পাতা:প্রবাসী ভাদ্র ১৩৪৪ সংখ্যা ৫.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

マラi了 স্বামীদের ‘হেঁসো’–খেজুরগাছের গলা কাটবার জন্তে ধটি ইস্পাতে তৈরি অন্ত্র—এই এরা ।” হুটুবাবু এবার সরকারী কৰ্ম্মচারীবৃন্দের দিকে হস্ত প্রসারিত ইরিয়া বুঝাইয়া দিলেন, এটা বলা হইতেছে তাহাদিগকে । “খেজুরগাছের কাছে রস আদায় করতে হ’লে হেঁসো না হ'লে হয় না। হেঁসো চালালে গল গল ক'রে মিষ্ট রসে খেজুরগাছ কলসী পূর্ণ ক’রে দেয়। আজ তেমনই এক মুsল দে আমাদের বিলাতী পান-দেওয়া কাঞ্চননগরী ষ্ট্রেদে এই ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব বাহাদুরের কল্যাণে এ চাকলার লোকে পেয়েছে, তাতে তাদের বুকফাটা তৃষ্ণার ধানিকট নিবারণ হবে। এ জন্যে হেঁসো এবং খেজুরগাছ ছু দুরূদকেই ধন্যবাদ দিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করলাম।” -- হুটুৰাৰু বসিলেন। কিন্তু করতালিধ্বনি বিশেষ উঠিল না, মার কদুটা অবোধ ছেলে সোৎসাহে হাততালি দিয়া উঠিল। এতক্ষণে সভাস্থ সকলে হাতের উপর বারকয়েক হাত নাড়িলেন, কিন্তু শব্দ তাহাতে উঠিল না। তার পর সভাপ্রাদণ নিস্তক, সকলেই কেমন অম্বাচ্ছন্দ্য বোধ a.sizলেন। সমস্ত সভাটা বায়ুপ্রবাহহীন মেঘাচ্ছন্ন ইরিত্রির মত ক্লেশকর হইয়া উঠিয়াছে। মুখুজে বাবুরা আথ ছেট করিয়া রুদ্ধ রোযে অজগরের মত ফুলিতেছিলেন। কোন মতে সভা শেষ হইয়া গেল, অভ্যাগতরা সকলে বিদায় স্ট্রং গেলেন, তার পর মুখুজের মাথা তুলিলেন। মাথ৷ দিলেন বিষধর অজগরের মতই--কুটু মোক্তারকে ধ্বংস পরিবার প্রতিজ্ঞা করিয়া তাহারা আপন আপন অন্দরে প্রবেশ করিলেন । 皋 * * সংবাদটা কিন্তু কুটুবাবুর নিকট অজ্ঞাত রহিল না, যথাসালে রামপুরে বসিয়াই তিনি কঙ্কণার সংবাদ পাইলেন। বৃদ্ধ যুদেফবাবুই তাহাকে সংবাদটা দিলেন, কথাটা গুহ্যরই স্থানে আসিয়া পৌঁছিয়াছিল। সংবাদ শুনিয়া হুটুৰাৰু দিয়া হাতজোড় করিয়া কাহাকে প্রণাম জানাইলেন। দেকবাবু বলিলেন, ‘বাবুদের প্রণাম জানাচ্ছেন না কি ? —ন, মহর্ষি দুৰ্ব্বাসীকে প্রণাম জানালাম । - হুটু মোক্তারের সওয়াল اج تگ وقا —তা হ’লে বলুন নিজেকেই নিজে প্রণাম করলেন, লোকে ত আপনাকেই বলে কলিযুগের দুৰ্ব্বাসা । কুটুবাবু বলিলেন, না। তা হ’লে কোন দিন লক্ষ্মীর দম্ভ চূৰ্ণ করবার জন্য সাগরতলে তাকে আবার একবার নির্বাসনে পাঠাতাম ।’ 복 + ++ হুটু মোক্তার ঐ এক ধারার মানুষ। তিনি ষে সেদিন বলিয়াছিলেন, “আমার মা আমার মুখে নিমের মধু দিয়েছিলেন সে কথাটা তাহার অতিরঞ্জন নয়, কথাটা না হউক তাহার ইঙ্গিতটা নির্জলা সত্য। বাল্যকাল হইতেই ঐ তাহার স্বভাব । প্রথম জীবনে বি-এ পাস করিয়া হুটুবাবু স্কুল-মাষ্টারী গ্রহণ করিয়াছিলেন। মনে মনে কামনা ছিল শিক্ষকতার একটি আদর্শ তিনি স্থাপন করিয়া যাইবেন । কিন্তু ঐ স্বভাবের জন্যই তাহার সে কামনা পূর্ণ হয় নাই, শিক্ষকতা পরিত্যাগ করিয়া মোক্তারী ব্যবসায় অবলম্বনে বাধ্য হইয়াছেন। - ঘটনাটা ঘটিয়াছিল এইরূপ : সে-বার পূজার সময় তাহার গ্রামের ধনী এবং জমিদার চাটুজেদের বাড়ীতে নিমন্ত্রণ খাইয়া আসিয়া তাহার লী কাদিয়া ফেলিয়া বলিল, ‘আর আমি কোথাও নেমস্তন্ন খেতে যাব না ।” ইটুবাবু কি একখানা বই পড়িতেছিলেন, তিনি মুখ তুলিয়া প্রশ্ন করিলেন—‘কেন ? এ 'কেন'র উত্তর তাহার স্ত্রী সহজে দিতে পারিল না, বলিতে গিয়া বার-বার সে কাদিয়া ফেলিল। বিরক্ত হইয়া হুটুবাবু বই বন্ধ করিয়া ভাল করিয়া উঠিয়া বসিলেন। প্রশ্নের পর প্রশ্ন করিয়া বহু কষ্টে অবশেষে জানিলেন, তাহার স্ত্রী দুর্ভাগ্যক্রমে গ্রামের বদ্ধিষ্ণু ঘরের সালঙ্কারা বধূদের পংক্তিতে খাইতে বসিয়াছিল, ফলে পরিবেশনের প্রতিটি দফগতেই সে অপমানিত হইয়াছে । যে ভাবে গৃহকত্রী ও দাসীর প্রতি প্রত্যক্ষেই দুই ধারার ব্যবহার হইয়া থাকে সেই ভাবেই সে দাসীর মত ব্যবহারই পাইয়াছে । ফুটুবাৰু কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিলেন । তার পর আপন মনেই বলিলেন—দুৰ্ব্বাস মিথ্যে তোমায় অভিসম্পাত দেয় নি! সে ঠিক করেছিল।