পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করে,—ইহার কিছুই বলা যায় না ; অতএব ব্রাহ্মণের মদ্যপান কদাপি উচিত হয় না। যাহার কায়গত ব্ৰহ্ম একবারও মদ্য দ্বারা আপ্লাবিত হয়, তাহার ব্রহ্মণ্য দূরীভূত হয় এবং তিনি শূদ্রত্ব প্রাপ্ত হন।” এই দেখ নিম্নলিখিত বচনে আত্মদোষ স্বীকার ও অনুতাপের কথা আছে। (২৩৯)—“লোক সমাজে নিজের পাপ জ্ঞাপন, পাপের জন্য অনুতাপ, তপস্যা ও অধ্যয়ন দ্বারা পাপকারী পাপ হইতে মুক্ত হইয়া থাকে এবং আপদ পক্ষে দানের দ্বারাও পাপের নিষ্কৃত হয়।” (২৩৯)—“যাহা কিছু দুষ্কর, যাহা কিছু ভূপ্রাপ্য, সমুদায়ই তপস্তাসাধ্য ; তপস্তাকে কেহই অতিক্রম করিতে পারে না।” (২৪০) –“ব্ৰহ্মহত্যাদি মহাপাতকীরা এবং অপরাপর অকার্য্য কারীরা মৃতপ্ত তপস্যা দ্বারাই সেই পাপ হইতে মুক্ত হয়।” (২৪২)—“লোক সকল কায়মনোবাক্যে যে কিছু পাপ করে, তপোধনের তপোবলে তাহ শীঘ্ৰ দগ্ধ করিয়া থাকেন। দ্বাদশ অধ্যায়টি মনুসংহিতার মাথার মুকুট । এই অধ্যায়ে, আত্মার অমরত্ব, মনুষ্য পাপকৰ্ম্মফলে যে যে যোনিতে জন্মগ্রহণ করে, এবং অন্তিম মোক্ষ–এই সকল বিষয় আলোচিত হইয়াছে। স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি থাকা প্রযুক্ত মানুষ, আপন আপন শুভাশুভ কৰ্ম্মের ফলভোগ করে। ফলতঃ মনই জীবগণের সমস্ত কার্য্যের প্রবর্তক – কায়মনোবাক্যের দ্বারা সেই কার্য্য অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে। (৫)—“পরের দ্রব্য অন্যায়রুপে কি প্রকারে লইব এই চিন্তা, মনদ্বারা অনিষ্ট চিন্তা, পরলোক নাই--দেহই আত্মা,— এইরূপ বিতথ অভিনিবেশ,—এই ত্ৰিবিধ অশুভদায়ক মানস কৰ্ম্ম।” (৬)—“পরুষবাক্য ; মিথ্যাবাক্য ; পরোক্ষে পরের দোষ কথন ; রাজার, দেশের বা পুরাদি সম্বন্ধীয় নিম্প্রয়োজন অসম্বন্ধ প্ৰলাপ—এই চতুৰ্ব্বিধ অশুভকর বাচিক কৰ্ম্ম।” (৭)–“অদত্ত-ধন গ্রহণ, অবৈধ হিংসা, পরদারসেবা –এই ত্ৰিবিধ শারীরিক অশুভ কৰ্ম্ম।” (৮)—“দেহী মানস-শুভাশুভ কৰ্ম্মের ফল মনদ্বারাই ভোগ করে, বাচিক কৰ্ম্মের ফল বাক্যের দ্বারা, এবং শরীর-কৃত শুভাশুভ কৰ্ম্মের ফল, শরীর দ্বারাই ভোগ করে।” (২৪)—“সত্ত্ব, রজ ও তম—এই তিনটি মহত্তত্ব নামক আত্মার গুণ প্রবাসী । SMSMSMMSMMSMMSMMSMSMSMSMSMSMMAMMMMMMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSAMMMAAAA [•••• | ಘ್ | (२७)-"अष्यू झांन f জানিবে। এই তিন গুণ ব্যাপ্ত থাকিয়া তাবৎ পদার্থে অবস্থান করিতেছে।” লক্ষিত হয় ।” (৮৩)—“বেদাভ্যাস, তপস্তা, জ্ঞান, ইঞ্জিয়-সংযম, অহিংসা ও গুরুসেবা—এই সকল কৰ্ম্ম মোক্ষসাধন। এই সকল মোক্ষসাধন কৰ্ম্মের মধ্যে আত্মজ্ঞানই শ্রেষ্ঠ ; উৎ সকল বিদ্যার মধ্যে প্রধান এবং উহা হইতেই মোক্ষ লাভ * হয়।” (১০৩)–“অজ্ঞ লোক অপেক্ষা, গ্রন্থের অধ্যেতা শ্রেষ্ঠ, গ্রন্থের কেবলমাত্র অধ্যেতা অপেক্ষ যিনি গ্রন্থোক্ত বিষয় ধারণ করিয়া রাথিয়াছেন, তিনি শ্রেষ্ঠ ; ধারণকারীর } অপেক্ষ র্যাহার তাহাতে জ্ঞান জন্মিয়াছে, তিনি শ্রেষ্ঠ এবং জ্ঞানী অপেক্ষা যিনি সেই জ্ঞানানু্যায়ী কৰ্ম্মানুষ্ঠান করেন, তিনি শ্রেষ্ঠ ।” (১০৪)—“তপস্তা ও আত্মজ্ঞান ব্রাহ্মণের প্রথম মোক্ষ সাধন । তপস্তাদ্বারা পাপ নষ্ট হয় এবং আত্মজ্ঞান দ্বারা অমৃত লাভ করা যায়।” ধ্যয়ন নাই, যাহারা জাতিমাত্রে ব্রাহ্মণ –এমন সহস্ৰ সহস্র ব্যক্তি সমবেত হইলেও তাহাতে পরিষত্ব নাই জানিলে। ] সেই পরিষদের উপদেশ গ্রাহ হইতে পারে না।” (১১৮)—“সমুদয় সদসন্ময় জগৎ—ধ্যানস্থ হইয়াপরমাত্মাতে অবস্থিত দেখিবে। যিনি আত্মাতে সমুদয় দর্শন করেন, তাহার মন অধৰ্ম্মে কথন ধাবিত হয় না।” (১২২)—“পশ্চাৎ সকলের শাস্তা, অণু হইতেও অং, প্রকাশস্বরূপ, স্বপ্নধগম্য সেই পরম পুরুষকে ধ্যান করিবে।” (১২৪)—“এই পরমাত্মাই পৃথিব্যাদি পঞ্চমূত্র দ্বারা সমুদয় প্রাণী ব্যাপিয়া, বৃদ্ধি ও নাশ দ্বারা এই সংসার প্রবর্ধিত করিতেছেন।” (১২৫)—“এইরূপে যিনি আস্থা । দ্বারা সৰ্ব্বভূতে আত্মদর্শন করেন, তিনি সৰ্ব্বসমতা প্রাপ্ত । হইয়া পরমপদ ব্ৰহ্মকে লাভ করেন।” ইহাই মানবধৰ্ম্মশাস্ত্রের সংক্ষিপ্ত সার। aहे 5भ९कांद्र জনক উৎকৃষ্ট গ্রন্থ ব্রাহ্মণ্যিক ভারতের গৌরব বৰ্দ্ধন কৰা । এবং এই গ্রন্থখানি এখনও ব্রাহ্মণ্যক ধৰ্ম্মের ভিত্তিষ্কর্ণে বিরাজমান। বিশ্বমানব এযাবৎ ইহা অপেক্ষা সুন্দর স্বপ্নের পুর্ণ আদর্শ কল্পনা করিতে পারে নাই। মনস্তরে দি ৮ম সংখ্যা । ] দিয়া দেখিতে গেলে,—মনুসংহিতায় ঈশ্বরের যে সুন্দর স্বরূপ লক্ষণ প্রাপ্ত হওয়া যায় সেরূপ আর কোথাও নাই ; নীতির দিক দিয়া দেখিতে গেলে,--তপস্তা, ইন্দ্ৰিয়নিগ্ৰহ, আত্মসংযম, চিত্তগুদ্ধি, দ্যায়ধৰ্ম্ম, ঈশ্বরে আত্মসমর্পণ, অনিষ্টকারীর প্রতি সাধু আচরণ, অতি অধম জীবের প্রতিও অহিংসা—এই সকল উপদেশ অতীব শ্ৰাঘ্য ; বুদ্ধির দিক দিয়া দেথিতে গেলে, উহাতে জ্ঞানবিজ্ঞানেরই সৰ্ব্বপ্রাধান্ত স্বীকৃত হইয়াছে। জষ্টিনিয়ানের ব্যবস্থাসংহিতা এবং যে দেওয়ানি আইনের সংহিতা অধুনা আমাদের মধ্যে প্রচলিত, উভয়ই যে “মানব-ধৰ্ম্মের” বচন সমূহ হইতে গৃহীত, তাহ তুলনার দ্বারা অনায়াসে সপ্রমাণ করা যাইতে পারে। আমার এই গ্রন্থের যেরূপ সংকীর্ণ পরিসর, তাহাতে ঐক্লপ তুলনা করিয়া দেখান আমার পক্ষে অসম্ভব। আমি এখন GRM (Burnouf) বুনুফ হইতে একটা অংশ উদ্ধত করিআইএই সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যার পরিসমাপ্তি করিব। ইহা অপেক্ষা উপহার আর কিছুই হইতে পারে না। দুর্থ (১১৪)—“যাহাদের কোন ব্রত নাই—যাহাঁদের বেদী f লিথিয়াছেন ঃ—“মমুর ব্যবস্থাগুলি যেভাবে অনুপ্রাণিত, তাহা দুইটি কথায় সংক্ষেপে ব্যক্ত করা যাইতে পারে :– মেহ গুদ্ধি ও মনঃ শুদ্ধি এবং মানুষের মধ্যে উচ্চনীচ শ্রেণী বিভাগ মুসলমানেরা ভারতবর্ষ জয় করিয়াছিল, কিন্তু বর্ণভেদ প্রথা কিংবা আর্য্যধৰ্ম্মকে ধ্বংস করিতে সমর্থ হয় নাই। ব্রাহ্মণ্যিক জাতি, মুসলমানজাতির সহিত যদি কিছু মিশিয়া থাকে—সে নিতান্তই অণুপরিমাণে। বহুকাল পূৰ্ব্বে, ভারতবর্ষেই সমাজসংস্কারক বৌদ্ধ ধৰ্ম্মের জন্ম হয়। বৌদ্ধধৰ্ম্ম, ভারতে সাম্যবাদ প্রচার করিয়া বৰ্ণভেদ প্রথাকে আক্রমণ করে ; লোকের মধ্যে বৌদ্ধধৰ্ম্ম প্রসার লাভ করিলেও, শেষ পর্য্যন্ত আপনাকে রক্ষা করিতে পারে নাই । তাহার অনেক পরে, খৃষ্টধৰ্ম্মের একটি প্রসিদ্ধ সম্প্রদায় ভারতে খৃষ্টধৰ্ম্ম প্রচারে প্রবৃত্ত হয়। ব্রাহ্মণ্যিক ধৰ্ম্মের খাতিরে কতকটা নিজ মত ত্যাগ করিয়া তবে সেই সম্প্রদায় খৃষ্টধৰ্ম্ম প্রচারে কতকটা সফলতা লাভ করে। ধৈৰ্ম্ম লোকের মনঃপুত না হওয়ায়, মনুর ধৰ্ম্মব্যবস্থা স্বাবার পুর্ণপ্রভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখনও প্রাচ্যজাতি সদীয় যে সকল বাধা যুরোপীয়দিগের পথের অন্তরায়— হাংহিতার প্রভূত নৈতিক বল তাহার মধ্যে একটি।” ব্রাহ্মণ্য ধৰ্ম্ম । 8○○ ব্রাহ্মণিাক যুগের দার্শনিক সম্প্রদায় দুই বৃহৎ ರ বিভক্ত :– মীমাংসা ও সাংখ্য। বেদাস্ত কিংবা মীমাংসাও আবার দুই উপশ্রেণীতে বিভক্ত —উত্তর মীমাংসী ও পূৰ্ব্ব মীমাংসা । নামের দ্বারাই স্বচিত হইতেছে-বেদাস্ত এমন একটি ধৰ্ম্মসিদ্ধাস্ত যাহা বেদ বচনের উপর প্রতিষ্ঠিত। বেদান্তের মতবাদ আধ্যাত্মিক । এসিয়াটিক রিসার্চ গ্রন্থে, কোলব্রুক বলেন —“বেদে যে সকল উপদেশ আছে, সেই সকল উপদেশের প্রামাণিকতা ও বলবত্তা স্থাপন ও বেদব্যাখ্যার নিয়ম নিৰ্দ্ধারণ এবং সেই সকল নিয়ম হইতে যাহাতে একটা যুক্তিশাস্ত্র গঠিত হইতে পারে তাহার চেষ্টা—ইহাই মীমাংসা দর্শনের লক্ষ্য। বেদ যে গুহ ধৰ্ম্মের শিক্ষা দেয় সেই গুহ ধৰ্ম্মের ব্যাখ্যা করা, একটা অসম্ভব পূর্ণ রকমের অবস্থায় উপনীত হইবার জন্য সেই ধৰ্ম্মের সাধন করা, ঈশ্বরের সহিত যোগ নিবদ্ধ করাইহাই বেদাস্ত দর্শনের চরম লক্ষ্য। পরব্রহ্মের অতীক্রিয় একতা হইতে যাত্রা আরম্ভ করিয়া বেদান্ত, ক্লীবলিঙ্গ শব্দবাচক ব্রহ্মের কল্পনায় উপনীত হইয়াছে। এই ব্ৰহ্ম পরিপূর্ণ, নিৰ্ব্বিকার, নিত্য, নিরুপাধি, —সুতরাং স্বল্প জীবদিগের সহিত তাহার কোন সম্বন্ধ নাই। বৈদাস্তিকের ব্রহ্মের এইরূপ লক্ষণ নির্দেশ করিয়া থাকে :-“তিনি একমাত্র আত্মা, স্বয়ম্ভু, জ্ঞান স্বরূপ ও আনন্দ স্বরূপ ; তিনি নিগুণ, নিক্রিয়, তুমি আমি, তিনি— এইরূপ আমিত্ববিহীন,—নিৰ্ব্বিশেষ।” এইরূপ অবস্থায়, ব্ৰহ্ম জগৎ সৃষ্টি করিবার উদ্দেশে আত্মপ্রকাশার্থ আপনাকে স্বষ্টি করিতে বাধ্য হইলেন ; তখন তিনি অনন্ত সত্ত্বা হইতে নিঃস্থত হইয়া, জগৎশ্রষ্টা ব্ৰহ্মারূপে আবিভূত হইলেন। কিন্তু ক্লীবলিঙ্গ ব্ৰহ্ম হইতে পুংলিঙ্গ ব্ৰহ্মা কিরূপে উৎপন্ন হইল ? বৈদাত্তিক সম্প্রদায়, মায়াতত্ত্বের অবতারণা করিয়া এই সমস্তার মীমাংসা করিয়াছেন। মায়া, অথবা জড়প্রকৃতি ; মায় অর্থে পরিমাণ বুঝায়—আকাশ বুঝায়। তাহার অনেক পরে, প্লেটাে এই মতবাদকেই পরিপুষ্ট করিয়া ইহাকে Topos নামে অভিহিত করিলেন, Topos, কিনা—বিশ্ব-জননী, হ্রাসবৃদ্ধির মহতী সম্ভাবনা। বিশ্বের আত্মা পরব্রহ্মই জীবনের মূল-উৎস —সেই একমাত্র উৎস যাহা হইতে