পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Groo করিয়া এক কার্য্যেই আসক্ত হয় সেই অহেতুক অতত্ত্বার্থবৎ অল্প জ্ঞানই তামসিক জ্ঞান।” কৃষ্ণ, চতুৰ্বর্ণের প্রত্যেকের জন্ত পৃথক পৃথক ধৰ্ম্ম নির্দিষ্ট করিয়াছেন। ব্রাহ্মণের জন্য তিনি যে সকল ধৰ্ম্ম নির্দিষ্ট করিয়াছেন, তাহাতে দেখা যায়, কেবল জ্ঞান ধৰ্ম্মের শ্রেষ্ঠতা হইতেই ব্রাহ্মণ ভারতে প্রভাব প্রতিপত্তি অর্জন করিয়াছিলেন। ক্ষত্রিয়ের জন্য যে ধৰ্ম্ম নির্দিষ্ট হইয়াছে তাহা আমাদের যুরোপীয় অভিজাতবর্গের (Aristocracy) পক্ষেও খাটে। আমাদের অভিজাতবর্গ কোন প্রকার জ্ঞানমূলক আন্দোলনের নেতা হয়েন না,-তাহাদের নামে এই যে একটা কলঙ্ক আছে তাহা নিতান্ত অমূলক নহে ;• কারণ, কোন যুগের কোন অভিজাতবর্গকেই জ্ঞানানুশীলনে প্রাধান্ত লাভ করিতে কখনও দেখা যায় নাই। --“শম, দম, তপস্যা, ক্ষমা, সরলতা, জ্ঞান বিজ্ঞান, ও আস্তিক্য, এই সকল ব্রাহ্মণদের স্বভাবজ কৰ্ম্ম। শৌর্য্য, তেজ, ধৃতি, দাক্ষ্য, যুদ্ধে অপলায়ন, দান, প্রভূভাব এই গুলি ক্ষয়িদিগের স্বাভাবিক কৰ্ম্ম । কৃষি, গো-রক্ষা, বাণিজ্য ইহাই বৈশুদের কৰ্ম্ম এবং পরিচর্য্যাত্মক কৰ্ম্মই শূদ্রদের পক্ষে স্বাভাবিক।" “ স্ব স্ব কৰ্ম্মে অভিরত মনুষ্য সিদ্ধি লাভ করে। যাহা হইতে মানবগণের প্রবৃত্তি অর্থাৎ চেষ্টা হয় এবং যিনি এই সমুদায় বিশ্ব ব্যাপিয়া আছেন, মানবগণ স্বকৰ্ম্ম দ্বারা তাহাকে অর্চনা করিয়া সিদ্ধি লাভ করে। সদোষ স্বধৰ্ম্মও সম্যক্রূপে অনুষ্ঠিত পরধৰ্ম্ম অপেক্ষ শ্রেষ্ঠ। লোকে স্বভাবজ কৰ্ম্ম করিয়া পাপ প্রাপ্ত হয় না। হে কৌন্তেয়, সদোষ হইলেও সহজ কৰ্ম্ম ত্যাগ করিবে না, যেহেতু ধুমব্যাপ্ত অগ্নির ন্যায়, সকল কৰ্ম্মই দোষে আবৃত।” ভগবদগীতার শেষ অংশটা সমস্তই উদ্ধৃত করিবার যোগ্য ; কেননা, যোগবাদসংক্রান্ত সমস্ত উপদেশ ও বচনের উহাই সংক্ষিপ্তসার ; উহাতে ইহাই প্রদর্শিত হষ্টয়াছে যে, ঈশ্বরের সহিত আধ্যাত্মিক যোগ নিবন্ধ করিয়াই মনুষ্য ঈশ্বরের প্রসাদে ঈশ্বরের মধ্যে প্রবেশ .

  • এ কথা আমাদের ক্ষত্রিয়দের সম্বন্ধে থাটে না—উপনিষদের অনেক ঋষিই ক্ষত্রিয় ছিলেন। বেদের কৰ্ম্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে উহারাই প্রথমে প্রতিবাদ উত্থাপন করেন।—অনুৰাধক।

প্রবাসী। করে এবং নিত্য শাস্তি লাভ করে; এই যোগবাদ মাম্বন্ধে [ ৮ম ভাগ। নিজ কার্য্যের উপর স্বাধীন কর্তৃত্ব প্রদান করিয়াছে। প্রথমে তাহাকে সত্যের পথ দেখাষ্টয়া দিয়ছে ; যে পথষ্ট সে নিৰ্ব্বাচন করুক না-সে তার ইচ্ছাধীন। পরিশেষে এই যোগবাদ, জ্ঞানী ও পণ্ডিতদিগের জন্য যে পুরস্কার, সেই একই পুরস্কার শ্রদ্ধাবান অজ্ঞব্যক্তিদিগের জন্যও অঙ্গীকার করিয়াছে।–“সৰ্ব্বদা সৰ্ব্বপ্রকার কৰ্ম্ম করিয়াও মৎপরা। ব্যক্তি আমার প্রসাদে শাশ্বত অব্যয় পদ প্রাপ্ত হয়। তুমি চিত্তদ্বারা সৰ্ব্বকৰ্ম্ম আমাতে অর্পণ করিং, মংপরা: হইয়া, বুদ্ধিযোগ আশ্রয় পুৰ্ব্বক সৰ্ব্বদা মচ্চিত্ত হও। মচ্চিত্ত্ব হইলে তুমি আনার প্রসাদে সমুদায় বিপদ উত্তীর্ণ হইবে। যদি অহঙ্কাৰ বশত তুমি না শুন তবে বিনষ্ট হইবে। ক্ষে অৰ্জ্জুন, ঈশ্বর মায়াদ্বারা দেহরূপ যন্ত্রে অবরূঢ় ভূত সকলকে তত্তৎকৰ্ম্মে প্রবৰ্ত্তিত করিয়া সৰ্ব্বভূতের হৃদয়ে অবস্থান । ४ांशत्रद्धे जन्ना করিতেছেন। হে ভারত, সৰ্ব্বতোভাবে লও , তাহারই প্রসাদে পরাশাস্তি ও নিতাস্থান প্রাপ্ত হইবে । এই গুহ হইতেও গুহতর জ্ঞান আমি তোমাকে বলিলাম। ইহা বিশেষরূপে পৰ্য্যালোচনা করিয়া যায় ইচ্ছা তাহাই কর । সৰ্ব্বাপেক্ষা গুহ্যতম আমার পরম বাক্য পুনরায় শ্রবণ কর ; তুমি আমার অতি প্রিয়, এজন্তু তোমার হিত কহিতেছি। তুমি মচ্চিত্ত, মদভক্ত ও আমারই উপাসক হও, আমাকেই নমস্কার ফর, তা হইলে আমাকেই পাইবে । তোমার নিকট সত্য প্রতিজ্ঞ করিয়া বলিতেছি ; যেহেতু তুমি আমার প্রিয়। সমুদ ধৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া একমাত্র আমাকে আশ্রয় কর আমি তোমাকে সৰ্ব্বপাপ হইতে মুক্ত করিব ; শোক করিং না। তুমি এই গীতাৰ্থতত্ত্ব, ধৰ্ম্মহীন ভক্তিহীন, গুরুসেবাহীন এবং আমার অস্থয়াকারীকে কদাপি বলিও না। এই পরম গুহ গীতাশাস্ত্র আমার ভক্ত সকলকে যিনি বলিবেন, তিনি আমাতে পরমাভক্তি অর্পণ করায় সংশয়শূন্ত হইয়া আমাকোঁ পাইবেন। মনুষ্যমধ্যে র্তাহ অপেক্ষ কেহ আমার অন্ত্রি প্রিয়কারী নাই এবং কোনকালে তাহা অপেক্ষ আমার অধিক প্রিয় পৃথিবীতে আর কেহ হইবেও না। আর যিনি আমাদের এই ধৰ্ম্মসংবাদ পাঠ করিবেন, তিনি জ্ঞানযজ্ঞদ্বারা আমারই অর্চনা করেন ;–আমার এইরূপ ৯ম সংখ্যা । ] মত। শ্রদ্ধাবান অস্থয়াহীন হইয়া যিনি ইহা শ্রবণ করেন, তিনিও পাপমুক্ত হইয়া পুণ্যকারিগণের পবিত্র লোক সকল প্রাপ্ত হন।" গ্রন্থের এই অংশট কি গুরুগম্ভীর ; ইহার ক্লেপ সৌন্দৰ্য্য ও অনুপম মাধুর্য তাহাতে পৰ্ব্বতে প্রদত্ত বাইবেলের উপদেশগুলিকে স্মরণ করাইয়া দেয় ; ২৪০ • শতাব্দী পুরাতন হইলেও, উহা এরূপ আধুনিক যে উহার সমস্তটাই কোন খৃষ্টান গির্জায় পঠিত হইতে পারে— ভিন্ন ধৰ্ম্মের জিনিস বলিয়া কাহারও মনেও হয় না। ভগবদগীতার শেষে, “সৰ্ব্বজীব স্বর্থী হউক!” এই যে প্রার্থনাটি আছে, ইহা সেই উদার ও মধুরপ্রকৃতি ভারতীয় আর্য্যবংশেরই অনুরূপ। ভারতের ধৰ্ম্মমতগুলি যাহা আমি বিবৃত করিলাম, প্তাহ হইতেই উপলব্ধি হইবে, যে সময়ে বৌদ্ধধৰ্ম্ম আবির্ভূত হয় তখন ভারত, সভ্যতা-সোপানের কত উচ্চধাপে আরূঢ় হইয়াছিল। শাক্য মুনি সংস্কারকর্তারূপেই ভারতে আবিভূত হয়েন। এই সংস্কার কার্য্যের উদ্দেশু কি, তাহ আমি বুদ্ধের জীবনীতে বিবৃত করিব। শ্ৰীজ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবি দ্বিজেন্দলাল। ( নাট্য রচনা ) প্রতাপসিংহ ও দুর্গাদাস । "মেবার পাহাড় ! উড়িছে যাহার রক্তপতাকা উচ্চ-শির,— তুচ্ছ করিয়া স্নেচ্ছদপ দীর্ঘ সপ্ত শতাব্দীর।” সে দৃশে কে না মুগ্ধ হয় ? কে না সেই পতাকার দিকে বিশ্ব ও আশ্বাসে চাহিয়া থাকে ? কবির প্রতাপসিংহ * ইর্গাদাস, রাজস্থানের বীরকাৰ্বির কথায় রচিত। সমগ্র প্রকৃতি চঞ্চল বলিয়াই উহার নাম জগৎ। অনিত্যতার ছায়া-কম্পনই বৈচিত্র, এবং সেই বৈচিত্রই ীেদর্যের প্রাণ। মুন্দরের মধ্যে স্থনরতম মানব-হৃদয় ; "সেই হার ও পুণ্যচরিত্রে কেবলই দেবামুর-যুদ্ধের কবি দ্বিজেন্দ্রলাল। " (too ইতিহাস। তাই চিত্রশিল্পের এই সমালোচনা বড় যথার্থযে, চিত্রের অসম্পূর্ণতাই যথার্থ পূর্ণত । গৌতমের অটল দেবত্ব, আমাদের সাধু আকাঙ্গার দৈব স্বপ্ন ; পাষাণীও মানস প্রতিমা । কিন্তু কবির ঐ চিত্রযুগলে, নিত্যউপলব্ধ পাপপুণ্যের সংঘর্ষ আছে বলিয়া উহার স্বন্দর ; অতিমানুষ হইলে সুন্দর হইত না। কবির প্রতাপসিংহ ও দুর্গাদাসও আদর্শ মাত্র হইলে আদৃত হইত না । অন্ততঃ নাটকে ত নয়। কবির প্রতাপসিংহ নাটকে দুইটি অতি স্থির ভাস্বর এবং সুন্দর তারকা চিত্রিত আছে ; একটি ইরা, আর একটি মেহের উন্নিসা। উহাদের আলোক অপার্থিব বলিয়৷ মনে হইলেও, পার্থিবতা যথেষ্ট আছে। সত্য বটে, যে ইরা সত্যরাজ্যের পুরোহিতের মত, দুঃখের মোহমন্ত্র উচ্চারণ করিতে করিতে, এবং শক্তের প্রাণে ভক্তি সঞ্চার করিয়া দিয়া ডুবিয়া গেল ; এবং যে উদীয়মান স্বৰ্য্যের পুরশ্চর হইয়া আসিয়াছিল, তাহার দীপ্তিতে উহার আলোকমাধুর্য্য কেবল স্বপ্নের মত স্মৃত রহিল। কিন্তু উহার চরিত্রে পার্থিবতা আছে, ক্ষীপ্নতা আছে, অন্ধকার আছে। মেহের উন্নসা অস্তগামী স্বর্যের অনুচরিণী বটে ; সে প্রেমরাজ্যের সন্ন্যাসিনী সত্য ; কিন্তু তাহার সন্ন্যাসে অমানুষিক উদাসীনতা নাই। কেহ কেহ প্রতাপসিংহের অনেক চরিত্রে সম্পূর্ণতা দোষ আরোপ করেন বলিয়া প্রথমেই একথাটার উল্লেখ করিলাম। যে প্রতিজ্ঞা-পাঠ প্রতাপসিংহ নাটকের আরম্ভ, উহ ঐতিহাসিক। রাণাপ্রতাপেৰ দেশের প্রথম দৃশ্বের চিত্র, ম্যাটসিনির দলের প্রতিজ্ঞাপাঠের অনুকৃতি নহে। প্রতিজ্ঞার সে অটলতা আজ আর নাই ; কিন্তু এখনো রাজস্থানের রাজদ্যের সোণার থালার নীচে একটি পাতা রাখিয়া ? আহার করে ; এবং স্বকোমল শয্যাতলে একটি তৃণ রাথিয়া স্বথ-স্বপ্ত হয়। হায় প্রতাপ, এই তোমার সেই দেশ ! কবির প্রতাপসিংহ, পরপদদলিত, হৃতালঙ্কার প্ৰপীড়িত, দীন জন্মভূমিকে দেখাইতেছেন ; আর শক্তসিংহ বলিতেছেন ( শক্তসিংহ কাপুরুষ নহে বলিয়া এস্থলে, “শক্তসিংহের মত আমরাও বলতেছি বলিয়া একটু অলঙ্কারের মাত্রা চড়াইতে পারিলাম না) –“জন্মভূমি ?