পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৩২ নিজেই জেলায় গিয়া হাজতে পুত্রের সঙ্গে দেখা করিলেন। ষষ্ঠীচরণ মাকে দেখিয়া ক্ষোভে রোধে উত্তেজিত হইয়া কহিল, “ম, জহর এই কাজ করেছে।” মা শাস্ত স্বরে কহিলেন, “বাবা, জহর তোর অবোধ ছোট ভাই। তার প্রতি তুই রুষ্ট হোস না। সে আমাদের ছেড়েছে বলে আমরা তাকে ছাড়তে পারি না। তুই আপন কৰ্ত্তব্য করেছিস, ফলের ভার ভগবানের উপর। যে পবিত্র বন্দে মাতরম্ নাম গ্রহণ করে’ তুই সেবাব্রত গ্রহণ করেছিস, তাতে নিৰ্য্যাতন-ক্লেশ সহ করবার জন্যে প্রস্তুত থাকতে হবে। তুই যদি হাসিমুখে সহ্য করতে পারিস, আমি আপনাকে ধন্ত মনে করব। আর এক কাজ তোকে করতে হবে, জহরকে বাচিয়ে তোর আত্মসমর্থন করতে হবে।”. ষষ্ঠীচরণ মার মহত্ত্বে মুগ্ধ হইয়া কহিল, “আত্মসমর্থন করতে গেলে জহরকে দোষী করা ছাড়া ত’ উপায় দেখি না।” মা অকম্প কণ্ঠে কহিলেন, “তবে তোর আত্মসমর্থনে কাজ নাই। কিন্তু নিরপরাধী বালকগুলির কি উপায় হবে ?” অমনি কতকগুলি কণ্ঠ বলিয়া উঠিল, "মা, আমরা তোমার কুপুত্র নই, আমরা একটুও ভয় পাই নি, আমরা কেউ কিছু বলব না, আদালত যা খুসি, তাই করুক।” দয়াঠাকুরাণী বলিলেন, “আশীৰ্ব্বাদ করি, বাপ সকল, এই হৃদয়বল লাঞ্ছনাতে দ্বিগুণিত হোক। যে মাকে বন্দন করে’ ব্রত গ্রহণ করেছ, তার মুখ উজ্জল কর।” & আজ ষষ্ঠীচরণের বিচার। এজলাস লোকীরণ্য । সরকারি উকিল যাহাকে যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন, সকলের একই উত্তর, “বলিব না।” আসামী পক্ষে উকিল বলিলেন, র্তাহার মক্কেলরা আত্মপক্ষ সমর্থন করিতে চাহেন না ; সাফাই সাক্ষীও দিবেন না। আদালতের যাহা খুসি করিতে পারেন। মজিষ্ট্রেট ফরিয়াদীপক্ষের সাক্ষীদের কথা বিশ্বাস করিয়া এবং জহর আলি দারোগার কৰ্ম্মপটুতার বিশেষ প্রশংসা করিয়া ষষ্ঠীচরণের ছয় মাস ও ৫ জন বালকের দুই - মাস করি। কারাদণ্ড বিধান করিলেন। অন্যাঙ্গ বালকের সনাক্ত করার গোলমালে ও প্রমাণাভাবে মুক্তি পাইল । প্রবাসী । SAMMSMSAASAASAASAAMSMMSMMSMMSMMSMMSMSMSMSMSMS [ ৮ম ভাগ। জহরলাল যখন উৎফুল্ল হইয়া গোফে চাড়া দিয়া থানা। ফিরিল, তখনই একখানি গরুর গাড়ী আসিয়া থানায় লাগিল। গাড়োয়ান গিয়া সেলাম করিয়া দারোগ সাহেবকে জানাইল, একজন স্ত্রীলোক তাহার সহিত দেখা করিতে আসিয়াtছন। জহর আলির মনটা আজ প্রফুল্ল ছিল ; সে তাড়াতাড়ি বাহিরে আসিয়া গাড়ীর সামনে দাড়াইল এবং গাড়োয়ান গাড়ীর মুখের পর্দা উঠাইয়া ধরিল। - জহর বিস্থিত হইয়া বলিয়া উঠিল, “মা !" গাড়ী হইতে নামিয়া দয়া দেবী বলিলেন, "ই বাৰ জহর, তোর মা। আমি তোকে তোর মায়ের বুকে ফিরিয়ে নিতে এসেছি।” এই মেহের আহবান জহরকে অভিভূত করিয়া ফেলিল। সে মার পদতলে কাদিয়া পড়িল, বলিল, “মা, এলে যদি তবে আর কিছু দিন আগে এলে না কেন ?” মা পদানত সন্তপ্ত পুত্রকে বুকে উঠাইয়া বলিলেন, "এর আগে এলে তোকে ফিরাতে পারতাম না ;-তুই মনে করতিস আমি বুঝি ষষ্ঠকে বচাবার কৌশল পেতেছিা ? আজ আমি পুত্রহীরা, আজ তোকে ফিরতেই হবে, আজ তা আর তোর মার স্নেহের শরিক নেই।” জহর ক্ষণেক চিন্তা করিয়া কহিল, “মা, আমি ফিৱৰ, আবার তোমার ছেলে হল ।” মা পুত্রকে বুকে চাপিয়া বলিলেন, "জহর মানে রত্ব; এতদিন আমি মণিহারা হয়ে ছিলাম।” জহর বিষাদের হাসি হাসিয়া বলিল, “ম, তুমি কি ভূলে গেলে যে জহরের আর এক মানে বিষ ? আমি ঢের জালিয়েছি, নিজে জলেছি। কিন্তু আর না, এবার মা তোমার কোলে ফিরব !” জহর পুলিশ সুপারিন্টেণ্ডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিল। সাহেব তখন জহরকে ইন্সপেকটর করিবার সুপারিশ লিখিতেছিল। জহর সাহেবকে পদত্যাগ পত্র দিল। সাহেব দেখিল কি এক প্রসন্ন দৃঢ়তা তাহার মুখে দীপ্তি পাইতেছে। চারু বন্দ্যোপাধ্যায়। পরম বিস্ময়ে অবাক হইয়া জহরের মুখের দিকে চাহিল, | ৬ষ্ঠ সংখ্যা । ] "س، بہت مبہم میۃ আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় মহাশয়ের গবেষণা । বর্তমান ভারতের কৃতী সস্তানদিগের মধ্যে, যে কয়েকজন বিদ্যা ও জ্ঞানে বিদেশে সমাদর প্রাপ্ত হইয়াছেন, তাহাদের কথা স্মরণ করিলে আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও জগদীশচন্দ্র ধস্থ মহাশয়ের নাম প্রথমেই মনে পড়িয়া যায়। যে বিজ্ঞান আজ সমগ্র জগতের কৰ্ম্মকাণ্ড ও ভাবচিস্তাকে আচ্ছন্ন করিয়া সেগুলিতে নূতন শক্তির যোজনা করিয়াছে, উভয়ে সেই বিজ্ঞানেরই গবেষণাতে জগদ্বিখ্যাত হইয়াছেন। বোধ হয় এই জন্যই ইহঁাদের নাম সৰ্ব্বাগ্রে মনে পড়িয়া যায়। ডাক্তার রায় এবং বসু মহাশয় জড়বিজ্ঞানের একই বিষয় লইয়া গবেষণা আরম্ভ করেন নাই। প্রাণী উদ্ভিদ এবং সজীব নিৰ্জীবের মূলগত পার্থক্য আবিষ্কারের জন্য ডাক্তার বসু মহাশয় গবেষণা আরম্ভ করিয়াছিলেন। ইহার ফলে জড় ও জীবতত্ত্ব যে নুতন মূৰ্ত্তি পরিগ্রহ করিবার উপক্রম করিতেছে, পাঠক তাহ অবশ্যই অবগত আছেন। ডাক্তার রায় মহাশয় এ পর্য্যস্ত কেবল রসায়ন শাঙ্গ লইয়া আলোচনা করিয়া আসিতেছেন। দুই বা ততোধিক বস্তু যে বিধানানুসারে পরস্পরের সহিত মিলিয়া পৃথক গুণবিশিষ্ট নানা পদার্থের রচনা করে, তাহাই এই শাস্ত্রের আলোচ্য বিষয়। বিজ্ঞানের নানা শাখাপ্রশাখার মধ্যে বোধ হয় রসায়ন শাস্ত্রই অতি প্রাচীন। প্রাচীনতার দাবি সত্ত্বেও আধুনিক বৈজ্ঞানিকদিগের হাতে পড়িয়া ইহার অনেক পরিবর্তন হইয়াছে। শত শত বৎসর নানা পরীক্ষা করিয়া পদার্থের বিচিত্র সংযোগ বিয়োগ সম্বন্ধে যে সকল নিয়ম প্রাচীন পণ্ডিতগণ লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন, আধুনিক বৈজ্ঞানিকদ্বিগের স্বগ্ন পরীক্ষায় তাহার অনেক ভ্রম ধরা পড়িয়াছে, এবং পুরাতনের স্থানে অনেক নূতন নিয়ম বসাইতে হইয়াছে। সুতরাং গত শতাব্দীতে জড়বিষ্ঠার এই বিভাগের যে সকল নুতন তত্ত্ব জানা গিয়াছে, তাহ লইয়া রসায়নশাস্ত্রকে একপ্রকার নূতন করিয়াই গড়িয়া তুলিতে ইয়াছে। দুই বা ততোধিক বস্তুর সংমিশ্রণে যে সকল মৃত্তন পদার্থের উৎপত্তি হইতে পারে, পূৰ্ব্বপণ্ডিতগণ তাহাদের শ্রেণীবিভাগ করিয়া রাখিয়াছিলেন। আধুনিক আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় মহাশয়ের গবেষণা। HIV ASA SSASAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSASMSMMSMSMS রসায়নবিদগণের স্বগ পরীক্ষায় তাহাতেও ভ্রম ধরা পড়িয়াছে। তাছাড়া পূৰ্ব্বপণ্ডিতগণ যে সকল পদার্থের অস্তিত্বে সন্দেহ প্রকাশ করিয়া গিয়াছিলেন, এখনকার বৈজ্ঞানিকগণ সেগুলিকেও পরীক্ষাগারে প্রস্তুত করিয়া প্রত্যক্ষ দেখাইতেছেন। বলা বাহুল্য ইহাতে রসায়ন শাস্ত্রের প্রসার খুবই বাড়িয়া চলিতেছে, এবং রাসায়নিক সংযোগ বিয়োগের প্রকৃত নিয়মও ক্রমে প্রকাশিত হইয়া পড়িতেছে। ডাক্তার রায় মহাশয় তাহার গবেষণা দ্বারা ংযোগ বিয়োগের নিয়মগুলিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করিবার অনেক সহায়তা করিয়াছেন, এবং পূৰ্ব্বপণ্ডিতগণ বহু চেষ্টাতেও যে সকল যৌগিক পদার্থের সন্ধান পান নাই, রায় মহাশয় সেগুলিকে পরীক্ষাগারে প্রস্তুত করিবার কৌশল দেখাইয়া, রসায়নশাস্ত্রকে সম্পূর্ণতার দিকে অনেকটা অগ্রসর করাইয়াছেন। আজও তাহার গবেষণা শেষ হয় নাই। প্রতি বৎসরেই তাহার আবিষ্কৃত দুই চারিটি নূতন তত্ত্ব রসায়নশাস্ত্রের পুষ্টিবৰ্দ্ধন করিতেছে। ডাক্তার রায় মহাশয়, তাহার গবেষণা দ্বারা এপর্য্যন্ত যে সকল তত্ত্বের আবিষ্কার করিয়াছেন, তাহার আমূল বৃত্তান্ত একটি প্রবন্ধের বিষয়ীভূত করা দুঃসাধ্য। তা’ ছাড়া সেগুলি এতই জটিল যে, তাছাদের বিবরণ বিশেষজ্ঞ পাঠক ব্যতীত অপর কাহারে প্রতিকর না হইবারই সম্ভাবনা। আমরা এই প্রবন্ধে ডাক্তার রায় মহাশয়ের আবিষ্কৃত নানা তত্ত্বের মধ্যে কেবল কয়েকটি প্রধান বিষয়ের বিবরণ প্রদান করিব। গন্ধকদ্রাবকের (Sulphuric Acid ) সহিত তাম্র লৌহ ও নিকেল প্রভৃতি কতকগুলি ধাতু মিশিয়া একজাতীয় যৌগিক পদার্থ উৎপন্ন করে। তুতে বা তুখ । এবং ইরাকশ প্রভৃতি যৌগিকগুলি এই জাতিভুক্ত পদার্থ। এই সকল বস্তু পরস্পরের সহিত মিশিলে, তাহদের মধ্যে রাসায়নিক ক্রিয়া চলিতে আরম্ভ করে এবং ইহার ফলে কয়েকটি নূতন যৌগিকের উৎপত্তি হইয়া পড়ে। ডাক্তার রায় মহাশয় সৰ্ব্বপ্রথমে এই ব্যাপারটি লইয়া গবেষণা আরম্ভ করিয়াছিলেন। ইহাতে তুতেজাতীয় জিনিসের পরস্পর সংমিশ্রণ ও বিশ্লেষণ সম্বন্ধে - অনেক নূতন তথ্য জানা গিয়াছিল। গত ১৮৮৮ সালে