পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>b-b。 ....--ഷൂ চাকর, পদস্থ ব্যক্তি। আপনার উপরেই এমন জুলুমটা করলে--আমাদের ত হাতে হাত কড়া লাগিয়ে রুলের গুতো মারতে মারতে রাস্তা দিয়ে ছড় ছড় করে টেনে নিয়ে যাবে।” হরগোবিন্দ বাবু একটি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন– “আচ্ছ। তবে থাক।” “প্রণাম হই মশায়।” বলিয়া বাবু দুইটি প্রস্থান করিলেন । হরগোবিন্দ বাবু তখন একাই ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের কুঠার দিকে ছুটলেন। সাহেব সে সময় টেনিসের পোষাক পরিধান করিয়া, র্যাকেট খানি হাতে, বাইসিক্লে ক্লব অভিমুখে যাত্রার উদ্যোগ করিতেছেন। বারান্দায় সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ হইল । হরগোবিন্দ বাবু সেলাম করিয়া দাড়াইলেন। সাহেব জিজ্ঞাসা করিলেন—“কি বাৰু ?” “মহাশয়, আজ আমার উপর দ্বারোগ বদনচন্দ্র ঘোষ বড় অত্যাচার করিয়াছে। খানাতল্লাসীর ভাল করিয়া—” সাহেব বাধা দিয়া বলিলেন—“আপনার দুই ছেলে সাহেব-মারা মোকৰ্দমায় আসামী না ?” “আজ্ঞা ছ। দারোগা মিথ্যা চক্রান্ত করিয়া তাহদিগকে আসামী করিয়াছে। অদ্য প্রভাতেই—” শুনিয়া চক্ষু রক্তবর্ণ করিয়া সাহেব চীৎকার করিয়া êáôå—'How* dare you ! gÈ fra পরে আমার কাছে আপনার ছেলেদের বিচার, আজ আপনি আমাকে মোকৰ্দমা সম্বন্ধে biassed করিয়া দিতে আসিয়াছেন ?” এই কথা বলিয়া, বাইসিক্লে উঠিয়া সাহেব বো করিয়া বাহির হইয়া গেলেন । হরগোবিন্দ বাবু একটি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া ধীরে ধীরে বাসায় ফিরিয়া আসিলেন । ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ । সন্ধ হইল। অন্তঃপুরের মধ্যে ডাক্তার বাৰু স্ত্রী কস্তাগণের নিকট বসিয়াছিলেন। একে পুত্র দুইটি বিনা কারণে কারাবদ্ধ, তাহার উপর এই অপমান, লাল,— সকলেই আজ-বড় বিষঃ। প্রবাসী । ............م. -8.حمWikitanvirBot (আলাপ)"******"--"* [ ৮ম ভাগ। | সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইল। এখনও আজ ਸਮਾਂ | বন্দোবস্ত হইতেছে না। কাহারও ক্ষুধা নাই-য়ে । কিছু থাইবে না। ডাক্তার বাবুর বড় মাথ৷ ক্রমে তিনি মেঝের উপর বিছানা পাতিয়া শয়ন করিলেন। কন্যাটি পায়ে হাত বুলাইয়া দিতে লাগিল। বস্থাত্ | পাথার বাতাস করিতে বসিলেন । এমন সময় বাহিরে কে ডাকিল—“ডাক্তার বাবুডাক্তার বাবু।” শিউরতন বাহিরে গেল। ফিরিয়া বলিল—“এঞ্জে রোগী আছে—বোলাহাট এসেছে।” ডাক্তার বাবু বলিলেন—“আজ আমার শরীর অম্বন্ধ। যেতে পারব না বল। অদ্য ডাক্তার নিয়ে যাক।” শিউরতন গিয়া তাহাই বলিল । অৰ্দ্ধঘণ্টা কাটিল। আবার কে ডাকিল—“ডাক্তার বাৰু | —ডাক্তার বাবু।” শিউরতন আবার আসিয়া বলিল—“ঐ লোকঠো আবা এসেছে। বলে ডাংদার বাবুর সাথ ভেট না করে স্থা যাব না।” ডাক্তার বাবু বলিলেন—“আমি ত উঠতে পারি নে— আচ্ছা বাবুকে এইখানে নিয়ে আয় ।” বধু, কন্যা উঠিয়া গেলেন। লোকটি আসিয়া ডাক্তা বাবুকে প্রণাম করিল। বলিল—“বড় বিপদ। আপনি না গেলে নয় ।” - “কার ব্যারাম ?” লোকটি চুপ করিয়া রহিল। “কার ব্যারাম হয়েছে ? কি ব্যারাম ?” "সে আর কি বলব! কোন মুখেই বা বলি " ডাক্তার বাবু একটু আশ্চর্য হইয়া বলিলেন—“আপনি কে ?” “আমি থানার রাইটার কনেষ্টবল। আমার নাম . হারাধন সরকার। দারোগ বাবুর বড় ব্যারাম। আজ মে কাওটা হয়ে গেছে, তার জন্তে তিনি লজ্জায় মরে আছেন। তার উপর এই বিপদ ।” “কি ব্যারাম ?” “বুকে মাথায় ভয়ানক যন্ত্রণা। আপনি না গেলেই নয়। | | ৪র্থ সংখ্যা । ] ডাক্তার বাবু বলিলেন—“আমাকে কেন ? আর কি সক্তার নেই ?” মূলী বাবু তখন পকেট হইতে একশত টাকা বাহির করিয়া ডাক্তার বাবুর পায়ের কাছে রাখিয়া দিলেন— বুলিলেন—“দয়া করুন।” টাকা দেখিয়া ডাক্তার বাবু জলিয়া উঠিলেন। একটু উঠিয়া বসিয়া বলিলেন-“টাকার লোভ দেখাতে এসেছেন ? সকলেই কি পুলিসের মত অর্থপিশাচ ?—লক্ষ টাকা দিলেও আমি যাব না। উঠন—আপনার পথ দেখুন।” টাকাগুলি উঠাইয়া লইয়া, অধোবদনে মুন্সী বাবু প্রস্থান করিলেন। বন্ধু, কন্যা প্রভৃতি আবার আসিয়া তাহার গুশ্ৰুষায় মনোনিবেশ করিলেন । রাত্রি নয়টা বাজিল। গৃহিণী বলিলেন—“একটু গরম দুধ এনে দেব ?" ডাক্তার বাবু বলিলেন—“দাও।” গৃহিণী পাকশালায় প্রবেশ করিয়া দুধ গরম করিতে লাগিলেন। এমন সময় খিড়কী দরজায় একখানি গাড়ী আসিয়া দাড়াইল । পরক্ষণেই ঝির সহিত একটি যুবতী প্রবেশ করিলেন । তাঁট বলিলেন—“গিীমা কোথা?” "কে গা তোমরা ?” বি বলিল—“উনি বদন দারোগার পরিবার।” সঙ্গে যুবতাটি গৃহিণীর পদযুগল জড়াইয়া ধরিলেন। গৃহিণী পা ছাড়াইবার চেষ্টা করিয়া বলিলেন—“কেন— কেন?” যুবতী কাদিতে কাদিতে বলিলেন—“ম, আমার স্বামীর প্রাণ যায়। আমার হাতের নোয়া যাতে বজায় থাকে তা করুন।” গৃহিণী বলিলেন—“এমন ব্যারাম ?” “ই মা। ডাক্তার বাবু বলেছেন অন্ত ডাক্তার কেন নিয়ে যায় না। তা মা,—তার ব্যারাম অন্ত ডাক্তারে বুঝবে না ত বাচাবে কেমন করে। এইখানে কি খেয়ে গেছেন, সেই থেকে এমন হয়েছে।” সঙ্গে গৃহিণী বলিলেন—“এখানে কি খেলেন ? এখানে ত কিছু খান নি।” যুবতী বলিলেন--“আমায় একবার ডাক্তার বাবুর কাছে হাতে হাতে ফল । כא"לג নিয়ে চলুন। তিনি আমার বাপ—এ সময় আমার লজ্জা নেই।” গৃহিণী ইহঁাকে হরগোবিন্দ বাবুর কাছে লইয়া গেলেন। যুবতী ডাক্তার বাবুর পা জড়াইয়া ধরিয়া বলিলেন–“বাবা আমায় রক্ষা করুন।” গৃহিণী সব কথা বুঝাইয়া বলিলেন। যুবতী তখন বলিলেন—“তিনি বলছিলেন থানাতল্লাসী করবার সময় ঔষধের আলমারিতে একটা ব্রাণ্ডির বোতল ছিল, ব্রাণ্ডি মনে করে তিনি এক চুমুক খেয়েছিলেন। এখন তার সন্দেহ হচ্চে সেটা ব্রাণ্ডি নয়, কোনও বিষ টিষ।” একথা শুনিয়া ডাক্তার বাবু বলিলেন—“ঔষধের আলমারিতে ব্রাণ্ডির বোতল ?” - শুনিবামাত্র ডাক্তার বাবুর মুখ শুষ্ক হইল। তিনি যুবতীকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন—“আপনি কি গাড়ীতে এসেছেন ?” “ई।” “তবে আমি ঐ গাড়ীতে থানায় চল্লাম। আপনি এখানে অপেক্ষা করুন । গাড়ী ফিরে এলে আপনি যাবেন ।” - - যুবতী উঠিয়া দাড়াইয়া, সজলনেত্রে বলিলেন—“বাবা, আমার কপালের সিদূর থাকবে ত?” ডাক্তার বাবু বলিলেন—“সে ঈশ্বরের হাত মা।” বলিয়া তিনি ঔষধ ও যন্ত্রাদি লইয়া কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই নিষ্ক্রান্ত হইয়া গেলেন। o o সারা রাত্রি জাগিয়া ডাক্তার বাবু চিকিৎসা করিলেন। । সে যাত্রা দারোগ রক্ষা পাইল । o যথাসময়ে সাহেব-মারা মোকৰ্দমা নিম্পত্তি হইয়া গেল। । প্রমাণাভাবে অজয় ও সুশীল থালাস পাইল। অন্ত সকলের ছয় মাস করিয়া কারাদণ্ডের হুকুম হইল। - শ্ৰীপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়। - * *