পাতা:প্রবাসী ভাদ্র ১৩৪৪ সংখ্যা ৫.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՏՏ2 প্রবাসী ՏNՉ88 বোতল হাতে করিয়া শুইবার ঘরে ফিরিয়া আসিলেন। মৃণাল পিছন ফিরিয়া তাকাইয়া বলিল, “ওতে কি মামীম ?” মামীম তাহার পাশে আসিয়া বৃসিয়া পড়িলেন, বলিলেন, “এবার আর বেশী কিছু ক’রে দিতে পারলাম না মা, যা জালাতন করে খোকাটা। থানকতক চন্দ্রপুলি আর ক্ষীরের প্যাড়া দিলাম, খাস, আর এই বোতলটায় গাওয়া ঘি দিলাম, পাতে খেতে পারবি। কলকাতার খাওয়া খেয়ে মেয়ের যা ছিরি হচ্ছে, হাড় ক’থানা গোনা যায়। দেখি, বড়দিনের সময় যদি আনতে পারি।” মৃণাল বিষঃভাবে বলিল, “তখন কি আর বোর্ডিং থেকে ছাড়বে মামীম ? - প্রাইজ আর স্পোর্টের জন্যে ধ’রে রাখতে চাইবে ।” মামীম বলিলেন, “চিঠিপত্র লেখালেখি ক’রে দেখা যাবে তখন। দেড়টা মাস বই ত নয়, দেখতে দেখতে কেটে যাবে। ক’খানা কাপড় নিলি দেখি ?” মৃণাল বাক্স খুলিয়া উপরের বই খাতাগুলি উঠাইয়া ফেলিয়া কাপড়-জামাগুলি মামীমাকে দেখাইতে লাগিল । মামীম বলিলেন, “মোটে দশখানা কাপড়, তাও সব আটপৌরে, কোথাও যেতে-আসতে হ’লে কি পরবি ? তোর সেই খয়েরী রঙের জামদানি শাড়ীটা কি হ’ল ? বেশ ছিল কাপড়খানা, বেশী পুরনো ত নয় ?” মুণাল বলিল, “প্রাইজের সময় গেল বছর সেটা নষ্ট হয়ে গেল যে মামীম ! মেয়েরা সবাই ঢের কাপড় দিয়েছিল ষ্টেজ সাজাতে, আমিও ওখানা দিয়েছিলাম। কে একরাশ কালি উন্টে ফেলে সেটার দফা সেরে দিলে।” - এমমিীমা বলিলেন, “তা বেশ ; তারা সব শহরে বড় মানষের মেয়ে, তাদের ত ওসব গায়ে লাগে না ? আমাদের যে কত কষ্ট করে এক-একটা জিনিষ করতে হয়, জ এর বুঝবে কি ক’রে ? তা এরকম স্তাড়াবোচা হয়ে ত যাওয় যায় না? আমার গরদের শাড়ীখানা দেব, নিয়ে মাত্বি ?” মৃণাল বলিল, “নী মামীম, তুমি তাহলে কোng. আসতে কি পরবে ? তোমার ত আর নেই ?” মামীম খানিক চুপ করিয়া बैप्लिन्, उाशन्न পর বলিলেন, “তাহলে এক কাজ কর, তোর মাকে খুলে

  • i -

গোটা দুই শাড়ী বার ক’রে নিয়ে যা। ওগুলো তোরই ত্র পরবার কথা, বেশীদিন বাক্সে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকলে নষ্ট মন্ত্র যাবে।” মৃণাল বলিল, “ওগুলি নিয়ে পরতে কেমন যেন কই হন্তু মামীম।” --- - মামামা বলিলেন, “তা হোক, তুই পর, তোর ੇ রেখে গেছে। তার আত্মাটা খুশী হবে । গহনা ক'খানাৰ তোর সঙ্গে দিয়ে দেব ভাবি, তার পর আবার মনে হয় বিয়ের জন্যে রেখে দিলেই ভাল। আমরা ত আর তখন বেশী কিছু দিতে পারব না, তোর বাপও বেশী হাত উষ্ণু করবে ব’লে মনে হয় না।” মৃণাল নত মুখে বলিল, “ওসব এখন থাক, গয়ন-ক্টর স্কুলে তত কেউ পরে না ।” মামীম সিন্দুকের ভিতর হইতে ছোট বাক্সটি ব্যক্তি করিয়া আনিলেন । আঁচলে-বাধা চাবির তাড়া হইত্ত্বে বাছিয়া বাছিয়া একটা পুরাতন মরিচাপড়া চাবি বান্ত্ৰি করিয়া বাক্সটি খুলিয়া ফেলিলেন। বলিলেন, “দেখ কি নিৰি বেছে নে ৷” বাক্সটি খুলিতেই ভিতর হইতে একটি মৃদু সৌরভ বাঞ্জি হইয়া আসিল । মুণালের মনে হইতে লাগিল, তাহা পরলোকবাসিনী মাতার অঙ্গসৌরভই যেন তাহার পরিভাক্ত পরিচ্ছদগুলি হইতে বাহির হইতেছে। মাকে তাহার মনে পড়ে না, শুধু একটা ছায়ামূৰ্ত্তি মধ্যে মধ্যে তাহার স্মৃতিতে ভাসিয়া উঠে, হয়ত সেটি মায়েরই ছবি । মামীমার কাছে শুনিয়াছে, মায়ের মুখ আর দেহের গঠন ভারি স্বন্দর ছিল আমন চোখ নাকি গ্রামে কাহারও ছিল না। রং অর্থ ফরসা ছিল না। বাক্সটিতে থান আট নয় শাড়ী, দুটি লেশ-বসানো জাম, রঙীন সেমিজ গোটা দুই তিন, তা ছাড়া টুকিটাকি আরও কয়েকটি সোর্থীন জিনিষ। পল্লীযুবতীর বিশ বছরের জীবনের সঞ্চয়, কতই আর বেশী হইবে ? একটি আধখান এসেন্সের শিশি, ভিতরের এসেন্স জলের মত ফিক হই। গিয়াছে, একটি তরল আলতার শিশি, একটি কাগজের মোড়ক, তাহাতে গোলাপী পাউডার । উহা শৈলজার বিবাহের সময় কেনা। সিন্দুর-কৌটা দুইটি রহিয়াছে। .