পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫২২


.-് ..-..............................------------------------------------------ه

বলিয়া অনুমতি হয় ; কারণ পাঞ্জাবীরা বঙ্গীয়দিগের ন্যায় ‘ক্ষ’ স্থানে সাধারণতঃ ‘খ’ উচ্চারণ করিয়া থাকেন। অন্ততঃ উল্লিখিত আলোচনা হইতে অবগত হওয়া যায়, স্বৰ্য্যবংশীয় ক্ষত্ৰিয়বংশধুরদ্ধর কুশের বংশে শিখগুরু নানকের জন্ম হয়। পক্ষান্তরে লবের বংশের একটি শাখা লবকোট ( বর্তমান লাহোর ) পরিত্যাগ করিয়া, সৌরাষ্ট্রে ( দ্বারকায় ) গিয়৷ বসতি করিয়া, বীরনগর নামে একটি নগর সংস্থাপন করেন। কনক সেন এই শাখার আদিপুরুষ বলিয়া ইতিহাসে পরিচিত। তাহার প্রপৌত্র বিজয় সেন বিজয়পুর ও বিদর্ভ (সিহোর ) নামক নগরদ্বয় নিৰ্ম্মাণ করেন। বল্লভপুর • ইহঁাদিগের রাজধানী ছিল। কিন্তু কালসহকারে বল্লভপুর অসভ্য ম্লেচ্ছজাতিবিশেষ কর্তৃক + আক্রান্ত হইয়া রাজবংশ বিদ্ধস্ত হইলে, রাজ্ঞীগণ মহারাজ শিলাদিত্যের সহমৃতা হন ; কিন্তু অন্যতমা অন্তৰ্ব্বত্নী মহিষী চন্দ্রাবতীর প্রমার রাজদুহিতা পুষ্পবর্তী পিতৃগৃহ হইতে বল্লভী যাইবার পথে এই শোকসংবাদ অবগত হইয়া, পিতৃগৃহে প্রত্যাবর্তন না করিয়া সমীপবৰ্ত্তী মালিয়া শৈলমালার গহবরে আশ্রয় লইয়৷ পূর্ণকালে একটি স্বলক্ষণসম্পন্ন পুত্র প্রসব করেন এবং বীরনগরনিবাসিনী কমলবতী নামী এক ব্রাহ্মণীর হস্তে সদ্যজাত শিশুর লালন পালন ভার সমর্পণ করিয়া পতির অমুমূত হন। গিরিগুহায় জন্মহেতু পরে এই শিশু গুহ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। শাস্তচরিত্র ব্রাহ্মণবালকগণের সহিত সাহচৰ্য্য ও তদুপযোগিনী শিক্ষা গুহের ভাল লাগিত না, বরং উগ্রস্বভাব পাৰ্ব্বত্য ভালবালকগণের প্রতিই তাহার অত্যধিক অনুরাগ লক্ষিত হইত। তাহারাও তাহাকে প্রাণ দিয়া ভালবাসিত। ক্রমে বয়ঃপ্রাপ্তির সহিত গুহের অঞ্চলে অমুলোম প্রতিলোমক্রমে থত্রি ও সারস্বতব্ৰাহ্মণে বিবাহের আদানপ্রদান হইয়৷ থাকে। ইহা সমাজসংস্কারকগণের অনুসন্ধানের বিষয় সন্দেহ নাই। - • বর্তমান ভবনগরের পাচক্রোশ উত্তরপশ্চিমে প্রাচীন বল্লভপুরীর ভগ্নাবশেষ আছে বলিয়া উল্লিখিত হয় । + কিম্বদন্তী এইরূপ, খৃষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে সিন্ধুতটবর্তী খামনগরে পারদ নামক অনাৰ্য্য জাতি বাস করিত। তাহারাই বল্লভপুর আক্রমণ করে। কৰ্ণেল টড বলেন, জন্মরহস্ত হেতু ইহার নাম গয়বী ছিল। भिक्षांब्रि s वि: । [ ৮ম ভাগ। রাঙ্গেচিত গুণাবলী সম্যক পরিস্ফুট হওয়ায়, তার গ্রন্থ অধিকতর আকৃষ্ট হইয়া তাহারা তাহাকে নেতারূপে বরণ করিল। ইহাতে তিনি বিধুমাত্র রক্তপাত নকরিয়াই দৈয় ভূমির উপর সম্পূর্ণ আধিপত্য প্রাপ্ত হইলেন। এই গুঞ্জ হইতেই রাজস্থানের শিরোমণি গিহেলাট ( গেছিলোট বা গোহিলেট ) বংশের উৎপত্তি । অষ্টম পুরুষ পৰ্য্যন্ত গুহের সন্ততিগণ এই পাৰ্ব্বত্য জাতির উপর শাসনদণ্ড পরিচালিত করেন। অবশেষে রাজ নাগাদিত্যের আচরণে নিতান্ত ক্রুদ্ধ হইয়৷ ভীলগণ তাছাকে বিনষ্ট করিয়া তাহার রাজ্য পুনগ্রহণ করে। এই বিপ্লবে নাগাদিত্যের তিন বৎসর বয়স্ক পুত্র বাপ্পার জীবন বিপং সংকুল হইয়া উঠিল। গিহ্নোট-রাজপরিবারের কুল পুরোহিত নিতান্ত নিরুপায় হইয়া তাহাকে ভাওঁীর দুর্গে একজন যদুবংশীয় ভৗলের আশ্রয়ে রাথিয়াও নিশ্চিন্ত থাকিড়ে পারলেন না ; সুতরাং তথা হইতে তাহাকে পরাশর বনে লইয়া যাওয়া হয়, এবং ত্রিকূট পৰ্ব্বতের সামুদেশসন্নিহিত্যু নগেন্দ্র নগরে ব্রাহ্মণদিগের তত্ত্বাবধারণে র্তাহাকে রাখি। তিনি কতকটা নিরুদ্বেগ হন। কিন্তু শাস্তুশীল ব্রাহ্মণগণের ধৰ্ম্মোপদেশ ও শান্তিময় ধৰ্ম্মানুষ্ঠান মধ্যে নিরাপদে থাকিয়াং বাপ্পা বালস্বভাবসুলভ চপলতা বশতঃ শোলান্ধিবংশ নগেন্দ্ররাজের ভয়ে তথা হইতেও পলায়ন করিতে বাধ্য হ’ল। এই সময়ে চিতোরপ্রদেশ প্রমারবংশীয় মোরী বা মৌর্য রাজ গণের অধিকৃত ছিল। বাপ্পার পুৰ্ব্বপুরুষ গুহ প্রমারবংশী চন্দ্রাবতীরাজের দৌহিত্র—এই পরিচয় দিয়া চিতোররাজ মান সমীপে উপস্থিত হইলে, তিনি তাহাকে সাদরে গ্রহণ করিয়া, বাপ্পার শৌর্যবীর্য্যে পরম প্রত হইয়া তাহাকে সেনাপতিপদে বরণ করেন। এই সময়ে বৈদেশিক শক্ৰ কর্তৃক চিতোর আক্রান্ত হইলে, সামন্তগণ বিদেশীয় বাপ্পার উন্নতিতে আপনাদিগকে অপমানিত মনে করিয়া যুদ্ধ করিত্বে অস্বীকৃত হইলে, এক বাপ্পাই অসাধারণ পরাক্রম প্রদর্শন করিয়া চিতোরের বহিঃশত্রু নিবারণ করিলেন। এদিকে বিদ্বেষপরায়ণ সামস্তগণ মানরাজের পক্ষপাতিতায় প্রতিহিংসা নিবৃত্তির উপায়ান্তর না দেখিয়া, বাপ্পাকেই কৌশলে স্বদলে আনয়ন করিয়া রাজ্যলাভের দুৰ্ব্বাসনা তাহার হৃদরে জাগরিত করিয়া দিলেন। এই প্রলোভন ও উত্তেজনা ৯ম সংখ্যা । ] ফলে অচিরকাল মধ্যেই মোরীবংশের উচ্ছেদ সাধিত হইল এবং পঞ্চদশবর্ষ বয়ঃক্রমে বাপ্পাই খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর প্রথমভাগে ক্লংস্ত্রতাপাপপঙ্কিল চিতোররাজসিংহাসন প্রাপ্ত হন। ইহার পর ছত্রিশবৎসর পর্য্যন্ত তিনি চিতোরে শাসনদও পরিচালিত করিয়া পারস্ত রাজ্যাভিমুথে গমন করিয়াছিলেন, বলিয়া ইতিহাস সাক্ষ্য প্রদান করে। দেশবৈরী কান্তকুজরাজ জয়চ ের বিদ্বেষমূলক আহবানে সাহাবুদ্দীন মহম্মদ ঘোরি মহারাজ পৃথ্বীরাজের বিরুদ্ধে যে সময় ভারতে সমরযাত্রা করেন, সেই থানেশ্বরের যুদ্ধক্ষেত্রে দেশবংসল পৃথ্বীরাজের পার্থে, তদীয় ভগিনীপতি চিতোর রাজ যোগীন্দ্র সমরসিংহকে দেখিয়া বাপপার বংশধরের বীরতা স্মরণ করিয়া মুগ্ধ হইতে হয়। আবার পানিপথ যুদ্ধের পর ভারতসাম্রাজ্য যখন বাবরের করায়ত্ত, সমবশীরের অধস্তন পুরুষ সংগ্রামসিংহই তাহার গতিরোধ করিবার উযোগ করিয়া সিক্রির যুদ্ধে বিফল মনোরথ হ’ন। আবার | | আকবর যখন প্রবল পরাক্রমে ও কুটবুদ্ধিসাহায্যে রাজস্থানের অন্যান্য রাজপুতগণকে মিত্ররূপে গ্রহণ করিয়া গণ্যরূপে কাহারও কাহারও দুহিতা স্বীয় অবরোধভূক্ত করেন—এক মহাবীর প্রতাপসিংহই স্বাধীনতার, স্বদেশের ও স্বধৰ্ম্মের নামে অসি উত্তোলিত করিয়া হলদিঘাট ও দেবির যুদ্ধক্ষেত্র ভারতের পবিত্রতীর্থে পরিণত করিয়া রাথিয়া গিয়াছেন। স্বদেশপ্রেমিকগণের চূড়ামণি প্রাতঃস্মরণীয় বীরেন্দ্র প্রতাপ অমিততেজঃ মোগলশক্তির নিকট জাতিমান ক্রিয় করা অপেক্ষা অনশনে বনে বনে ভ্রমণ করাও শ্ৰেয়ঃ বিবেচনা করিয়া নিতান্ত নিঃসম্বল অবস্থায় আকবরের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জীবন শেষমূহুৰ্ত্ত পৰ্য্যন্ত যাপিত করেন। আবার ক্ৰৱকৰ্ম্ম আওরেঙ্গজেবের হস্ত হইতে রূপনগররাজস্থাহিতাকে রক্ষা করিবার জন্ত মহারাজ রাজসিংহ যেরূপ মহত্ব, শৌর্য ও যুদ্ধনৈপুণ্যের পরিচয় প্রদান করিয়া গিয়াছেন, তাহাতেও চিতোরের রাজবংশের যশ ও স্বাধী নতা-প্রিয়তা ইতিহাসে অক্ষুণ্ণ হইয়া রহিয়াছে। স্বাধীনতার t লীলাস্থলী চিতোরের গিছেলটি বা শিশোদীয় বংশীয় যে পুরুষসিংহগণ হৃদয়ের তপ্ত শোণিত দানে মাতৃভূমির কল্যাণ কামনা করিয়া গিয়াছেন, তাহারা ভারতপূজা মহারাজ রামচন্ত্রপুত্র লবেরই বংশধর বলিয়৷ আমাদিগের আরও লকোট ও কুশাবতী। Qス○ অধিক সন্মানের পাত্র। অভিহিতপূৰ্ব্ব যে মহামুভবগণ স্বদেশের, স্বজাতির ও স্বধৰ্ম্মের জন্ত—সংক্ষেপত: ভারতের জন্ত স্ব স্ব জীবন উৎসর্গ করিয়া বরণীয় হইয়া রহিয়াছেন, বাপ্পা হইতে আরম্ভ করিয়া ইহঁরা সকলেই রাজপুত, নামে অভিহিত । রাজপুত ও 'ছত্রি’ পর্য্যায়শব্দ। ছত্রি’ ক্ষত্রিয় শব্দেরই অপভ্রষ্ট রূপান্তর মাত্র - এইরূপে মহারাজ রামচন্দ্রের বংশাবলী তদীয় পবিত্র নামের মাহাক্স্যে গুরু নানকের স্থায় মহামুভব ও প্রতাপসিংহপ্রমুখ স্বদেশব্রতী রাজসন্ন্যাসীর উৎপাদনে প্রাচীন ইতিহাসের স্তায় আধুনিক ইতিবৃত্তেও চিরস্মরণীয় হইয়া রহিয়াছে। - উল্লিখিত আলোচনা হইতে “থত্রি’ ও ‘ছত্রি’ জাতির উৎপত্তিস্থল একই বলিয়া প্রতীত হয়। প্রদেশবিশেষের উচ্চারণবৈষম্য হইতে পৃথক নামকরণ হইয়া থাকিবে। মূলতঃ এক জাতি হইলেও ভিন্ন প্রদেশে বাসনিবন্ধন আচার ও ব্যবহারের পার্থক্য উপস্থিত হওয়ায় ক্রমে ভোজনসম্বন্ধ ও বিবাহের আদানও রহিত হইয়া গিয়া পৃথক জাতি রূপে পরিগৃহীত হইয়াছে বলিয়াই অনুমিত হয়। বোধ হয় ‘খত্রি’ ও ছত্ৰ’গণ আপনাদিগের পরম্পরামুগত বিরোধ বিশ্বত হইয়। উভয় সম্প্রদায়ের একত্ব প্রতিপাদনে উদযুক্ত হইলে উপস্থিত কলহের বিনিময়ে একতারূপ অমৃতফলের উৎপত্তি ठ्ग्न । কালচক্রের নিষ্পেষণে আমরা এক ভাঙ্গিয়া অনেক হইয়া পড়িয়াছি এবং যতদিন আমরা এই অনেকত্ব দূরে ফেলিয়৷ একত্বে মিশিতে চেষ্টত না হইব ততদিন আমাদিগের কোন আন্দোলনেরই ফল যে বিশেষ স্থায়ী হইবে, এরূপ আশা করা যায় না। যাহাতে অপরের সহিত বৈষম্য আনয়ন করে, তাহাকে বিষধর সর্প বলিয়া দূরে পরিহার না । করিলে, মহাপাতকের মহাপথ মনে না করিলে, আমাদিগের মুক্তির উপায়াস্তুর নাই।. অতএব কি রাজনীতিক বক্ত, কি নৈতিক উপদেশক, কি ধৰ্ম্ম-উপদেষ্টা, সকলেরই এখন একই মাত্র কৰ্ত্তব্যের অনুসরণে বদ্ধপরিকর হওয়া উচিত। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, জৈন যিনি ৰে ধৰ্ম্মপদ্ধতি

  • রাজপুতগণ মিৰার বংশকে 'অমৃতরত্নাকর খত্রিকুল বলিয়াসম্বোধন করেন। ইহাতেও বোধ হয় খত্রি ও ছত্রি এক্ষ পর্যায় বোধক প্রতিশব্দ মাত্র। টডের মিবার অং ১৭ দ্রষ্টব্য।