পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯২ উত্তর দিলাম এই যে, লোকের শুনিয়া শিথিবীর বয়স অতীত হইয়া গিয়াছে, তাই তাহারা শুনিয়া শিখিতে পরাভূখ।” ॥১৷ তুমি যাহা বলিলে—সবই সত্য ; কিন্তু তথাপি ঐ বিষয়টির সম্বন্ধে একটা বিষম ধন আমার মনে উপস্থিত হইয়াছে—সেটা’র একটা মীমাংসা লাe প্রয়োজনীয় ; কথাটা এষ্ট –মনুষ্য যখন বিপথে পদার্পণ করিতে উদ্যত হয়, তখন, কচি বয়সে মাতা কিম্বা ধাত্রী তাহাকে ক্রোড়ে তুলিয়া বিপদ হইতে রক্ষা করে ; পঠদ্দশায় শিক্ষক তাহাকে সছপদেশ দিয়া বিপদ হইতে রক্ষা করে ; কিন্তু যে ব্যক্তি অন্তের সৎপরামর্শ শুনিয়া চলিতে ভার বোধ করে, সে ব্যক্তি যদি কুবুদ্ধির পরামর্শ শুনিয়া বিপথে পদার্পণ করিতে উষ্ঠত হয়, তবে কে তাহাকে আসন্ন বিপদ হইতে রক্ষা করিবে ? ২ আমাদের দেশের একটি পুরাতন শাস্ত্রবচন এই যে, “ধৰ্ম্মে রক্ষতি রক্ষিতঃ” ধৰ্ম্মকে যে রক্ষা করে, ধৰ্ম্ম তাহাকে রক্ষা করে। গৃহক্ষেত্রে পিতামাত কচি বালকের জীবনের নিয়ামক, শিক্ষাক্ষেত্রে গুরু বয়ঃপ্রাপ্ত বালকের মনের নিয়ামক, কৰ্ম্মক্ষেত্রে বৃদ্ধি বিষয়ী লোকের কৰ্ম্মের নিয়ামক ; এ তে দেখিতেই পাওয়া যাইতেছে। এটাও তেন্নি দেখা চাই যে, কুশিক্ষা যেমন শিক্ষা নামের যোগ্য নহে, কুবুদ্ধি তেন্নি বুদ্ধি নামের যোগ্য নহে। স্ববুদ্ধিই বুদ্ধি, আর, ধৰ্ম্মবুদ্ধিই স্ববুদ্ধির প্রধানতম আদর্শ। কৰ্ম্ম করিবার বস্তু ; ধৰ্ম্ম, ধরিয়া থাকিবার বস্তু। কৰ্ম্ম, चूंकि দাড় ; ধৰ্ম্ম, বুদ্ধির হাল । কৰ্ম্মক্ষেত্রের বিষয়ী লোকেরা যখন বিপথে পদার্পণ করিতে উষ্ঠত হয়, তথন, তাহারা আসন্ন বিপদ হইতে রক্ষা পাইতে পারে—কেবল যদি তাহারা ধৰ্ম্ম-বুদ্ধির কথায় কর্ণপাত করে ; তাহ যদি না করে, তবে আর নিস্তার নাই । ॥১॥ ধৰ্ম্ম, বুদ্ধির হাল, তাহ তো বুঝিলাম ; কিন্তু কর্ণধার হাল ফিরাইবে কোন দিক বাগে ? কুল বাগে অবত। তবেই হইতেছে যে, কুলের ঠিকানা-নির্দেশ করা সৰ্ব্বাগ্রে আবশ্বক। দাড়, তুমি বলিতেছ কৰ্ম্মকে, হাল বলিতেছ ধৰ্ম্মকে, ইহা শুনিয়া আমি পরম আনন্দ লাভ করিলাম ; কুল তুমি বলিতেছ কাহাকে, সেইটিই এখন জিজ্ঞাস্ত। • o কুল, আমি বলি, পুরুষাৰ্থ । পুরুষাৰ্থ, প্রবাসী । [ ৮ম ভাগ। م، م.،..., م<. م.........................................

স্বাধীনতা, স্বরাজ্য, মুক্তি, পদ বটে। फ्रांत्विप्ने-क्तिद्ध तत्र একই। মনুষ্য-পক্ষী যখন আপন পক্ষে ভর করিয়া प्लेप्लिएर শেখে, উড়িতে শিথিয় আপনি আপনার নেতা হয় ; তখন সৰ্ব্বাঙ্গ-সুন্দরী ধৰ্ম্মবুদ্ধি স্বাধীনতার মুক্ত অরণ্যের প্রতি । অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া তাহাকে আহবান করে, আর, কুঞ্জ পাপ-বুদ্ধি ক্ষণিক মুখের স্বর্ণ-পিঞ্জরের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ । করিয়া তাহাকে আহবান করে। এক শ্রেণীর পক্ষী অধিদেবতার আহবান শুনিয়া মুক্তির মুক্ত অরণ্যের প্রতি লক্ষ্য করিয়া স্বপথে চলে, আর এক শ্রেণীর পক্ষী উপদেবতার আহবান শুনিয়া ক্ষণিক মুখের স্বর্ণ পিঞ্জরের প্রতি লক্ষা করিয়া বিপথে চলে। মনুষ্য যখন মানসক্ষেত্র হইতে বিদ্যা বুদ্ধি সংগ্ৰহ করিয়া কৰ্ম্মক্ষেত্রে স্বপদে ভর দিয়৷ দাড়ায়, তখন সে আপনাকে চালাইবার ভার আপন হস্তে টানিয়া লই৷ স্বাধীন হইতে ইচ্ছা করে। কিন্তু ইচ্ছা করিলেইতো-আর স্বাধীন হওয়া যায় না। স্বাধীন হইতে হইলে স্বাধীনতার যোগ্যতা লাভ করা চাই। যাহার স্বাধীনতার যুক্ত অরণ্যের প্রতি লক্ষ্য স্থির রাখিয়া স্বপথে চলেন তাহার স্বাধীনতার যোগ্যতা লাভ করেন, আর, যাহারা ক্ষণিক মুখের স্বর্ণ পিঞ্জরের প্রতি লক্ষ্য নিবদ্ধ করিয়া বিপথে চলেন, তাহারা লক্ষ্যভ্রষ্ট এবং লক্ষ্মীভ্রষ্ট হইয়া স্বাধীনতার অযোগ হইয় পড়েন। সুপথ-যাত্রীর প্রাণপণ চেষ্টায় স্বাধীনতার যোগ্যতা উপার্জন করেন, কাজেই তাহারা অতীষ্ঠ দল লাভে কৃতকাৰ্য্য হ’ন। বিপথ-যাত্রীরা গাছে না উঠতেই এক কাধি’র জন্য আগ্ৰহাম্বিত হ’ন, কাজেই অভীষ্ট ফলে বঞ্চিত হন। পুরুষার্থের কুলে পৌছিতে হইলে তাহার প্রকৃষ্ট উপায় কি—তাহ বলি শোন :– ( ১ ) কূলের প্রতি লক্ষ্য নিবদ্ধ করিয়া ঠিক পথে হাল বাগাইয়া ধরিয়া থাকিয়া স্বাধীনতার যোগ্যতা লাভ করা চাই । (২) রীতিমত বিস্কা শিক্ষা এবং কাজ শিক্ষা করির মাঝ পথের বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করিতে পারিবার মতো উপযোগ্যতা লাভ করা চাই । স্বাধীনতাও যা, স্বারাজ্যও তা, একই ; তা’র সাক্ষীস্বাধীন-স্ব +অধীন অর্থাৎ আপনি আপনার অধীন, স্বরাজ = স্ব + রাজ অর্থাৎ আপনি আপনার ब्रांछ। ৪র্থ সংখ্যা । ] ऋश्न उीदार्थ অবিকল সমান। যাহারা স্বাধীনতা এবং স্বারাজ্যের কাঙ্গালী, তাহদের, দুইটি বিষয় সৰ্ব্বদা স্মরণে জাগ্রত রাখা কৰ্ত্তব্য। (১) ঈশ্বরের,অধীনতা স্বাধীনতা’র সোপান; সেীরাজ্য (অর্থাৎ মঙ্গলরাজা ) স্বারাজ্যের সোপান ; ধৰ্ম্মবন্ধন মুক্তির সোপান। (২) স্বেচ্ছাচার স্বাধীনতার বিপরীত পথ, নৈরাজ্য (অর্থাৎ অরাজকতা) স্বারাজ্যের বিপরীত পথ, উচ্ছম্বলতা মুক্তির বিপরীত পথ। এই দুইটি বিষয় সৰ্ব্বদা স্মরণে জাগ্রত রাখা কর্তব্য। স্বারাজ্য কিছু আর আমাদের পোষা কুকুর নহে যে, তাহাকে আমরা ডাক দি’বা মাত্র তৎক্ষণাৎ অগ্নি সে দৌড়িয়া আসিয়া আমাদের পদলেহন করিতে থাকিবে ! স্বারাজ্য লাভ করিতে হইলে একদিকে চাই ধৰ্ম্মকে ধরিয়া থাকিয়া স্বারাজ্য-ভোগের যোগ্যতা লাভ করা, আর একদিকে চাই রীতিমত জ্ঞান এবং কাজ শিক্ষা করিয়া বিধিমত প্রকারে অভীষ্ট সাধন | করিতে পারিবার মতো উপযোগ্যতা লাভ করা । সৌভাগ্যশালী জাপানীরা তাহাই করিয়াছে ; আর সেই জন্য— তাহারা যে কার্য্যে হাত দিতেছে, তাহাতেই সোণা ফলিতেছে। তাহার পরিবর্তে তাহারা যদি অন্তর্দাহের উত্তেজনায় অথবা দুষ্ট সরস্বতীর কুমন্ত্রণায় ঐক্কপ যোগ্যতা এবং উপযোগ্যতা লাভ করিবার পূৰ্ব্বেই ইউরোপীয় ভল্লুকের প্রতি গুলিগোলা চালাইতে আরম্ভ করিত, তাহা হইলে তাহার সিংহ ব্যাঘ্র ভল্লুকের নথের আঁচড়ে এবং দাতের কামড়ে ধনে প্রাণে মারা যাইত, তাহাতে আর সন্দেহ মাত্র নাই। জাপানীরা তাছাদের এই নিজ-বুদ্ধিসস্থত নুতন উন্মুমের প্রথম হইতে শেষ পর্য্যস্ত ধৰ্ম্মকে কেমন অপরাজিতচিত্তে রক্ষা করিয়া আসিয়াছে—তাহা তো আর কাহারে দেখিতে বাকি নাই ! তাহারা রাগের মাথায় চীন রাজ্যকে স্থারথার করিয়া দিতে পারিত—তাহ তাহার করে নাই ; উণ্ট আরো তাহারা চীনদিগকে সংশিক্ষা প্রদান করিবার জন্য যত্নের ক্রট করিতেছে না। তাহার কনগ্রেস্বরদিগের * স্থায় আপনা-আপনি'র মধ্যে কামৃড়াকাম্ড়ি, আঁচড়াস্বাছড়ি এবং সাটুসি করিয়া জাতীয় অধঃপতনের দিব্য একটা জমকালে সোপান গাথিয়া তুলিতে পারিত—তাহ 8 দেখিয়া শিখিব কি ঠেকিয়া শিখিব ? তাহার করে নাই; উন্ট আরো তাহারা প্রভূত ধন >నలి ঐশ্বৰ্য্য ব্যয় করিয়া, আপনাদের মধ্যে যাহাতে বিবাদ বিসখাদের চিহ্নমাত্রও না থাকে, তাহার যথাবিহিত উপায় অবলম্বন করিতে স্বল্পমাত্রও কালবিলম্ব করে নাই। রুষীয় বন্দীদিগের প্রতি শক্ৰচিত নিষ্ঠুর ব্যবহার করিতে পারিত, তাহা না করিয়া বন্ধচিত যত্ন সমাদর এবং সম্মানপ্রদর্শন করিতে কিছুমাত্র ভারবোধ করে নাই। এরূপ জাতির জয় হইবে না তো আর কাহার জয় হইবে ? আমাদের দেশের এই যে একটি পুরাতন বাক্য “যতোধৰ্ম্মস্ততোজয়?” ইহা অব্যর্থ বেদবাক্য । ধৰ্ম্মই যোগ্যতা’র নিদান ; আর ডারুইনের কথা যদি সত্য হয়, তবে যোগ্যতাই জয়ের নিদান । ধৰ্ম্মনিষ্ঠ এবং কৰ্ত্তব্যপরায়ণ জনসাধারণই স্বারাজ্যলাভের যোগ্যপাত্র। জাপানের অধিবাসীরা ধৰ্ম্মকে দৃঢ়মুষ্টিতে ধরিয়া রহিয়াছে দেখিয়া বিজয়লক্ষ্মী দ্রুতপদে অগ্রসর হইয়া আপন হস্তে জাপানের গলে জয়মাল্য পরাইয়া দিলেন “চিরজীবী হও” আশীৰ্ব্বাদ করিয়া। আমাদের দেশের স্বারাজ্য-পন্থাদিগকে, আমি তাই জোড়হস্তে বলি– “দেখিয়া শেখে। নচেৎ ঠেকিয়া শিখিতে হইবে ।" ঠেকিয়া শেখা যে কিরূপ সৰ্ব্বনেশে শেখা তাহা যে জানে সেই জানে। বিপথ-যাত্রী যখন উঠতে পড়িতে, বসিতে দাড়াইতে, বা থাইয়া খাইয়া চৈতন্ত লাভ করে, তখন সে বিপদে পড়িয়া বলিবার সময় বলে “এ পথে বাপ-মা বলিয়া ডাকিলে কেহ সাড়া দিবার নাই” অথচ চলিবার সময় চলে—কি সৰ্ব্বনাশ— সেই পথেরই আলেয়া'র পশ্চাৎ পশ্চাৎ ! ফল কথা এই যে, বিপথে চলা যখন যাহার প্রাণের সামিল হইয়া হাড়ে মিশিয়া যায়—নূতন-লব্ধ জ্ঞানের নূতন পথে চলা তখন তাহার পক্ষে মৃত্যু তুল্য। একে তো এই দশা—তাহার উপরে যদি আবার বিপথযাত্রীর দুৰ্ব্বদ্ধি ঘাড়ে চাপে, তবে আর রক্ষা নাই ! তখন সে হিতবক্তার মুখপানে খটমটু করিয়া চাহিয়া দন্ত সহকারে বলে—“আমি বিনাশের পথে যাইব—আমার খুলী! তুমি বলিবার কে ? আমি তোমার হিতবাক্য শুনিতে চাহি না!" ইহার উত্তরে ভদ্রলোকটি কিই-আর তাহাকে বলিবে—“খুব তুমি বাহাদুর" বলিয় আপন মনে ইষ্ট দেবতার নাম জপিতে থাকে। । o