূত চালচলন ও শারীরিক গতিভঙ্গীবিশিষ্ট অপরূপ প্রাণী দদা বড়-একটা নজরে পড়ে না। সাধারণ কীটপতঙ্গশ্রেণীর হস্তভূক্ত হইয়৷ ইহার অভিব্যক্তির কোন ধারা অবলম্বনে এবং কিরূপ পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে পড়িয়া বৰ্ত্তমান আকৃতি ও প্রকৃতি আয়ত্ত করিয়া লইয়াছিল তাহার ইতিহাস বিস্ময়োদীপক হুইবে সন্দেহ নাই । জীবজগতের ক্রমবিকাশের ধারা পর্যালোচনা করিলে দেখিতে পাওয়া যায়, আণুবীক্ষণিক ভ্ৰাদি জীবের কেবল আহার-বিহারেই ব্যাপৃত থাকে। শক্ৰ কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় পূৰ্ব্বাহুে আত্মরক্ষার প্রচেষ্ট৷ তেমন কিছু দেখিতে পাওয়া যায় না । শত্রুর আক্রমণ স্পশেন্দ্রিয়গোচর হইলে শরীর সঙ্কুচিত করিয়া প্রাণরক্ষার চেষ্টা করে মাত্র। দর্শনেন্দ্রিন্থের অভাবই ইহার প্রধান কারণ হইতে পারে ; কিন্তু সুনির্দিষ্ট দর্শনেন্দ্রিয়ের অভাব হইলেও প্রকৃতপ্রস্তাবে দেখিতে পাওয়া যায় যে, ইহারা সৰ্ব্বদাই আলো-অাধারের তারতম্য প্রথবা অস্তিত্ব অনুভব করিয়া থাকে। তথাপি উন্নতশ্রেণীর ভূমিকীটের মত ইহাদিগকে আত্মরক্ষার্থ তেমন সচেষ্ট দেখা দ্বাদু না । ইহাদের শক্রর সংখ্যা যে কম, তাহাও বলা চলে aা । সমজাতীয় শত্র কম হইলেও অপেক্ষাকৃত উন্নতশ্রেণীর 4র অসংখ্য। তবে হয়ত ইহাদের বংশবৃদ্ধির হার ও সহজ ভূপায় এবং অপেক্ষাকৃত উন্নত জীবের উদরে প্রবেশ করিয়াও সময়ে সময়ে বংশবৃদ্ধি করিবার ক্ষমতা এই ক্রটির পরিপূরক হইয়াছে। তার পর প্রোটোজোয় প্রভৃতি আর এক ধাপ উন্নত স্তরের জীবের বেলায়ও দেখিতে পাওয়া যায় যে, প্রকৃতপ্রস্তাবে আক্রান্ত না হইলে তাহারাও প্রতিক্রিয়ার কোন লক্ষণই প্রকাশ করে না ; কিন্তু আক্রান্ত হইলে এক দিকে ছুটিয়া পলাইতে চেষ্টা করে। বিপদ এড়াইবার জন্য পূৰ্ব্বাহে স্থান ত্যাগ বা অন্য কোনরূপ আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করিতে দেখা যায় না। এইরূপ যতই উন্নততর জীবের দিকে অগ্রসর হওয়া যায়, ততই দেখিতে পাওয়া যায় যে দর্শনেন্দ্রিয় অভিব্যক্ত হইয়া সুনির্দিষ্ট স্থান গ্রহণ করিয়াছে এবং গতিবিধির স্বাধীনতা ও পরিধি যথেষ্ট বিস্তৃত হইয়াছে। সঙ্গে সঙ্গে দূর হইতে শত্রুর গতিবিধি টের পাইয়া, আক্রান্ত হইবার পূর্বেই সাবধান হইবার উপায় অবলম্বন করিবার ব্যবস্থা করিয়াছে। কিন্তু এত দূর উন্নত হইলেও কীটপতঙ্গ প্রভৃতি অমেরুদণ্ডী প্রাণী কোন কোন বিষয়ে বুদ্ধিবৃত্তির উৎকর্ষের পরিচয় দিলেও ইহাদের শরীর ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গাদি এমন ভাবে গঠিত যে সম্মুখ দিকের বিপদআপদ বা শত্রুর গতিবিধি লক্ষ্য করিয়া পূৰ্ব্বাহ্লে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করিতে পারে ; কিন্তু পিছনে বা আশপাশের অবস্থা তদারক করিবার ক্ষমতা খুবই কম। কারণ কীটপতঙ্গাদির চক্ষু বিভিন্ন ভাবে উন্নত ধরণে গঠিত হইলেও ইচ্ছামত ঘাড় বা মাথা ঘুরাইয়া ফিরাইয়া চারি দিকের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করিবার শক্তি নাই। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, সাধারণ কীটপতঙ্গশ্রেণীভুক্ত হইয়াও গঙ্গাফড়িং, মনুষ্য প্রভৃতি সৰ্ব্বোন্নত প্রাণীদের সবুজ গঙ্গাফড়িং। শিকারান্বেষণে ব্যাপৃত। গঙ্গাফড়িং ডান মেলিয় উড়িয়া যাইবার উপক্রম করিতেছে । *

o