পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আবশ্বক হয় না। S)ჯა8 বৈজ্ঞানিক সারসংগ্রহ। ১। শক্তি প্রয়োগের নূতন ব্যবস্থা । প্রকৃতির নানা উচ্ছৃঙ্খল শক্তিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করিয়া ঘরের কাজে লাগানো, আজকাল বিজ্ঞানচর্চার একটা প্রধান উদ্দেশু হইয়া দাড়াইয়াছে। নিছক্‌ জ্ঞানোন্নতির ইচ্ছায় অতি অল্প লোকেই বিজ্ঞানচর্চা করিয়া থাকেন। বৈজ্ঞানিকগণ কয়লা ও কাষ্ঠাদির অন্তর্নিহিত শক্তির সাহায্যে সুকৌশলে বিদ্যুৎ ও বাষ্প উৎপন্ন করিয়া যে সকল ইন্দ্ৰজাল রচনা করিতেছেন তাহ প্রকৃতই বিস্ময়কর। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করিবার জন্য এখন আর কয়লা পোড়াইবার বড় বড় জলপ্রপাত ও পাৰ্ব্বত্য নদীর ধারায় কল পাতিয়া চলিষ্ণু জলের শক্তিতে কলে বিদ্যুৎ উৎপাদিত করা হইতেছে, এবং শত শত মাইল দূরবর্তী সহরগুলির কলকারখানার কাজ সেই বিদ্যুতের শক্তিতে চলিতেছে। আমাদের দেশেও কাশ্মীর ও মান্দ্রাজ অঞ্চলের দুইটি জলপ্রপাতকে ঐ প্রকারে শৃঙ্খলিত করিয়া কাজে লাগাইবার জন্ত আয়োজন হইতেছে। পবনদেব বহুকাল হইতেই নিগড়বদ্ধ হইয়া রহিয়াছেন। নৌ-চালন ও ছোটথাটাে কলের পরিচালনা অতি প্রাচীন কাল হইতে বায়ু দ্বারা স্বসম্পন্ন হইয়া আসিতেছে। কিন্তু বায়ু জিনিসটার গতিবিধি এত অনিশ্চিত যে, ছোটখাটো দুই একটা কাজ ছাড়া বৃহৎ ব্যাপারে ইহাকে লাগাইবার স্বব্যবস্থা আজও উদ্ভাবিত হয় নাই । স্বৰ্য্যের তাপ ও জোয়ার ভাটার জলোচ্ছ, সে যে বিশাল শক্তি নিহিত আছে, আজ কাল তাহারি প্রতি বৈজ্ঞানিকদিগের দৃষ্টি পড়িয়াছে। তাপ ও আলোকের আকার পরিগ্রহ করিয়া যে শক্তি স্বৰ্য্য হইতে পৃথিবীতে আসিয়৷ পতিত হয়, তাহার অতি অল্পই সংসারের কাজে লাগে। ইহার অধিকাংশই পৃথিবী মহাশূন্তে বিকিরণ করিয়া নষ্ট করে মাত্র। চন্দ্র স্বর্য্যের আকর্ষণে সমুদ্রের যে জলোচ্ছ,সি হয়, তাহারো শক্তি নদ নদীর জলে আলোড়ন উপস্থিত করিয়া ও তীরভূমিকে অনাবশ্বক ভাঙিয়া চুরিয়া বৃথা ক্ষয় প্রাপ্ত করে। বৈজ্ঞানিকগণ প্রকৃতির এই দুটা বাজে খরচ প্রবাসী। [ ৮ম ভাগ। কমাইর, উদ্ধৃত্ত শক্তিকে আমাদের ঘরের কাজে লাগাইৰা জন্ত চেষ্টা করিতেছেন । এ চেষ্টা একবারে নূতন নয়। আমরা বাল্যকাল হইতেই স্বৰ্য্যের তাপে কারখানা চালাইবার কথা শুনিয়া আসিতেছি, এবং এই শক্তি প্রয়োগের সুবিধা অসুবিধাৰ কথাও বৈজ্ঞানিকদিগের মুখে অনেক শুনিয়াছি ; কিন্তু এপর্য্যন্ত কোন সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর যন্ত্রের উদ্ভাবন সংবাদ পাওয়৷ যায় নাই। পণ্ডিত শ্ৰীকৃষ্ণ যোষী মহাশয়ের ভামুতাপ যন্ত্র অনেকেরই পরিচিত। সম্প্রতি একথানি মার্কিন বৈজ্ঞানিক *To (Scientific American) co 4° of Glæstø চালিত যন্ত্রের বিবরণ প্রকাশিত হইয়াছে, তাহা দেখিয়া আশা করা যাইতেছে, হয় ত বৈজ্ঞানিকগণ শীঘ্রই স্বৰ্য্যের বিশাল তাপরাশির কিয়দংশ যন্ত্রায়ুক্ত করিয়া কাজে লাগাইতে পারিবেন। fHojë Hof (Concave Mirror) azt স্থলমা কাচ খণ্ডের (Convex lens) কাৰ্য্য পাঠক অৰশুই জ্ঞাত্ত আছেন। তাপ বা আলোকের রশ্মিজাল ইহাদের উপরে পড়িলেই, সেগুলি প্রতিফলিত বা বিবৰ্ত্তিত (Refracted) { হইয়া এক সংকীর্ণ স্থানে জড় হয়। যে তাপালোক সমগ্র দৰ্পণখানি জুড়িয়াছিল, এই ব্যবস্থায় তাহার প্রায় সকলি স্বল্পপরিসর স্থানে পুঞ্জীভূত হইয়া পড়ায়, তাপ ও ও আলোক উভয়েরই প্রাথর্য্য বাড়িয়া যায়। বড় বড় দর্পণ সাহায্যে পূৰ্ব্বোক্ত প্রকারে স্বৰ্য্যের তাপ পুঞ্জীভূত করিয়া কল চালাইবার জন্য বৈজ্ঞানিকগণ এপর্যন্ত । চেষ্টা করিয়া আসিতেছিলেন। অধিক তাপ পাইতে হইলে, দর্পণকেও খুব বড় করা আবশ্বক, এবং দর্পণ বড় করিতে থাকিলে সঙ্গে সঙ্গে তাহার নিৰ্ম্মাণ ব্যয়ও খুব বাড়িয়া যায়। হিসাবে দেখা গিয়াছিল, দর্পণ সাহায্যে স্বৰ্য্যতাপ সংগ্ৰহ করিয়া কল চালাইতে যে খরচ পড়ে, কয়লা দ্বারা সেই কল চালাইলে খরচটা তাহ অপেক্ষ অনেক কম হয়। কাজেই বৈজ্ঞানিকগণ হতাশ হইয়া স্বৰ্য্যতাপ সংগ্রহের এই পদ্ধতিটিকে ত্যাগ করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। সৌরতাপ সংগ্রহের যে নব পদ্ধতির কথা আমরা পূর্কে উল্লেখ করিয়াছি, তাহাতে ঐ প্রকার বহুমূল্য বৃহৎ দর্পণের আবশ্যক হয় না, এবং সাজসরঞ্জামের খরচও অতি অল্প

l 1. ৭ম সংখ্যা । ] লাগে। পাঠক বোধ হয় অবগত আছেন, কেবল কাচ দ্বারা আচ্ছাদিত বাক্সের দিকে স্বৰ্য্যালোক ফেলিলে, তাপ ও আলোক স্বচ্ছ কাচের ভিতর দিয়া অনায়াসে বাক্সে প্রবেশ করে, এবং তাহাতে ভিতরের বায়ু বেশ গরম হইয়া উঠে। কিন্তু এই গরম বায়ু যখন নিজের তাপ বিকিরণ করিতে আরম্ভ করে, তখন সেই সকল তাপরশ্মি কাচের বাধা ভেদ করিয়া বাহিরে আসিতে পারে না। কাচ ও সৌরতাপের এই সম্বন্ধটি অতি সুপরিচিত। গ্রীষ্মপ্রধান দেশের গাছপালা শীতের দেশে জন্মে না। কারণ ইহাদের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য যে পরিমাণ উষ্ণতার আবশ্যক শীত প্রধান দেশে তাহ পাওয়া যায় না। গ্রীষ্মপ্রধান দেশের উদ্ভিদকে শীতের দেশে জীবিত রাখিতে হইলে, উহাকে কাচের ঘরের ভিতর আবদ্ধ রাখা হয়, এবং মাঝে মাঝে তাহার ভিতর স্বৰ্য্যের তাপ ও আলোক প্রবেশ করানে হয়। এই ব্যবস্থায় স্বৰ্য্যতাপ কাচের ঘরের ভিতর প্রবেশ করিয়া আর বাহির হইতে পারে না। কাজেই ঘরের বাতাস গরম থাকিয়া যায়—এবং গাছগুলিও সুস্থ থাকে। সূৰ্য্যতাপ সংগ্রহের মার্কিনপদ্ধতিটি কাচ ও স্বৰ্য্যতাপের পূৰ্ব্বোক্ত ধৰ্ম্মাবলম্বনে উদ্ভাবিত হইয়াছে। ফিলাডেলফিয়ায় ইহার যে পরীক্ষা হইয়া গেছে, তাহাতে পরীক্ষক কেবল কাচফলকদ্বারা একটি নাতি উচ্চ বৃহৎ বাক্স প্রস্তুত করিয়া তাহারি ভিতরে পূৰ্ব্বোক্ত প্রকারে স্বৰ্য্যতাপ সংগ্ৰহ করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। বাক্সের ভিতৰুে ইশ্বরপূর্ণ বড় বড় নল কুণ্ডলিত করিয়া রাখা হইয়াছিল, এবং যাহাতে আবদ্ধ স্বৰ্য্যতাপ সহজে শোষণ করিয়া নলের ইথর বাষ্পীভূত হইয়া পড়ে, তাহার জন্ত নলগুলির উপরে কালে রঙের প্রলেপ দেওয়া হইয়াছিল। অতি অল্পক্ষণের জন্ত বাক্সটিকে স্বৰ্য্যালোকে উন্মুক্ত রাখার পর নলের ইথর ফুটিয়া এত বাষ্প উদগত করিতে আরম্ভ করিয়াছিল যে, সাড়ে তিন ঘোড়ার জোরের একটি কল উহার বলে সবেগে চলিতে আরম্ভ করিয়াছিল।

  • ইংরাজি "Horse-power" কে "ঘোড়ার জোর" বলিতেছি।

এই কথাটিকে পাঠক অশ্বের ভারবহনশক্তি ন বুঝেন। প্রায় চারিশত মওজনের জিনিসকে এক মিনিট সময়ে ভূমি হইতে এক ফুট উর্ধে $"ाश्रड cग भरुिद्र भागथक श्छ. उशिरक३ दिशांप्नब्र ठांगांद्र Horse-power wzn | বৈজ্ঞানিক সারসংগ্ৰহ ।


"

JS(t SSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSS বহুকালের চেষ্টা ও চিন্তার ফলে কলে স্বৰ্য্যতাপপ্রয়োগের পূৰ্ব্বোক্ত উপায়টির সন্ধান পাওয়া গিয়াছে, কিন্তু জোরার ভাটার শক্তি গার্হস্থ্য কাৰ্য্যে লাগাইবার চেষ্টা সম্পূর্ণ আধুনিক এবং ইহাতে যতটুকু সাফল্য লাভ করা গিয়াছে, তাহার গৌরব আধুনিক বৈজ্ঞানিকদিগেরই প্রাপ্য। যাস্ত্রবিজ্ঞানে মার্কিনের আজকাল যে প্রকার কৃতিত্ব দেখাইতেছেন, তাহ প্রকৃতই অতুলনীয়। কিন্তু জোয়ার ভাটার শক্তিকে যন্ত্রায়ত্ত করার ব্যাপারে জার্মান বৈজ্ঞানিকেরাই অগ্রণী হইয়াছেন। এলৰ নদীর সঙ্গমস্থানে ইতিমধ্যেই ইহার কাজ আরম্ভ হইয়া গিয়াছে। পেইন নামক জনৈক বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক এই কার্যের পরিচালনভার গ্রহণ করিয়াছেন। ইনি বলিতেছেন, অতি শীঘ্রই কেবল জোয়ার ভাটার শক্তির দ্বারা জৰ্ম্মানির বড় বড় সহরের ট্রামগাড়ি ও বিদ্যুতের কল চলিবে। অর্থের অভাব হয় নাই। আরন্ধকার্য্যের সাফল্য অবশ্যম্ভাবী জানিয়া নিশ্চিন্তু চিত্তে সকলে অর্থদান করিতেছে। জৰ্ম্মনির উৎসাহ দেখিয়া ইটালির কয়েকজন বৈজ্ঞানিক জোয়ার ভাটার শক্তিকে ব্যবহারোপযোগী করিবার আয়োজন করিতেছেন। ভূ-মধ্যসাগরে জোয়ার ভাটার শক্তি তত প্রবল নয়। এই অল্প শক্তি দ্বারাও কল চালাইয়া ইহারা সুফল পাইয়াছেন। ইটালীর বৈজ্ঞানিকদিগের যন্ত্রটি একেবারে জটিলতাবর্জিত। তাঁর হইতে স্বরু করিয়া কতকগুলি রেল সমুদ্রগর্ভ পৰ্য্যন্ত সাজাইয়া রাখা হয়, এবং এই সকল ঢালু রেলের উপর কতকগুলি গাড়ি সজ্জিত থাকে। সমুদ্রের তরঙ্গ ও জোয়ারের জলোচ্ছ,সি ধাক্কা দিয়া এই গাড়িগুলিকে উপরে উঠাইয়া দেয়, এবং তরঙ্গ সরিয়া গেলে বা উচ্ছ্বাস প্রশমিত হইলে গাড়িগুলি নিজেদের ভারে নিজেরাই নাঁচে নামিতে আরম্ভ করে। ক্রমনিম্ন রেলের উপরে সজ্জিত গাড়িগুলিতে এই প্রকার উদ্ধাধোগতি । আপন হইতেই অবিরাম চলিতে থাকে। ইটালির স্বাস্ত্রশিল্পিগণ এই গতি দ্বারা পম্প সাহায্যে সমুদ্রজলকে উচ্চ স্থানে উঠাইতেছেন, এবং পরে এই সঞ্চিত জল ছাড়িয়া দিয়া তাহারি নিম্নগমনবেগে যন্ত্রাদি চালাইতেছেন। হিসাৰে দেখা গিয়াছে, কয়লা পোড়াইয়া কল চালাইতে যে ব্যর হয়, এই উপায় অবলম্বন করিলে তদপেক্ষা অনেক অল্প : খরচে কল কারখানা চলে। -