পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১ ) ঋগ্বেদের প্রথম মণ্ডলের ২২শ স্থক্তের ঋষি মেধাতিথি বলিতেছেন :– ত্ৰাণিপদ বিচক্রমে বিষ্ণুর্গোপী আদাভাঃ। ধারয়ন। বিষ্ণু রক্ষক, কেহ তীহাকে আঘাত করিতে পারে না। তিনি ধৰ্ম্ম-সমূহ ধারণ করিয়া তিন পদ পরিক্রম করিয়াছিলেন। এস্থলে স্পষ্টই প্রতীয়মান হইতেছে, ঋষি ধৰ্ম্মশব্দ দ্বারা বিশ্বের সনাতন নিয়মসমূহ (the eternal laws of the universe ) RTF FfŘrztg= | (২) জৈমিনি বলেন, চোদনীলক্ষণোইর্থে ধৰ্ম্মঃ। অর্থাৎ আচার্যাপ্রেরিত হইয়া যাগাদির অনুষ্ঠান করাই ধৰ্ম্ম। এখানে ধৰ্ম্ম বলিতে বেদোক্ত কৰ্ম্মকাও বুঝাইতেছে। (৩) মহর্ষি কণাদ বৈশেষিক দর্শনের প্রারস্তে ধৰ্ম্মের যে সংজ্ঞা দিয়াছেন তাহা এই— যতোহভু্যদয়নিঃশ্ৰেয়সসিদ্ধি: স ধৰ্ম্মঃ। এই স্বত্র দুই প্রকারে ব্যাখ্যাত হইয়াছে। (ক) যাহা তত্ত্বজ্ঞান দ্বারা মুক্তিলাভের হেতু, তাহাই ধৰ্ম্ম। অথবা (থ) যাহা মুখ ও মোক্ষের সাধন, তাহাই ধৰ্ম্ম । এই শেষোক্ত ব্যাখ্যায় মুখ শব্দ লৌকিক অর্থে গ্রহণ না করিয়া উচ্চতম আধ্যাত্মিক আনন্দের অর্থে গ্রহণ করা যাইতে পারে। উভয় ব্যাখা হইতেই দেখা যাইতেছে, এখানে ধৰ্ম্ম বলিতে এমন কিছু বুঝাইতেছে যাহা কৰ্ম্মকাণ্ড হইতে স্বতন্ত্র। ( $ ) গীতার তৃতীয়াধ্যায়ে শ্ৰীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলিতেছেন, শ্রেয়ান স্বধৰ্ম্মে বিগুণ: পরধৰ্ম্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ । [ মুঠুরূপে অনুষ্ঠিত পরধৰ্ম্ম অপেক্ষ অঙ্গহানি সহ অনুষ্ঠিত স্বধৰ্ম্মই শ্রেষ্ঠ ]। এখানে ‘ধৰ্ম্ম’ শব্দ দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের ভিন্ন ভিন্ন কৰ্ত্তব্য উদ্দিষ্ট হইয়াছে। যেমন ক্ষত্রিয়ের ধৰ্ম্ম যুদ্ধ, ব্রাহ্মণের ধৰ্ম্ম অহিংসাদি, ইত্যাদি। ( 4 ) বৌদ্ধশাস্ত্রসমূহেও ধৰ্ম্মশব্দের ভূরি ভূরি প্রয়োগ দেখা যায়। যথা, ধৰ্ম্মপদের প্রথম শ্লোকেই বুদ্ধদেব বলিতেছেন। মনোপুৰঙ্গম ধৰ্ম্ম মনোসেটঠা মনোময়। ( ধৰ্ম্মসমূহ মন হইতে উৎপন্ন, মনই শ্রেষ্ঠ, তাহারা মনোময় )। কিন্তু বৌদ্ধ লেখকগুণ ধৰ্ম্মশব্দ কোন অর্থে ব্যবহার করিয়াছেন, সে সম্বন্ধে বিলক্ষণ মতভেদ আছে। অতো ধৰ্ম্মাণি প্রবাসী। 'পূৰ্ব্বক পরধন গ্রহণ করেন না ; যাহার দেহ শুদ্ধ ; যিনি — -

  • সন্তোষে ধৃতিঃ । পরেণাপকারেকৃতে তস্ত প্রত্যপকারানাচরণং

[ ৮ম ভাগ । উপরে উদ্ধৃত শ্লোকের ল্যাটিন অনুবাদে Fausbo --- ধৰ্ম্ম শব্দের অর্থ করিয়াছেন, nature, স্বভাব বা প্রকৃতি। Max Mullerএর মতে উহার অর্থ “আমরা যাহা” (All that we are). Rhys Davids (Buddhist India, p. 292) বলেন, সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষের পক্ষে to ofty, state 4's (What it behoves a man of right feeling to do;-or on the other hand, what a man of sense will naturally hold) । পালিভাষাবিং কোন কোন পণ্ডিত বলেন, ধৰ্ম্ম বলিতে বিধি বা নিয়ম (Laws) বুঝায়। (৬) ধৰ্ম্ম শব্দের কতকগুলি লৌকিক ব্যবহার আছে, তাহাও উল্লেখযোগ্য। যথা, কৰ্ত্তব্য ( পুত্ৰধৰ্ম্ম ), গুণ ( জলধৰ্ম্ম ), মনোবৃত্তি ( দয়াধৰ্ম্ম), আচার (বিধৰ্ম্মী= অনাচারী বা শাস্ত্ৰবিহিত আচার বর্জিত) ইত্যাদি। ( ৭ ) ময় ধর্মের দশ লক্ষণ নির্দেশ করিয়াছেন— ধৃতি:ক্ষমা দমোহস্তেয়ং শৌচমিন্দ্রিয়নিগ্ৰহ: | ধীবিদ্যাসত্যমক্রোধে দশকং ধৰ্ম্মলক্ষণং ॥ ৬ । ৯২ ৷ সন্তোষ, ক্ষমা, মনঃসংযম ( অথবা মনের অবিক্রিয়তা ), অচৌর্য্য, শুদ্ধতা, ইন্দ্রিয়নিগ্রহ, শাস্ত্রজ্ঞান, আত্মজ্ঞান, সত্য এবং অক্রোধ—ধৰ্ম্মের এই দশ লক্ষণ বা স্বরূপ * অর্থাৎ মনুর মতে ধাৰ্ম্মিক কে ?—যাহার চিত্তে সৰ্ব্বদা সন্তোষ বিরাজমান ; অপরে অপকার করিলেও যিনি প্রত্যপকার করেন না ; বিকারহেতু বিষয় নিকটে বর্তমান থাকিলেও যাহার মনোবিকার উপস্থিত হয় না ; যিনি অন্যায় ইচ্ছামাত্র বিষয়সমূহ হইতে ইন্দ্রিরদিগকে প্রত্যাহার করিতে পারেন ; যিনি শাস্ত্রজ্ঞ, আত্মজ্ঞানসম্পন্ন, সত্যবাদী ও ক্ষম। বিকারহেতুবিষয়সন্নিধানেইপ বিক্রিয়ত্বং মনসে দম:। মনসে দমনং দম ইতি সনন্দবচনং। শীতাতপালিম্বন্ধসহিষ্ণুত। ইতি গোবিন্দDBBSDD BBDDD BBBBBBB SBBBBS BBSBB পরধনাদি গ্রহণং স্তেয়ং তদ্ভিন্নমস্তেয়ম্। যথাশাগ্ৰং মৃজলাভাং দেহ শোধনং শৌচম (আহারাদিশুদ্ধিঃ—মেধাfতথি: )। বিষয়েভ্যশ্চক্ষুরাদিবারণমিত্রিয়নিগ্ৰহঃ । ( অপ্রতিষিদ্ধেস্বপি বিষয়েব প্রসঙ্গ:-মেধাতিধি: )। KBBBBBD DS DBBB BBSS S BBBBBBBDD ধীবিদ্যয়োর্ভেদঃ-মেধাতিথি: ) । যথার্থভিধানং সত্যম। ক্রোধহেতে সত্যপি ক্রোধামুৎপত্তিঃ গধ। এতদশবিধ ধৰ্ম্মশ্বরূপম-ফুল্লক। ১ম সংখ্যা | | কোস্ট-তিনি বাকি। পক্ষান্তরে এবিধ গুণবিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমরা “চরিত্রবান” বলিয়াও অভিহিত করিয়া থাকি। স্বতরাং মনুক্ত ধৰ্ম্ম সাধন, এবং চরিত্রের উন্নতি সম্পাদনে পুত্ব একই কথা। অথবা প্রকারান্তরে বলা যাইতে পারে, যিনি সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর, সমঞ্জীভূত চরিত্রলাভের প্রয়াসী তাহাকে মনু প্রদর্শিত গুণ সকলের অধিকারী হইবার জন্ত যত্ন করিতে হইবে। উপরে উল্লিখিত দুটা গুণের দুই একটা পরিত্যক্ত বা তাহাদের সহিত নূতন দুই একটা সংযোজিত হইতে পারে, কিন্তু মোটামুটী বলিতে গেলে, মমুবর্ণিত ধৰ্ম্মের সাধন, এবং চরিত্রের উন্নতির জন্য অধ্যবসায়, এই উভয়ের মধ্যে দিশেষ পার্থক্য নাই। অতএব দেখা যাক, চরিত্রের ভিত্তি কি। চরিত্রের ভিত্তি –(ক) দৈহিক সংগঠন (Physical organization) দেহ ও আত্মা লইয়া মানব। প্রাণহীন দেহ বা বিদেহী আত্মাকে আমরা মানুষ বলি না। আত্মা স্বয়ং সচ্চিদানন্দ ব্রহ্মের "লিঙ্গ বা প্রকাশ। কিন্তু তাহাকে দেহের সাহায্যে ধরাতে যাবতীয় ব্যাপার নির্বাহ করিতে হয়। এজন্য তিনি স্বয়ং জ্ঞানস্বরূপ হইলেও তাহাকে পদে পদে দেহের নিকট আত্মসমর্পণ করিতে হয়। মূল কথা এই। এখন, ইহার ব্যাখ্যা পূৰ্ব্ব ও পশ্চিম ভূখণ্ডে অবশু এক নহে। আমরা প্রথমে পাশ্চাত্য মত আলোচনা করিয়া পরে দেখাইতে চেষ্টা করিব, এদেশীয় মতের সহিত তাহার বিশেষ অনৈক্য নাই। দৈহিক অবস্থার উপর নানা প্রকার সদগুণ নির্ভর করে। মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ, পাকস্থলী, রক্ত, স্নায়ু, মাংসপেশী প্রভৃতির ক্রিয়ার তারতম্যানুসারে বিভিন্ন ব্যক্তিতে বিভিন্ন চরিত্র ব্যক্ত হয়। সুস্থ, স্বাভাবিক দেহধারী ব্যক্তির চরিত্র, অমুস্থ অস্বাভাবিক aেbnormal) দেহবিশিষ্ট ব্যক্তির চরিত্র হইতে পৃথক হইবে, ইহাতে বৈচিত্রা কি ? কিন্তু সচরাচর যাহারা সুস্থ বা স্বস্থ বলিয়া গণ্য, তাহদের একের চরিত্র দৈহিকসংগঠনানুসারে অপরের চরিত্র হইতে স্বতন্ত্র, ইহা অনেকে স্বীকার করিতে চাহেন না। এজন্ত এ বিষয়ট একটু বিস্তৃতভাবে আলোচনা করা প্রয়োজন। যিনি মুস্থ—অর্থাৎ যাহার শোণিত বিশুদ্ধ, পরিপাক শক্তি প্রখর, মস্তিষ্ক শীতল, অঙ্গপ্রতঙ্গের ক্রিয় অব্যাহত, ধৰ্ম্ম-সাধন বা চরিত্রের উন্নতি সম্পাদন। .দেখিতে স্বত্র না হইলেও কুৎসিৎ ছিলনা। w . — ১৫ . তিনি স্বভাবতঃই প্রফুল্ল, উৎসাহী, আশাশীল, অনলস, পরোপকারী, এবং ক্রোধশুষ্ঠ। পক্ষান্তরে, যাহার পাকস্থলী দুৰ্ব্বল, যকৃতের ক্রিয়া নিস্তেজ, তাহার শোণিত দূৰিত, মস্তিষ্ক উত্তপ্ত, সুতরাং, তিনি মুনিদ্রায় বঞ্চিত, এবং এজন্ত রুশ্ন স্বভাব। এরূপ ব্যক্তি হয় ত অন্তর্নিহিত রোগযন্ত্রণায় নিয়ত ক্লেশ পাইতেছেন, সুতরাং তাহার স্বভাবতঃই শরীর সঞ্চালনে অরুচি জন্মিয়াছে। হয়ত এইরূপে ক্রমে তিনি অপরের অপেক্ষ নিজের কথা ভাবিতেই অধিক অভ্যস্ত হইয়াছেন। অথচ আমরা ইহার কিছুই না জানিয়া বা জানিয়াও ভুলিয়া যাইয়া এরূপ ব্যক্তিকে অলস, অনুৎপাহী, স্বার্থপর বলিয়া তিরস্কার করিয়া থাকি। চরিত্রের উপর দেহের প্রভাব এত অধিক যে দুই সহোদর একই মাতৃস্তন্তে লালিত পালিত হইয়াও ক্রমে সম্পূর্ণ ভিন্নপ্রকৃতির হইয়া দাড়ায়। আমরা তাহ দেখিয়া বিস্থিত হই, কিন্তু উভয়ের দেহ তন্ন তন্ন করিয়া7 পরীক্ষা করিলে এই বিস্ময় অন্ততঃ কিযুৎপরিমাণে মন্দীভূত হইতে পারে। কতকগুলি গুণ বা দোষ বাল্যকাল হইতেই প্রকাশিত হইতে থাকে। ভারতীয় শাস্ত্রকারগণ তাহার যে কারণ নির্দেশ করিয়াছেন, তাহ পরে উল্লিখিত হইবে। পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের মতে দৈহিক সংগঠন তাহনর অন্যতম কারণ। একটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাইতেছে। - ইং ১৮৮৬ সনে বার্লিনেমের প্রাইডার (Mischneider) নাম্নী দ্বাদশ বর্ষীয় একটী ছাত্রীর বিচার হয়। তাহার আকৃতিতে অস্বাভাবিক কিছুই দেখা যায় নাই এবং সে তাহাকে বিচারক যাহা যাহা জিজ্ঞাসা করেন, সে ধীর, প্রশান্ত, অবিচলিত ভাবে সে সমস্তের উত্তর দেয়। তাহার কাহিনী এই—“আমার নাম মেরি প্লাইডার। ১৮৭৪ সনের ১লা মে বার্লিনে আমার জন্ম হয়। আমার পিতার কথা আমার কিছুই মনে নাই, অনেক দিন হইল তাহার মৃত্যু হইয়াছে। আমার একটী ছোট ভাই আছে। গত বৎসর আমার ছোট বোনের মৃত্যু হইয়াছে। আমি তাহাকে বড় ভালবাদিতাম না, কারণ মা তাহাকে আমার চেয়ে বেশী আদর করিতেন। তিনি আমাকে দুৰ্ব্ব্যবহারের জন্ত অনেক বার চাবুক মারিয়াছেন—আমি তাহ চুরী করিয়াও র্তাহাকে