পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"ל צ9א হয়। অধ্যাপকের গ্রন্থপ্রচারের ফলেই যে এরূপ অলৌকিক ঘটনা সংঘটিত হয় তাহ অনায়াসেই বুঝা যাইতে পারে। কিন্তু তিনি স্বয়ং এ বিষয় স্বীকার না করিয়া লিথিয়াছেন যে, জনসাধারণের মন উত্তরোত্তর স্ত্রী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করত: তদভিমুখেই ধাবিত হইতেছিল ; এমন সময় তাহার স্ত্রী-শিক্ষা’ পুস্তক প্রকাশিত হওয়ায় তিনি সাধারণ মতের কার্য্যকরী শক্তির প্রয়োগ করেন মাত্র। এই সংস্কারের প্রথম ফল—“কোটো জো গান্ধা’ (উচ্চ বালিকা-বিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা ; প্রতি বৎসরই এই বিদ্যালয়ের ছাত্রীসংখ্যা বদ্ধিত হইতেছে। অতিরিক্ত বিস্ময়ের বিষয় এই যে, জাপানে বর্তমানকালে যতগুলি বালিকা-বিদ্যালয় বা কলেজ আছে, তাহাতে শিক্ষাধিনী সমস্ত বালিকার স্থান ংকুলান হইতেছে না। কাজেই সাম্রাজ্যের নানাস্থানে নানা উদ্দেশ্যে বে-সরকারী বালিকা-বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হইতেছে, স্ত্রী-পাঠ্য পুস্তক, সংবাদপত্র, মাসিক পত্রিকা প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে বালিকাদিগের মধ্যে বিতরিত হইয়া থাকে। এই ভাবে জাপানে স্ত্রী-শিক্ষার সুবর্ণ-যুগের আবির্ভাব হইয়াছে। দশ বৎসর হইল পূৰ্ব্বোক্ত অধ্যাপক তাহার চিরকল্পিত রমণীবিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে আগ্ৰহান্বিত হইয় উঠেন এবং এতজ্ঞদেশু সাধন মানসে তিনি টোকিও নগরের জনসাধারণের সমক্ষে তাহার মহকুদ্দেশ্য প্রকাশ করেন। ইহার অত্যয়কাল পূৰ্ব্বে তিনি তাহার সংকল্পিত কাৰ্য্য সাধন কল্পে মারকুইস ইটাে, মারকুইস সাইওলজি, কাউন্ট ওকুমা, ব্যারন উটুমুমি প্রভৃতি মনস্বীর সহানুভূতি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন এবং তাহারা তাহাকে সাধ্যানুসারে সাহায্য করিতেও প্রতিশ্রত হইয়াছিলেন। সেই ভরসাতেই নরসি ১৯০১ খৃষ্টাব্দের ২০শে এপ্রিল তারিখে জাপানের বর্তমান রমণী-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন। কেবল জাপানে নহে, সমগ্র প্রাচ্য দেশের মধ্যে ইহাই সৰ্ব্বপ্রথম রমণী-বিশ্ববিদ্যালয় বলিয়া জাপানবাসীরা শ্লাঘা প্রকাশ করিয়া থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটী বিভাগ আছে ;–(১) হোম বা গৃহস্থালী বিভাগ (Home Departement); (s) জাপানী-সাহিত্য বিভাগ ; এবং (৩) ইংরেজি সাহিত্য বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার প্রথম প্রবাসী। เ...............................) डेक्रोल इंडेशन नश, डेशन अलिअँडाब भी ! বিভাগে ৩০টা করিয়া ছাত্রী জুটবার আশা করিা: ছিলেন ; কিন্তু অচিরেই ছাত্রীর সংখ্যা বাড়িয়া যায়, প্রথম দুই বিভাগে একশত করিয়া এবং তৃতীয় বিভাগে পঞ্চাশটী, মোট আড়াই শত ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্র?ি | হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন Preparatory বিভাগে তিন | শত ছাত্রী ভর্তি হয়। সুতরাং প্রথম বৎসরেই বিশ্বী বিদ্যালয়ের ছাত্রীর সংখ্যা পাচ শত হয় এবং দ্বিতীয় বৎসরে উহা আট শতে এবং তৃতীয় বর্ষে এক সহস্ত্রে পরিণত হয়। ইহা হইতেই অনুমিত জাপ-জাতি বৰ্ত্তমান সময়ে স্ত্রী-শিক্ষার প্রতি কিরূপ অনুরাগী এবং জাপ বালিকারাও পাশ্চাত্য জ্ঞানাঞ্চয়ে নিমিত্ত কিরূপ উৎসুক । তৎপর একটা গুরুতর প্রশ্ন এই যে, বৰ্ত্তমান কালে যে ভাবে স্ত্রী-শিক্ষা প্রদত্ত হইতেছে তাহাই সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর এবং ঐ ভাবেই চলিতে থাকিবে, না ভবিষ্যতে উচ্চার শিক্ষাপ্রণালীর পরিবর্তন সাধন করিতে হইবে। একাল পর্য্যন্ত রমণীগণের মানসিক বা আধ্যাত্মিক উন্নতির প্রতি তাদৃশ দৃষ্ট না রাখিয়া কেবল শিল্প, সাহিত্যু ংগীত প্রভৃতি শাস্ত্রেই তাহাদিগকে পারদর্শিনী করিবার চেষ্টা চলিয়া আসিতেছে। ইহা বস্তৃত বড়ই ভুল। বৈজ্ঞানিক ও আধ্যাত্মিক দিক দিয়াও রমণী-হৃদয় বিকশিত ও পরিমাৰ্জ্জিন্ত করিতে হইবে; রমণীগণের আধ্যাত্মিক শিক্ষা কোন প্রকারেী ত্যাগ করিলে চলিবে না। রমণীগণের পর্য্যবেক্ষণ ও প্রয়ো" ক্ষমতা কর্ষিত হওয়া প্রয়োজন ; এইরূপ শিক্ষায় তাহলে মন গঠিত হইলে পর, তাহারা যে কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিলে তাহাতেই কৃতকাৰ্য্য হইতে পরিবে। যাহারা ভবিষ্যৎ স্ত্রী শিক্ষার নিমিত্ত দায়ী তাহার এই বিষয়টা বিশেষ বিবেচন৷ করিয়া দেখিবেন। *~. স্ত্রী-শিক্ষা বিষয়ে আর একটী বিষয় বিবেচা আছে। হইবে হে | iোর এই যে, উহা বালিকাদিগকে ভবিষ্যতে সংসারাশ্রমের কর্তব্য সমূহের প্রতি অমনোযোগিনী করিয়া তোলে। টু দোষ কি ভাবে পরিহার করা যায় এবং কি ভাবেই এই সমস্তার সমাধান হইতে পারে, তাহাই ভবিষ্যৎ চিন্তার বিষয় এবং জাপানের দ্যায় পাশ্চাত্য প্রদেশ ছেও এই সমস্ত আলোচিত হইতেছে। বিদ্যালয় যত ড়ে হইবে, তাহা হইতে বিপদের আশঙ্কাও তত বেশী বে। এই বিপদ যত দূর পরিহার করা যায়, তৎপ্রতি ষ্টি রাখিয়াই নরসি তাহার রমণী-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত এা পঞ্চশত ছাত্রী অবস্থান করে, তথাপি প্রথম হইতেই প্রত্যেক ছাত্রী নিজ নিজ গৃহের ষ্ঠায় তথায় স্কুল-জীবন অতিবাহিত করিয়া আসিতেছে । জাপানের ‘রমণী-বিশ্বস্থিালয়ের ইহাই বিশেষত্ব এবং সমগ্র দেশীয় সমাজ কর্তৃক প্তাহ প্রশংসিত। দৃষ্টান্ত স্বরূপ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শয়নাগারের উল্লেখ করা যাইতে পারে। জাপানের রমণী i শ্বিবিদ্যালয়ের বোর্ডিং গৃহে বোর্ডারদের শয়নাগারে সপ্তদশটা প্রশস্ত কক্ষ আছে ; প্রত্যেক কক্ষে ২৫টা ছাত্রীর বেশি কিবার ব্যবস্থা নাই। ছাত্রীরা শয়নাগারের ধাত্রীকেই জননীভূল্য এবং পরস্পর পরস্পরকে ভগিনীর ন্যায় বিবেচনা করে। রন্ধন, বস্ত্র-পরিষ্কার, টেবিল চেয়ার প্রভৃতি যথা স্থানে সংরক্ষণ, কক্ষ সুসজ্জিত করণ এবং গৃহ সম্বন্ধীয় সমুদয় কার্য্য এই বোর্ডার ছাত্রীগণকেই সম্পন্ন করিতে হয়। সুতরাং তাহদের প্রাত্যহিক জীবন গৃহ-জীবনের কথাই স্বরণ করাইয়া দেয় এবং গৃহ সুসজ্জিত এবং যথাস্থানে দ্রব্য সামগ্রী রক্ষা বিষয়ে তাহার ব্যাবহারিক শিক্ষা প্রাপ্ত হইতে থাকে। নরসি বলেন যে, তিনি এ বিষয়ে সম্পূর্ণ সফলকাম ইন নাই বটে, কিন্তু সুখের বিষয় এই যে তাহার চেষ্টা সম নাই এবং ঐ মহা সমস্ত সমাধানের উপযোগী কোন নূতন ভাব বা প্রণালী ভবিষ্যতে আবিষ্কার করিতে বালিকা-বিদ্যালয়গুলি এ ভাবে পরিচালন করা কর্তব্য যে, বালিকাদের স্কুল-জীবন কখনো যেন তাহদের গৃহস্থ অন্তরায় না হয়। বর্তমান বালিকা-বিদ্যালয় সমূহ দ্বার। একদিকে যেমন প্রভূত কল্যাণ সাধিত হইতেছে, অঙ্গ । দিকে উহা তেমনি নানা দোষের আকর ; এতন্মধ্যে প্রধান সক্ষম হইবেন এই আশায় তিনি পূর্ণ উৎসাহের সহিত চেষ্টা আসিতেছেন। যে ভাবেই হোক্–ভবিষ্যৎ শিক্ষার /প্রধান লক্ষ্য, বালিকাগণের স্কুল-জীবন ও গৃহজীবনের মধ্যে সামঞ্জস্ত বিধান করা ; তাহ নরসি করিতে পারিবেন লি আশা করেন। তিনি লিথিয়াছেন,—“আমাদিগকে করেন। যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ডিংএ বহুদূরদেশগত, জাপানের নারী-সমাজ । , - ○>。 আরো মনে রাথিতে হইবে যে, আমাদের স্কুলসমূহে যে সকল ছাত্রী প্রবেশ করে, তাহারা সকলেই জাপ-বালিকা, একটও অন্তজাতীয় নাই। এমতাবস্থায় তাহাদের শিক্ষাপ্রণালী ও উদ্দেশু স্থির করিতে হইলে, তাহদের অতীত সাহচৰ্য্য, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতের অভাব সমস্তই একত্রে বিবেচনা করিতে হইবে। বালিকাদের স্বশ্রেণীর উপযোগী স্বতন্ত্র শিক্ষার প্রয়োজন। বৈদেশিক ধৰ্ম্মপ্রচারকদিগের স্থায় বিজাতীয় শিক্ষা-প্রণালী প্রবর্তন করিয়া, ভ্রমে পতিত হওয়া আমাদের উচিত নহে ;—ইহাতেই শিক্ষাক্ষেত্রে তাহদের সমস্ত চেষ্ট পণ্ড হইতেছে । আবার ংকীর্ণচেতা ও ধৰ্ম্মান্ধ ব্যক্তিবর্গের সমর্থিত শিক্ষা-প্রণালীও গ্রহণ করা উচিত নহে। আমাদের নিজেদের যাহা ভাল তাহা রক্ষা করিয়া পাশ্চাত্য জাতিদের ভাল জিনিষ গ্রহণ করিতে হইবে। নিজের বিধিদত্ত শক্তির পূর্ণবিকাশ এবং বৈদেশিক ভগিনীবৃন্দের সৎগুণরাজি আয়ত্ত করিবার চেষ্ট— ইহাই জাপ-বালিকাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য হওয়৷ উচিত। - রমণী কেবল রমণীর ছায়ই শিক্ষিত হইবে না, পক্ষাস্তরে সে যে সমাজের একজন সভ্য এবং গ্রামের একজন অধিবাসী —তদুপযোগী শিক্ষণ তাহাকে দিতে হইবে। একাল পর্য্যস্ত জাপ বালিকাদিগকে যেরূপ শিক্ষা দেওয়া হইয়াছে, তাহ এই অংশে বড়ই অসম্পূর্ণ। এই শিক্ষার ফলে বালিকার গৃহকাৰ্য্য বিষয়ে পূৰ্ব্বাপেক্ষ কিঞ্চিৎ বেশি নিপুণা হইয়াছে বটে, কিন্তু সমাজের কার্য্যে তাহারা উপযুক্ততা প্রদর্শন করিতে পারে না। পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তির প্রতি যেমন একটা কৰ্ত্তব্য আছে, রমণীরা সমাজের নিকটও তদ্রুপ কৰ্ত্তব্যপাশে বদ্ধ,—এ চিন্তা বা ভাব এযাবৎকাল উপেক্ষিত হইয়া আসিয়াছে। সুতরাং রমণীম্বের ভবিষ্যৎ শক্ষা-প্রণালী নিৰ্দ্ধারণের সময় আমরা তাহাদিগকে প্রশস্ততর ভাবে দেখিতে চেষ্টা করিব এবং নারীগণ যে সামাজিক জীব, সাধারণ সমাজের প্রতি পরোক্ষ বা অপরোক্ষ ভাবে তাছাদের যে কৰ্ত্তব্য আছে, এ ভাব তাহাদের মনে প্রবেশ করাইতে প্রয়াস পাইব । আরে প্রশস্ততর ভাবে আমাদিগকে দেখিতে হইবে। আমরা রমণীগণকে কেবলমাত্র সামাজিক সভ্যরূপে বিবেচন৷