পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] দুঃখের কবি &సి ঃখের লাগি হয় যে বিবাগী, মুখ যে মিথ্যা কয়— সে জন সুধীরে করে পরিহাস-এ যে বড় বিস্ময় ! অশ্রু লুকাতে করে যে হান্ত, অন্ন-মভাবে চাতুৰ্ম্মাস্ত— সে যদি দুঃখ না করে স্বীকার—নাহি মানে পরাজয়, ভণ্ড বলিয়া গালি দিবে তারে ? –এ যে বড় বিস্ময় ! কাটার উপরে বক্ষ রাখিয়া গান গাহে যেই পাণী— কে বলেছে তার হয় নাক’ সুখ—সেই আনন্দ ফাকি ? সুখ-সন্ধান জীবনেরই পেশা— মুখেরই লাগিয়া দুঃখের নেশা ! তা যদি না হ’ত এক লহমায় চুরমার হ’ত নাকি স্বষ্টির এই রসের পেয়ালা—ধরা পড়িত না ফঁকি ? দুঃখের পরে যেজন বিমুখ, গায় যে মুখের গান— মিথ্যায় মজি’ করিতেছে সেই সত্যের অপমান ? খোড়া ছেলেটারে বক্ষে তুলিয়া যদি যাই তার খোড়া-পা ভুলিয়া, চুম্বন করি’ অধরে তাহার—মুখে গদগদ প্রাণ— সত্যের সে কি মহা অনিঃ, দুঃখের অপমান ? হায় গে। বন্ধু, সত্যসন্ধ, দুঃখের নেশাথোর ! বুঝিবে কি তুমি-এই জগতের সকলেই মুখ-চোয়! যার গানে আছে যত আনন্দ, নৃত্যচটুল চপল ছন্দ– হয় ত সে দুর্থী সব-চেয়ে, তার দুঃখের নাহি ওর ! ফঁাসির কয়েদী ওজনে বাড়িছে—ধষ্ঠ সে মুখ-চোর ! শুধু দুঃখের পসরা বহিয়া পথে যে হাকিয়া ফেরে— বিজ্ঞাপনের ছবিগুলা দেয় দেয়ালে দেয়ালে মেরে, ঃখের ভরা ভারী নয় তারি, হো যত বড় ছুখের ব্যাপারী— ঢাকের বাদ্যে হয় ভূকম্প, বাণী যায় বটে হেরে, তবু সে দুঃখ তারি বড় নয়—পথে যে হাকিয় ফেরে। দুঃখের রীজ-মন্ত্র যে জপে ছন্দে কি তার কাজ ? কি নব সত্য-হুক্ত রচিতে ধরে সে কবির সাজ ? ঃখের নেই ভাবের অভাব ?— দুঃখ-বিলাসী কবির স্বভাব পায় কোথা হ’তে — দুই হাতে বাজে কাব্যের পাখোয়াজ! দুঃখেও যদি রস পাওয়া যায়—কেন দুঃখীর সাজ ? মিথ্যার মোহে যদি কেহ কভু সত্যই সুখ পায়— তপ্ত বলিয়া ভাগ করে কেউ পাস্ত জুড়াতে চায়, ল’য়ে গোপালের পাবাণ-পুতলি বন্ধ্যার স্নেহ উঠে যে উথলি’— তার সেই সুখে কার না বক্ষ অশ্রুতে ভেসে যায় ? কঠোর সত্য স্মরণ করিয়া কে তারে শাসিতে চায় ? অথই দুঃখ-পাথারে ফুটেছে আনন্দ-শতদল ৷ অমানিশীথেও পুণিম-মুখে উথলে সিন্ধুজল ! মুচির বিরহ, মিলন ক্ষণিকতাই চেয়ে থাকে আঁখি অনিমিখ, হৃদয়ের খাক ফাগ করে করি মধু-উৎসব ছল— হেন মুখ যার সে কেন ফেলিবে দুঃখের আঁখিজল ? মিথ্যার মূলে ছঃথষ্ট আছে—মুখ যে দুখেরই ফুল । 鐵 ফুল ছিড়ে ফেলে’ মূল হেরি তার কেন হেন শোকাকুল ? জাল আর নেশা—বিষেরই ধৰ্ম্ম,

খ-মুখের একই যে মৰ্ম্ম । কবি চায় নেশা, জ্ঞানী ভয় পায়—পাছে করে ফেলে ভুল, বিষের জালায় অকবি অধীর, কবি যে হরষাকুল !

মুখের কাব্য লিখেছে ক’জন ?—সহজ নয় সে জানি, চরম দুঃখ পায় যেই তারি কণ্ঠে অমৃত-বাণী ! দুঃখের গাথা বিরাট্র-ছন্দ বোঝে সকলেই—নাহি যে ধনী, গান নয়—সে যে শব্দে অর্থে কাণ নিয়ে টানাটানি ! — দুঃখেরই মাঝে দুঃখ ভুলানো—যে-সে নাহি পারে জানি। সে যে উন্মাদ-সৰ্ব্ব অঙ্গে কত না চিতার ছাই ! কণ্ঠে গরল—তবু করোটর আসবে অরুচি নাই ! তারি ভালে যবে হেরি শশিলেখা, ঢুলঢুলু চোখে রাগারুণ-রেখা, শিয়রে গঙ্গ, অঙ্গারে রচি’ শয্যা সে একঠাই হৈমবতীর বিশ্ব-অধরে চাহিতে কুষ্ঠা নাই – তখনি যে বুঝি মুখ কারে বলে—দুঃখের কিবা নাম । কোন সে আগুনে পুড়িয়াও তবু মনোহর হল কাম ! বাণীর রন্ধে ভরে যেই শ্বাস - জানি সে বুকের কোন উচ্ছাস, নিজে নেশা করি আপরে মাতায়—কতখানি তার দাম জানি, ভালো জানি-চাহি না বন্ধু শুনিবারে তার নাম