পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Noе о “বাবা সতীশ, লক্ষ্মী বাপ আমার ও কুকুরটাকে নিয়ে যাও বাবা।” সতীশ কছিল “ও কিছু করবে না মাসী। ও তোমার ঘরে যাবে না। তুমি একে একটু আদর কর, ও কিছু বলবে না।” হরিমোহিনী সরিয়া গিয়া কহিলেন, “ন, বাবা, ন, ওকে নিয়ে যাও!” তখন আনন্দময়ী কুকুরস্থদ্ধ সতীশকে নিজের কাছে টানিয়া লইলেন। কুকুরকে কোলের উপর লইয়া সতীশকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি সতীশ, না ? আমাদের বিনয়ের বন্ধু ?” বিনয়ের বন্ধু বলিয়া নিজের পরিচকে সতীশ কিছুই অসঙ্গত মনে করিত না সুতরাং সে অসঙ্কোচে ললিল— *স্থা।" বলিয়া আনন্দময়ীর মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। আনন্দময়ী কহিলেন, “আমি যে বিনয়ের মা হই!” কুকুরশাৰক আনন্দময়ীর হাতের বালা চৰ্ব্বণের চেষ্টা করিয়া আত্মবিনোদনে প্রবৃত্ত হইল। স্বচরিতা কছিল, *বক্তিয়ার মাকে প্রণাম কর।” সতীশ লজ্জিতভাবে কোনোমতে প্রণামটা সারিয়া जहेण । এমন সময় বরদাসুন্দরী উপরে আসিয়া হরিমোহিনীর দিকে দৃকপাতমাত্র না করিয়া আনন্দময়ীকে জিজ্ঞাসা করিলেন—“আপনি কি আমাদের এখানে কিছু খাবেন ?” আনন্দময়ী কহিলেন “খাওয়া ছোওয়া নিয়ে আমি কিছু বাছ বিচার করিনে। কিন্তু আজকের থাকৃ–গোরা ফিরে আমুক তার পরে খাব।” আনন্দময়ী গোরার অসাক্ষাতে গোরার অপ্রিয় কোনো আচরণ করিতে পারিলেন না। বরদীক্ষনলী বিনয়ের দিকে তাকাইয়া কহিলেন -এই যে বিনয় বাবু এখানে ; আমি বলি আপনি আসেন নি বুৰি ?” বিনয় তৎক্ষণাৎ বলিল, “আমি যে এসেছি সে বুঝি আপনাকে না জানিয়ে যাব ভেবেচেন ?” প্রবাসী। ফাকি দিয়েচেন আজ না হয় বিনা খাবেন।” বিনয় কহিল—“সেইটেতেই আমার লোভ বেশি। মাইনের চেয়ে উপরি পাওনার টান বড়।” হরিমোহিনী মনে মনে বিস্মিত হইলেন। বিন এবাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে-আনন্দময়ীও বাছ-বিচার করেন না। ইহাতে র্তাহার মন প্রসন্ন হইল না। বরদাসুন্দরী চলিয়া গেলে হরিমোহিনী সসঙ্কোচে জিজ্ঞাসা করিলেন—“দিদি, তোমার স্বামী কি”— আনন্দময়ী কহিলেন—“আমার স্বামী খুব হিন্দু।” হরিমোহিনী অবাক হইয়া রছিলেন। আনন্দময়ী তাহার মনের ভাব বুঝিতে পারিয়া কহিলেন—“বোন, যতদিন সমাজ আমার সকলের চেয়ে বড় ছিল ততদিন সমাজকেই মেনে চলতুম কিন্তু একদিন ভগবান আমার ঘরে হঠাৎ এমন করে দেথা দিলেন যে আমাকে আর সমাজ মানতে দিলেন না। তিনি নিজে এসে আমার জাত কেড়ে নিয়েচেন তখন আমি আর কাকে ভয় করি ।” হরিমোহিনী এ কৈফিয়তের অর্থ বুঝিতে না পারিয়া কহিলেন—“তোমার স্বামী ?” আনন্দময়ী কহিলেন “আমার স্বামী রাগ করেন।” হরিমোহিনী। “ছেলেরা ?” আনন্দময়ী। ছেলেরাও খুন্সি নয়। কিন্তু তাদের খুলি করেই কি বঁচিব? বোন, আমার একথা কাউকে বোঝাবার নয়—যিনি সব জানেন তিনিই বুঝবেন। বলিয়া আনন্দময়ী - হাত জোড় করিয়া করিলেন। হরিমোহিনী ভাবিলেন হয় ত কোনো মিশনারির মেনে আসিয়া আ. ন্দময়ীকে খৃষ্টানি ভঞ্জাইয়া গেছে। তাহার মনের মধ্যে অত্যন্ত একটা সঙ্কোচ উপস্থিত হইল। নিমন্ত্রণের খাওয়া প্রণাম [ ৮ম ভাগ। ১১শ সংখ্যা । ] इंहेन । হরিমোহিনী ব্যস্ত সমস্ত হইয়া বলিয়া ੇਿਜ- বরদাসুন্দরী কহিলেন, “কাল ত নিমন্ত্রণের ના ! - --- কার্য অংশে থাকিতে বাধা হয় ।


১৪:২৭, ২৪ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি)~~------->

আমেরিকার গ্রামে উন্নতির পরাকাষ্ঠী । ভারতবর্ষে জাতীয় শিল্পোন্নতির জন্ত বিরাট চেষ্টা জাগ্রত হইয়াছে। ভারতের সকল অবস্থার, সম্প্রদায়ের ও প্রদেশের জনসাধারণ পুরাতন শিল্পের উদ্ধার ও নুতন কারিগরীর প্রবর্তন করিতে যত্নবান হইয়াছে। এ দেশের লোকের কৰ্ম্মপ্রবর্তনার ও চিন্তার বিষয় হইয়াছে এই কারুশিল্পের পুনঃ প্রতিষ্ঠা। বর্তমান সময়ে বাণিজ্য ও শিল্প প্রচেষ্টা সমগ্র জাতির মনকে এমন ভাবে অধিকার করিয়াছে যে মানবজীবনের উপযোগী অপরাপর বিষয় একেবারে প্রচ্ছন্ন 8 ड्रिड श्डेग्न| 'प्लिग्रा८छ । যখন প্রাচ্যভূমে প্রতীচ্য ও প্রাচ্য দেশবাসিগণ সন্মিলিত চেষ্টায় প্রতীচ্যের আদশে শিল্পসাধনার আয়োজন করে, তখন একবার চিন্তা করিয়া দেথা উচিত যে প্রতীচ্য দেশের এই রীতি প্রাচ্য দেশে নিরবচ্ছিন্ন সুফলপ্রস্থ হইবে কিনা। কল কারখানা দোকান পাটের প্রবর্তনে গ্রামগুলি উপেক্ষিত পরিত্যক্ত হইয়া আপনার স্নেহলালিত সন্তানগুলিকে সহরের সৰ্ব্বগ্রাসী কবলে সমৰ্পণ করিতে থাকে। ইহাতে সমগ্র দানবসমাজ একেবারে বিশৃঙ্খল হইয়া এক এক জন অর্থশালী ব্যক্তির অধীন হইয় পড়ে। মজুরদের অবস্থা সুখকর হয় না, আনন্দজনক ত নহেই। গ্রামের পারিবারিক বন্ধন শিথিল ও বিচ্ছিন্ন হইয়া যায়। নিঃসম্পর্ক হাজার হাজার নরনারী সঙ্কীর্ণ স্থানের মধ্যে বাস করিতে বাধ্য , সমাজের শাসন হইতে দূরে থাকিয় তাহদের নীতি, द्विज ७ या४ा नठे श्ग्र शाग्न । श्राप्ताङ्गगन (झाप्ले ८झांझे কারখানার কারিকরগণ স্বীয় পরিবারের পুণাছায়ায় থাকিয়া কাজ করিতে পারে, আপনার ঘরকন্নাও দেখিতে পারে। বড় কারবারের মালিকগণ অৰ্থসঞ্চয়ের লোভে মজুরদের জুী যথাসম্ভব অল্পই দেয়, তাহাতে তাহারা সহরের মাতলাম ও আনুসঙ্গিক পাপ সকল শিল্পোন্নতির সহচর হইয়া উঠে, অবশেষে দরিদ্র্য ও দুর্নীতি সামাজিক সমস্ত হইয়া দাড়ায়। পারিবারিক বন্ধন শিথিল হইলেই স্বার্থপরতা আসে। আমেরিকার গ্রামে উন্নতির পরাকাষ্ঠী । ッo > অন্ধ অনুকরণের বশবৰ্ত্তী হইয়া প্রতীচ্যের ব্যবসায় পদ্ধতি প্রাচ্যদেশে আমদানি করিলে এই সমস্ত দোষও অনিবাৰ্য্য হইয় উঠবে। র্যাহারা প্রতীচ্য দেশের ব্যবসায় বাণিজ্যের গতি বিচক্ষণতার সহিত- পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়াছেন তাহারা জানেন যে তৎসম্পর্কান্বিত দোষ সমূহ দূরীকরণের জন্তও কি প্রগাঢ় ও প্রবল চেষ্টা আরম্ভ হইয়াছে। যুরোপ ও আমেরিকার কেন্দ্রীভূত ধনশালিত্বের বিপক্ষে সামাজিক সাম্যনীতি (Socialism) দণ্ডায়মান হইয়াছে : সহরে বিলাসের বিপক্ষে সরল জীবনযাত্রা প্রণালীর পক্ষপাতী দল উদ্ভূত হইয়াছে ; সাংসারিকতার বিপক্ষে আধ্যাত্মিকতা প্রবল হইতেছে। উনবিংশ শতাব্দী যেমন সাংসারিক উন্নতির জন্ত প্রসিদ্ধ, বর্তমান শতাব্দীর টানটা যেন আধ্যাত্মিকতার দিকেই প্রধান হইয়া উঠিতেছে। এখন সমগ্র পৃথিবী যেন নাগরদোলায় উঠা নামা করিতেছে। প্রতীচ্য এত দিন সাংসারিকতার ঝোকে মত্ত হইয়া ফিরিতেছিল এখন আধ্যাত্মিকতার আস্বাদ পাইলা সেই দিকে ফিরিতেছে ; আর প্রাচ্য এতকাল অধ্যাক্স চিন্তায় স্তব্ধ হইয়াছিল, এইবার সাংসারিকতা ও অর্থ সঞ্চয়ের জন্ত থেপিয়া উঠিয়াছে। মানুষ যে কখনো সাংসারিকতা ও আধ্যাত্মিকতাব সামঞ্জস্ত রাথিয়া যথার্থ সভ্যতা লাভ করিতে পারিলে তাহা ভবিষ্যদ্বাণীরও অজ্ঞেয়। যাহারা তলাইয়া চিন্তা করেন, তাহারা বুঝিতেছেন যে গ্রাম সকলই সমাজশরীরের হৃদযন্ত্র এবং বাণিজ্য কেন্দ্রসকল তাহার উপশিরার প্রাস্ত মাত্র । লোহিত শোণিত হৃদযন্ত্র হইতে বাহির হইয়া ধমনীর সাহায্যে শরীরের বিভিন্ন অংশে নীত হয়। সেই সংক্রমণ শেষে রক্ত দূষিত হইয়া কালো হইয়া যায় এবং সেই কালো রক্ত উপশিরা বাহিয়া হৃদযন্ত্রে ফিরিয়া আসে ও পরিস্কৃত হয় এবং সেই রক্তপ্রবাহ সমগ্র শরীরকে স্বস্থ রাখে। তেমনি বলিষ্ঠ কৰ্ম্মঠ সুস্থ নরনারী কাচা বয়সে গ্রাম ছাড়িয়া কলকারখানায় থাটিতে যায়। সহরে জীবন যাপন কৰিয়া যখন দেহ খির, চিত্ত অবসর হইয়া পড়ে, তাহারা তখন পুনরায় নষ্ট - স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য গ্রামে ফিরিয়া আসে। সময়ের লক্ষণ যেরূপ সুস্পষ্ট হইয়া উঠিতেছে তাহাতে প্রকাণ্ড কারখানা ভবিষ্যতে খুব অল্পই নিৰ্ম্মিত হইবে।