পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(to o জন্ম, ও পদ যন্ত্রের স্থায় একত্র আবদ্ধ; তোমাদের বাস্তবিক যাহা আছে তাহ মায়া ভিন্ন আর কিছুই নহে। মিথ্যা কাৰ্য্যকারণ হইতে তোমরা উৎপন্ন। কামের কোন বাস্তবিক গুণ নাই,—উহার গুণ সকল মিথ্যা—শ্রদ্ধেয় বিজ্ঞান-পথের বিরোধী। উহা বিষ-পত্রের দ্যায়-ভীষণ অজগর সৰ্পের স্থায়। মূঢ়েরা মুখ জ্ঞান করিয়া উহাতে মত্ত হয়। কাম-বশীভূত স্ত্রী ও পুরুষ, সৎমার্গ হইতে —ধ্যানের মার্গ হইতে, পরিভ্রষ্ট হইয়া বিজ্ঞান হইতে বহুদূরে অবস্থিতি করে, প্রবৃত্তির দ্বারা বিক্ষুব্ধ হইয়া, তাহারা ধৰ্ম্মজনিত মুখকে পরিত্যাগ করে, পরিশেষে কামজনিত সুখও তাহারা সম্ভোগ করিতে পারে না। আমি কামেতেও আসক্ত নই—পাপেতেও আসক্ত নই ; আমি প্রিয়তে আসক্ত নই-আমি প্রিয় অপ্রিয় কিছুতেই আসক্ত নই। আকাশ-বায়ুর স্তায় আমার মন সম্পূর্ণরূপে भूद्ध इङ्ग्रेग्राप्छ् ।” মারের দুহিতারা তবুও এইরূপ বলিতে লাগিল – “शङलिन न| ८शोदन ८ठांगांत फणिप्र यांग्र,-शठनि তোমার রূপ যৌবন থাকে এবং তোমার মুহৃৎ আমরা যতদিন থাকিব, ততদিন তুমি হাসিমুখে কামস্থ উপভোগ কর।” কিন্তু বোধিসত্ত্ব কিছুতেই বিচলিত হইলেন ন –“তৃণাগ্রলম্বিত শিশির বিন্দুর গায়—শরৎকালীন মেঘের দ্যায় বাসনা সকল ক্ষণস্থায়ী। নাগকস্তাদের রোষের দ্যায় উহা ভীতিজনক ।” মারের দুহিতারা আবার বলিল ;–“উহাদের প্রতি দৃষ্টিপাত কর, তুমি যেমন চন্দ্রানন, উহার তেমনি পদ্মাননা, উহাদের কণ্ঠস্বর মধুর ও মৰ্ম্মস্পর্শ ; উহাদের দন্তপংক্তি তুষারের ন্যায়—রজতের ন্তায় শুভ্ৰ ; প্রধান দেবতাদিগের যারা চিরবাস্থিত, যাহাঁদের সমতুল্য ললন দেবলোকেও দুর্লভ, তাহাদিগকে তুমি মর্ত্যলোকেই পাইতে পার।" বোধিসত্ত্ব উত্তর করিলেন —“আমি দেখিতেছি, এই শরীর মলিন, অপবিত্র, কীটপূর্ণ, অগ্নিদাহ, ভঙ্গুর, ও দুঃখের দ্বারা সমাচ্ছন্ন ; আমি জ্ঞানিজনের পূজিত সেই অক্ষর পদলাভ করিব, যাহা সমস্ত চরাচরের মুখোৎপাদক।” (৩৩) উহাদের সমস্ত মায়াজালই নিষ্ফল হইল! বোধিক্রমের তলদেশে ধ্যানমগ্ন নিশ্চল বুদ্ধদেব একাগ্রচিত্ত হইয়া, [ ৮ম ভাগ। সমস্ত পার্থিব চিন্তা, পার্থিব কামনা দমন হইয়াছিলেন ; এখন তাহার মুখে একটি নিশ্চল প্রশান্ত- । স্মিত হাস্ত প্রকটত হষ্টল। পাপাত্মা মার, বুদ্ধদেবকে মায়াজালে বদ্ধ করিতে পারিল না বটে, কিন্তু যাহাতে তিনি ধৰ্ম্মপ্রচার করিয়া বিশ্বমানবকে পাপ হইতে উদ্ধার করিতে" ন পারেন, এই উদ্দেশ্যে তাহার নিৰ্ব্বাণসাধনের বিয়োৎপাদনে । সচেষ্ট হইল। মার তাহাকে যেরূপ ভুলাইবার চেষ্টা করিয়াছিল, ললিত-বিস্তরে তাহার এইরূপ বর্ণনা আছে —বহুদিন পরে, বুদ্ধদেব স্বকীয় শিষ্ণু আনন্দের নিকট র্তাহার প্রলোভনের বৃত্তান্ত এইরূপ ব্যক্ত করেন ; “এই সময়ে পাপাত্মা মার আমার নিকটবৰ্ত্তী হইল। তারপর দেখ আনন, আমার পাশে দাড়াইয়। সে আমাকে এইরূপ বলিল –‘হে মহাত্মন্‌ এক্ষণে আপনি নিৰ্ব্বাণ লাভ করুন, হে সিদ্ধপুরুষ ! আপনি নিৰ্ব্বাণে প্রবেশ করুন। মহাত্মন, এক্ষণে আপনার নির্মাণের সময় হইয়াছে।’ দেখ আনন্দ, মার এই কথা বলায় আমি এইরূপ উত্তর করিলাম ! দেশ মার, যতদিন না আমি ভিক্ষুদের মধ্য হইতে এমন কতকগুলি শিষ্য পাই যাহারা জ্ঞানী ও কৃতবিদ্য, সৰ্ব্বসিদ্ধান্তে পারদর্শী, বিধিব্যবস্থায় পারদর্শী, যাহার এই ধৰ্ম্মপথ অনুসরণ করিয়া,-গুরুর মুখ হইতে যাহা শুনিয়াছে তাহ দূরদেশে প্রচার করিবে প্রকাশ করিবে, ব্যাখ্যা করিবে, কোন প্রতিবাদ উত্থাপিত হইলে, বীজস্বত্রসমূহের দ্বারা তাহাকে খণ্ডন করিবেচূর্ণ বিচূর্ণ করিয়া দিবে, দেখ পাপাত্মন! ততদিন আমি নিৰ্ব্বাণে কখনই প্রবেশ করিব না। যতদিন না আমার ধৰ্ম্ম বিশ্বমানবের মধ্যে প্রচারিত হইবে ততদিন আমি নিৰ্ব্বাণে কখনই প্রবেশ করিব না।” (৩৪) মারের সহিত এই শেষ যুদ্ধে জয়ী হইলেও, বুদ্ধদেব র্তাহার ধৰ্ম্ম, জগতে প্রচার করিবেন কি না সে বিষয়ে একটু ইতস্তত করিতেছিলেন। তাহার ধৰ্ম্মমতে সংশয় উপস্থিত হইয়াছিল বলিয়া যে তিনি ইতস্তত করিতেছিলেন তাহা নহে,—কেন না পরম সত্য লাভ করিয়াছিলেন বলিয়া তাহার ধ্রুব বিশ্বাস ছিল—তাহার শুধু এই আশঙ্কা হইতে ছিল পাছে লোকে তাহার ধৰ্ম্ম বুঝিতে না পারে। তিনি ভাবিলেন, বিশ্বমানব-যাহারা সংসার-জাবৰ্ত্তে বিক্ষুন্ধচিত্ত-।

১০ম সংখ্যা । ] ്.--പ്-l.--l.--l.-l. বাহারা উহাতেই মুখ পায়, তাহাদের পক্ষে কাৰ্য্যকারণতত্বের দর্শ গ্রহণ করা কঠিন ; তাহাদিগকে আরও বোঝান কঠিন-সমস্ত সৃষ্ট বস্তুর লয়, সমস্ত পার্থিব বস্তুর বিয়োগ, বাগনার বিলোপ, পরিসমাপ্তি, নিৰ্ব্বাণ। এই নৈরাশ্বের জনায় তিনি বলিয়া উঠিলেন :–“কত কষ্ট স্বীকার করিয়া, কত যুদ্ধ করিয়া আমি যাহা আর্জন করিয়াছি তাহা জগতের নিকট প্রকাশ করিয়া কি ফল ? রাগ দ্বেষে যাহার অন্তর পূর্ণ, তাহার নিকট সত্য চিরকালই প্রচ্ছন্ন থাকে। যাহা বহু কষ্টে অর্জিত হয় সেই গভীর রহস্ত স্থলবুদ্ধির নিকট প্রকাশ পায় না। যাহার তমসাচ্ছন্ন মন পার্থিব বাসনায় সমাচ্ছন্ন, সে কখনই উহা উপলব্ধি করিতে পারে না।” কিন্তু ব্ৰহ্মাতাহার নিকট আবিভূত হইয়া, এই সকল আশঙ্ক৷ অতিক্রম করিতে র্তাহাকে উপদেশ দিলেন ; তাহার অন্তরে প্রবেশ করিয়া এইরূপ বলিলেন :–“হে মুক্তিদাতা ! জন্মগ্রামৃত্যু ভোগ করিতেছে যে বিশ্বমানব তাছার প্রতি একবার দৃষ্টিপাত কর। হে প্ৰভু ! তোমার কথা উচ্চৈঃস্বরে প্রচার কর, সে কথার মৰ্ম্ম অনেকেই বুঝিতে পারবে।” এক্ষণে র্তাহার সম্মুখে মহৎ কৰ্ম্মক্ষেত্র উন্মুক্ত হইল, আর র্তাহার ধৰ্ম্ম জগতের নিকট প্রচার না করিয়া থাকিতে পারিলেন না ;—"নিত্যধামের দ্বার যেন সকলের নিকটেই উদঘাটিত হয় ! যাহার কর্ণ আছে সে যেন এই কথা শোনে ও বিশ্বাস করে। আমি নিজে যে কষ্ট পাইয়াছি তাহা ভাবিতেছিলাম, এবং সেইজন্য, হে ব্ৰহ্ম, এই মহাবাক্য লোকের নিকট প্রকাশ করি নাই।” (৩৫) এইখানেই বারাণসীর ধৰ্ম্মোপদেশ, মুক্তিবিষয়ক ধৰ্ম্মোপ. দেশ সন্নিবিষ্ট হইয়াছে।. ষে সকল তাপস পূৰ্ব্বে র্তাহার শিষ্য ছিল, কিন্তু পরে যাহারা তাহাকে স্বধৰ্ম্মত্যাগী মনে তি করিয়া পরিত্যাগ করে, তাহদের সহিত বুদ্ধদেবের আবার সাক্ষাৎ হইল। তাহাদিগকে আবার তাহার নবধৰ্ম্মে দীক্ষিত করিতে ইচ্ছা করিলেন ; কিন্তু তাহা সহজ হইল না। তাহারা বুদ্ধদেবকে দেখিবা মাত্র মনে মনে চিন্তা করিল : “এই যে গৌতম এইদিকে আসচে, ওকে সন্মান দেওয়া হবে না। যদি ইচ্ছা করে ত এইখানে বসিতে পারে।" কিন্তু বুদ্ধের ভাব দেখিয়া তাহারা স্বকীয় সংকল্প রক্ষা করিতে পারিল না, তখনই তাহার নিকটে গমন বৌদ্ধধৰ্ম্ম । ¢¢እ করিল। বুদ্ধ তাহাদিগকে বলিলেন ; “আমার ধৰ্ম্মোপদেশ শ্রবণ কর, ইহলোকেই তোমরা সত্যকে প্রাপ্ত হইবে।” কিন্তু ঐ তাপসের উপহাস করিয়া তাহাকে বলিল – “কঠোর তপশ্চরণ করিয়া যাহা তুমি লাভ করিতে পার নাই, প্রাচুর্য্যের মধ্যে থাকিয়া কিরূপে সেই পরম সত্য লাভ করিবে ?”—কিন্তু বুদ্ধ, এইরূপ আপত্তি হইবে বলিয়া পূৰ্ব্বেই ভাবিয়াছিলেন। অনেক দিন হইতেই তিনি বুঝিয়াছিলেন কঠোর তপশ্চরণ প্রকৃত পন্থী নহে। উপবাসাদিতে পার্থিব চিন্তাসমূহ মন হইতে দূরীভূত হয় না, পরস্তু পরম জ্ঞানে উপনীত হুইবার জন্ত যে আত্মচেষ্টা আবশুক সেই আত্মচেষ্টার দ্বারাই পার্থিব চিন্তা সকল দূরীভূত হয়। ভোগবিলাসের ন্যায় শরীরশোষণও মুক্তির পথ হইতে দূরে অবস্থিত। চিত্তবৃত্তি সমূহের সামঞ্জস্ত ও আভ্যন্তরিক সমন্বয়ই আমাদিগকে সত্যেতে উপনীত করে। বুদ্ধদেব জীবনকে বীণার সহিত তুলনা করিয়াছেন। বীণা হইতে ঠিক স্বর বাহির করিতে হইলে, বীণার তারগুলিকে বেশী টানাও উচিত নহে-বেশী শিথিল করাও উচিত নহে। তাই, সেই তাপসদিগের আপত্তির উত্তরে তিনি এইরূপ বলিলেন – “যনি আধ্যাত্মিক জীবনের প্রয়াসী, তিনি এই দুই সীমান্ত হইতে দূরে থাকবেন। সেই সীমান্ত দুইটি কি ? একটি ভোগবিলাসের জীবন এবং আর একটি কঠোর আত্মনিগ্রহের জীবন ; উভয়ই হেয় ও অসার। হে ভিক্ষুগণ । তথাগত এই উভয় সীমান্ত হইতে আপনাদিগকে দূরে রাখেন; তিনি এমন একটি পথ আবিষ্কার করেন যাহা উভয়ের মধ্যবৰ্ত্তী ; ঐ পথই চক্ষু ও মনকে উদঘাটিত করে, ঐ পথই সাধককে শাস্তিতে, জ্ঞানেতে, বুদ্ধত্বে, নিৰ্ব্বাণে উপনীত করে। হে ভিক্ষুগণ! সেই মধ্যম পথটি কি ? ? সম্যক দৃষ্টি, সম্যক্ সঙ্কল্প, সম্যক বাক্, সম্যক্ কৰ্ম্মান্ত, সম্যগাজীব, সম্যক ব্যায়াম, সম্যক্ স্মৃতি ও সম্যক্ সমাধি ; এই আটটিকে আর্য্যাক্টাঙ্গিক মার্গ বা মধ্যম পথ বলে। হে ভিক্ষুগণ দুঃখ সম্বন্ধে ইহাই পবিত্র সত্যু :-জন্ম দুঃখ, জরাহুঃখ, মৃত্যুঃখ, অপ্রিয়-সংযোগ ও প্রিয়-বিয়োগ দুঃখ, কাম্যবস্তুর অপ্রাপ্তি ছঃখ, সংক্ষেপে বলিতে গেলে, পাখিব বিষয়ে এই পঞ্চধা আসক্তিই দুঃখ। হে ভিক্ষুগণ । দুঃখের উৎপত্তি সম্বন্ধে ইহাই পবিত্র সত্য কৃষ্ণাই পুনর্জন্মের