পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૦ ૦ সিদ্ধ হইল না, তখন বড়লাট দেশীয় কলের কাপড়ের উপর আভ্যন্তরিক (excise) শুল্ক স্থাপন করিলেন-যাহাতে দেশীয় কাপড় ক্রয় করা ক্রেতাদের পক্ষে দুঃসাধ্য হইয় উঠে। ভারত অনাহারে মরিতেছে ; কিন্তু বড় বড় কারখানাওয়ালাদের বেশ উদর পূৰ্ত্তি হইতেছে। এই স্বার্থপরতাকে, উচ্চভাবের বড় বড় কথা দিয়া ঢাকিবার আবখ্যক কি ? Lord শতকরা ৫ টাকা হারের প্রবেশ-শুষ্ক রহিত করিবার সময় যে চমৎকার হেতু প্রদর্শন করিয়াছিলেন তাহা আমার বেশ স্মরণ হয়। “ভারতের কল-কারখানার তরুণ শিল্প বড় শীঘ্ৰ বাড়িয়া উঠিতেছে, উহার এই অতিদ্রুত বৃদ্ধি নিবারণ করা আবশ্যক।” এই আশীৰ্ব্বাদমন্ত্র উচ্চাৰণ করিয়াই তিনি দেশীয় কারখানাগুলার অস্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করিলেন। এ যেন একজন দস্থ্য কোন পথিককে রাস্তায় পাকুড়া ও করিয়া বলিতেছেঃ–“ভাই আমি দেখছি, তুমি বড় মোটাচ্চ—তোমার ड्रो िबाङ्ख्यिा बाहेप्डप्झ–७ बज्रङ्गे झः८श्रत विरुग्न..ञागि Salisbury নিৰ্ম্মল করিয়া তোমার রোগটা সারাইয়া দিব—এস । তোমার ভূড়ী গালিয়া দিই—আর তোমার ঐ টাকার থলিয়াটা ...” কিন্তু তবু ভারত কিছুই বেশী দাবী করিতেছে না। ভারত শুধু নম্রভাবে বলিতেছে,-ইংরাজ তুমি যে আমাদিগকে রক্ষা করিবার ভাণ করিতেছ এ মিথ্যা ভাণ ছাড়িয়া দেও, ম্যাঞ্চেষ্টারের কাপড়ের ন্যায়, ভারতে ভারতীয় দ্রব্যজাতকেও নিঃশুল্ক করিয়া বিক্রয়ের পথ মুক্ত করিয়া দেও। বাগনী আরও চাহেন যে, রুড়কী ও লওনের এঞ্জিনিয়ারিং কালেজ যাহা ভারতের অর্থে পরিপোষিত হইতেছে তাহার দ্বার দেশীয়দের জন্যও মুক্ত রাখা হয়। এ কথা কি গ্রাহ হইবে ? না। এ সকল মোটা মোটা বেতনের কাজ, ইংরাজ এঞ্জিনিয়ার, ইংরাজ কাৰ্য্য পরিচালকদের জন্য রক্ষিত, এই সকল মোটা বেতনের কাজ পাইবার জন্য ইংলণ্ডের লোক দাপাদাপি করিয়া বেড়াইতেছে! এই সকল কাজের গুপ্ত ভিক্ষুক অনেক, কিন্তু অল্প লোকই নিৰ্ব্বাচিত হইয়া থাকে। এই নিৰ্ব্বাচনের কত প্রার্থী, কত ক্ষুধিত লোক, কত উমেদার কাজ পাইবার জন্য প্রতীক্ষা করিতেছে, তাহার ঠিকানা নাই! প্রবাসী । [ ৮ম ভাগ। তারপর, ভারত, শাসন-ব্যয় ও সামরিক-বায়ের ভাৱে একেবারে মুইয়া পড়িয়াছে। ভারতের তহবিল-ইংলণ্ডের । যুদ্ধ-ভাণ্ডার ; ভারতের গড়খাই ছাউনি হইতেই ইংলণ্ড আফগানিস্থানের উপর, তিব্বতের উপর, চীনের ੇ ব্ৰহ্মদেশের উপর, এমন কি ঈজিপ্টের উপর আক্রমণ করিয়া থাকেন। যে ভারত চীরবসন পরিধান করিয়া আছে, অনাহারে মরিতেছে, সেই ভারতকে এই সকল আমীর-চালের রাজপুরুষদের জন্য, –এই সকল রাজপুরুষদের বিলাসসামগ্রীর জন্য, অর্থ যোগাইতে হইবে ... উহার প্লেগের অছিলা করিয়াও কি ভারতকে শোষণ করিতেছে না? উহারা ভারতের ব্যয়ে, ইংলণ্ড श्झेल ডাক্তার আনিতেছে, রোগ-সেবকদিগকে আনিতেছে— দেশের এই ভীষণ অবস্থা, প্রতিবিধানের উপায় কি? একটুও কালবিলম্ব না করিয়া, উদ্যমের সহিত ইহার একটা উপায় অবলম্বন করা আবশ্বক, শুধু ভাসা-ভাসা উপায় নাএমন উপায় অবলম্বন করা আবখ্যক যাহা মূল পর্যন্ত স্পর্শ করিতে পারে। খাজনা কমাইতে হইবে, কৃষিবিভাগে একজন সচিব নিযুক্ত করিতে হইবে, অধিক পরিমাণে ব্যয় সঙ্কোচ করিতে হইবে, দেশীয় পণ্যকে অন্তত দেশের মধ্যে অবাধ করিয়া দিতে হইবে । এই বক্তৃতাটি একটা দলিল বিশেষ। তাই ৫ | বক্ত তাটিকে আমি এত প্রাধান্য দিতেছি। বর্তমানকা । দেশের যে সকল দাবী দাওয়া আছে, বাগ্মী সংক্ষেপে সেই সমস্তের উল্লেখ করিলেন। তিনি বর্তমান সমস্ত গুলির সমালোচনা করিলেন, এবং কোন প্রকার উগ্রত প্রচণ্ডত কিম্বা উত্তেজনা প্রদর্শন না করিয়া বেশ শান্তভাবে ঐ সকল সমস্ত সম্বন্ধে দেশীয় লোকের কি অভিপ্রায় তার ব্যক্ত করিলেন। তাহার এই বক্তৃতাটি রাজভক্ত মিতবাদী ভারতের মনের কথা । সভাপতি সভার কার্য্য-তালিকা ধরিয়া কাজ আরম্ভ করিয়া দিবার জন্য আহ্বান করিলেন, এবং সভার নির্ধারিত প্রথম প্রস্তাবটি পাঠ করিলেন। সভায় বক্ত। অনেক, শ্ৰোতাও অসংখ্য। প্রতিনিধির সংখ্যা এক সহস্ত্রের অধিক। সভার বিচিত্র উপাদান, সময় সংক্ষিপ্ত ; সভ স্থা বৎসরের মধ্যে শুধু একবার সকল বিষয় ছুইয়া যান । কিন্তু এলোমেলো ভাবে নহে, অস্পষ্ট ভাবে নহে – আমাদের পালেমেণ্ট-অঙ্গনে এই দৃষ্টান্ত অনুকরণের যোগ্য। গ্রন্থের বিভিন্ন জাতির মধ্যে অন্তর্বিবাদ হইবে, বিচ্ছেদ টবে, ঝগড়া বাধিবে বলিয়া যাহারা ভবিষ্যৎবাণী করিয়ালিন, তাহারা তাহদের ভবিষ্যৎবাণীর মূল্য আদায় করিবার জন্য সভায় উপস্থিত ছিলেন । অগ্রপশ্চাৎ-বিবেচনার ভাব হইতেই হউক, কিম্বা আত্মমর্যাদার ভাব হইতেই হউক, বক্তারা নাটকীয় ধরণের ঙ্গিভঙ্গী, রাজা-উজীর মারার ভঙ্গী, বিরক্তিজনক ভঙ্গী ন্ত্রে পরিহার করিয়া ছদ্মবেশী বিপক্ষদলের সকল চেষ্টা ও মংলব ব্যর্থ করিয়া দিয়াছিলেন। এই বিষয়ে একটা কমতা ছিল। তবে, এই সভার মধ্যে কোন দল বেশী বেণী দাবী করে, কোন দল একটু বেশী ভীরু, উহাদের ধ্যে কাহারা "দক্ষিণ পক্ষ” কাহারা “বাম পক্ষ”—উহাদের মধ্যে প্রকৃতিগত তারতম্য কিরূপ, তাহা বোঝা কঠিন মহে। নিৰ্দ্ধারিত প্রস্তাবগুলা ঐকমত্য-সহকারে গৃহীত হইল ; দামিতিতে এরূপ ব্যাপার অনন্তসাধারণ । সকল ফ্লোই প্রস্তাবের সমর্থন কিংবা পোষকতা করিতে লাগি। তবে কি, অমুকুলবাদীদিগকে বাছাই করিয়া প্রতিকূলবাদীদিগকে বহিষ্কৃত করা হইয়াছিল ?— -ঠাহীও নহে। দ্বার অবারিত ছিল । সমস্ত ভারতের লোক, এক পরিবারের মত, দ্বার রুদ্ধ না করিয়া, আপনাদের স্বাধসম্বন্ধে চিন্তা ও আলোচনা করিতেছিল। ভারত কথা কহিতেছেন—আর সমস্ত রাখাল-বালক যেমন কৃষ্ণের বংশীধ্বনি শুনিয়া চারিদিক হইতে আসিয়া জোটে, সেইরূপ ভারতের সমস্ত প্রতিনিধি এখানে সমবেত হইয়াছেন। ঐ সভা অনেকগুলি বাগমী আছেন, ভাল ভাল বক্তা আছেন, ভাল কথা-কহিয়ে লোক আছেন, তাহারা অতীব দক্ষতার সহিত ইংরাজি বলেন। একজন ইংরাজ আমাকে বলিতেছিলেন ;—“উহার বেশ ইংরাজি বলে, আমাদের অপেক্ষাও ভাল বলে ; আমাদের ভাষা, শদের মুখে, একটা অজ্ঞাতপূৰ্ব্ব সৌন্দৰ্য্য লাভ করে।” "াদের ইংরাজিতে কেমন একটা তরলতা, কেমন একটা শের জলন্ত উচ্ছাসের ভাব আছে। তবে, উহাদের | | | (t ভারতের মহারাষ্ট্রীয় সভা। ミo> ইংরাজি উচ্চারণে একটু বৈদেশিক টান আছে। বক্তাদের মধ্যে, চন্দাবকারের বক্তৃতা সৰ্ব্বাপেক্ষা মধুর ও র্তাহার বস্তৃতায় হিন্দুত্ব সৰ্ব্বাপেক্ষা বেশী প্রকাশ পায়। তবে, বাঙ্গালীরা তাহারও উপর টেক্কা দিয়াছে র্যাডিক্যাল বক্তা ব্যানর্জি শ্রোতৃবর্গকে মাতাইয়া তুলিলেন। তাহার বক্তৃতায় লাহোরের ছাত্রবৃন্দ খুব হাততালি দিতে লাগিল। ব্যানজি খুব উৎসাহের সহিত দাঙ্গার’ মধ্যে প্রবেশ করিলেন, একবার বামে, একবার দক্ষিণে, গবর্ণমেণ্টের জঙ্গলে, অনবরত কুড়ালীর ঘা মারিতে লাগিলেন। ইনি ইংরাজসরকারের একজন ভূতপূৰ্ব্ব কৰ্ম্মচারী—ইংরাজসরকার অন্যায় করিয়া ইহঁাকে কৰ্ম্মচ্যুত করে। পুণার সংবাদপত্র-পরিচালক তিলকৃ,—একজন পণ্ডিতলোক, কাজের লোক, একজন উৎসাহী “জাতীয়-পন্থী,” alist) ইনি সম্প্রতি জেল হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছেন, ইহার তীব্র লেখনীই ইহাকে কারাগারে নিঃক্ষেপ করিয়াছিল। এখন ইনি লোকের পূজার পাত্র। এই সকল প্রবীণ রর্থীদের পাশে ছেলের দল, শিক্ষানবীসের দল। ইহাদের গায়ে এখনও দুধের গন্ধ ছাড়ে । ইহার আলঙ্কারিক ধরণে, মৰ্ম্মস্পর্শী ভাষায় ‘মরিয়া’ হইয়া লোকদিগকে উদ্বোধিত করিতে লাগিল । ইংরাজি-অনভিজ্ঞ কোন কোন ব্যক্তি স্বদেশী ভাষায় বক্তৃতা করিল। এই বক্তৃতার ভাষা সকলেরই খুব পরিচিত, ইহাতে হান্তরস আছে, চলিত প্রবাদ ও প্রবচনে ইহা পরিপূর্ণ,—এই বক্তৃতায় সভাগুদ্ধ লোক প্রফুল্পিত হইয়া উঠিল ; কেহবা উর্দুতে, কেহব গুজরাটীতে, কেহব বাঙ্গলায় বক্তৃতা করিল ; এই ভাষাবৈচিত্রের মধ্যে ইংরাজ, ভারতের অস্তৃত ঐক্য উপলব্ধি করিতে পারেন। যে সকল প্রস্তাব ঐকমত্য-অনুসারে সভায় গৃহীত হইল তাহা নিয়ে বিবৃত করিতেছি। বুঝিতেই পারিতেছ, এই সকল প্রস্তাবের মধ্যে অশরীরী প্রেমের ভাব ( platonic) কিছুই নাই। কোথায় কে ফুসফুস করিল, কোথায় কে টু-শব্দ করিল, বাতাসের গতি কোন দিকে, লোকমতের কিরূপ পরিবর্তন হইতেছে,—ইংরাজ সংলগভাবে সৰ্ব্বদাই কাণ পাতিয়া রহিয়াছেন। ইংরাজের অনেক বিধিব্যবস্থাই এই কথা সপ্রমাণ করিয়াছে। ইহা বেশ । (nation